Better Life | The Diary Game | 4th November, 2024 | মাছ ধরা, কাটা ও বিকাল উপভোগ, আরেকটি স্মৃতিময় দিন পার করলাম

আজ ইংরেজি মাসের ৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ; বাংলা ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, রোজ সোমবার। হেমন্তের সন্ধ্যায় আমি আবারও আমার দিনলিপি লিখতে বসেছি। আজকের দিনটি লিখার কারণ আজকের দিনটি আমি অনেক উপভোগ করেছি তাই এটি আপনাদের সাথেও শেয়ার করতে চাচ্ছি।

---

আজ আমি সকালে উঠে ফ্রেশ হলাম, এরপর হালকা নাস্তা করি বিস্কুট দিয়ে। এরপর হাটতে বের হলাম। শীতের শুরুর দিক এখন, কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে বাড়ি ফিরে এসে সকালের খাবার খেলাম। আজকের মেনুতে ছিলো ভাত,পুইশাক আর লাউয়ের তরকারি। আমি যখন হলে থাকি তখন বাড়ির রান্না খুবই মিস করি। আপন ঠিকানায় থাকার শান্তিই আলাদা যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এজন্যই বলা হয় যার যেখানে জন্ম তাকে সেখানেই মানায় বাংলা প্রবাদে "বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।"

---

সকালের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম, এর পর পাটা আর শিল কাটতে বসছি। কাটা বলতে পাটা আর শিলে এরকম করে দাগ দেওয়া বুঝায়। আমি একটা হাতুড়ি আর রটের টুকরা দিয়ে দাগ কাটলাম।

---

এরপর আমাদের পুকুর থেকে মাছ তুলতে জেলে আসলো জাল নিয়ে, আমাদের এলাকারই তারা,ভাইয়ার বিয়ে উপলক্ষে মাছ ধরার জন্য গতকাল বলে রাখা ছিলো আজকে আসার জন্য। মোট পাঁচজন এসেছে বড় জাল নিয়ে।

পুকুরের দক্ষিণ পাশে আমাদের বাড়ি, জাল টেনে বাড়ির দিকে আসতে হবে তাই তারা জাল নিয়ে উত্তর পাশে পুকুরে নামলো। যাতে টেনে বাড়ির দিকেই নিয়ে আসতে পারে।

জাল ফেলার পর দুজন পুকুরে নামলো জাল টেনে পুরো পুকুর ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এরপর জাল টেনে দক্ষিণে আমাদের বাড়ির দিকে টেনে নিয়ে আসলো।

বড় মাছের মধ্যে বেশির ভাগ ছিলো সিলভার কার্প। কাতল মাছ ছিলো কিন্তু আরও বড় হওয়ার জন্য ছেড়ে দিলাম। আমি মাছ রাখার জন্য বালতি গামলা দিয়ে সাহায্য করলাম।ছোট মাছগুলো বড় গামলার মধ্যে রাখলাম।

মোট ৪২ টা সিলভার কার্প রাখা হয়েছে রান্না করার জন্য,আরও মাছ ছিলো চিতল মাছ, রুই মাছ, মিরকা মাছ, কাতল মাছ কিন্তু এগুলো ছেড়ে দেওয়া হলো।

৭জন কাকি বড় মাছ গুলো কাটতে বসছেন। আমি, আপা আর দুই চাচাতো বোন মিলে বসছি ছোট মাছ কাটতে।ছোট মাছের মধ্যে ছিলো পুঁটি মাছ, মলা মাছ,টেংরা মাছ,শিং মাছ আরও অনেক। আমি সবগুলো আলাদা পাত্রে রাখলাম যাতে কাটতে সহজ হয়।আলাদা করার আগে মাছ গুলো থেকে ময়লা পাতা সরালাম,মাছ থেকে ময়লা সরানোর পদ্ধতিটাও সহজ ;একটা ছোট বালতিতে পানি নিয়ে অল্প করে মাছ দিলাম, এতে ছোট মাছগুলো পানির উপরে ভেসে উঠে আর ময়লা পাতা পানির নিচে চলে যায়। এভাবে সহজেই ছোটমাছ থেকে ময়লা পাতা আলাদা করা যায়।

একসময় বড় মাছগুলো কাটা শেষ হলো, আমি মাছ গুলো ভালো করে ধুয়ে নিলাম।

মাছ ধুয়া শেষ হলে কাকিরা মাছগুলোকে দুইপিস করে কেটে দিলেন।

মাছ কাটা শেষ হলে এগুলোতে হলুদেরগুড়া আর লবণ দিয়ে মাখিয়ে ফ্রিজে রাখলাম

মাছের কাজ শেষ করতে করতে আড়াইটা বেজে গেছে প্রায়।আমি গোসল করে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করলাম।
এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম।

বিকেলে বাইপাসে গেলাম হাটতে, এটি আমাদের বিলের মাঝখান দিয়ে গেছে,এখনো শেষ হয়নি, কাজ এখনো চলছে রাস্তার।

আজ আকাশও দেখতে খুবই পরিষ্কার, আমি আমার ছবি তুললাম।

ক্রেন দিয়ে রাস্তায় মাটি উঠানো হচ্ছে।

এই ফুলটি প্রায় সব জায়গাতেই দেখা যায়, বিলের মধ্যে হয়।আমরা বলি জাম্বুরি ফুল। রাস্তার পাশে ফুটে আছে, দেখতে সুন্দর লাগছিলো তাই ক্যাপচার করে নিলাম।

দিগন্ত জুড়ে সবুজ মাঠ, দেখে চোখেও শান্তি। এজন্যই বুঝি আমাদের দেশকে বলা হয় সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সবুজের লীলাভূমি।

এরপর আমি বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আকাশের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি তুলি।

আজকের আকাশের এই ছবি গুলো তুলার সময় আমার খুবই ভালো লাগছিলো, একেকটি ক্লিকে মনে হচ্ছিলো মন ভালো হচ্ছে, মানসিক শান্তি পাচ্ছি।

---

একবারে অন্ধকার হয়ে আসলে আমি বাড়ি ফিরে আসি। এসে ফ্রেশ হলাম।তারপর আমার আজকের ডায়েরি লিখতে বসেছি।

---

আমার আজকের দিনটি এতোক্ষণ ধরে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। অন্যকোনোদিন অন্য কোনোদিনের গল্প নিয়ে হাজির হবো, আজ এই পর্যন্তই। আপনাদের আবারও হেমন্তের শুভেচ্ছা।