রাস পূর্ণিমার মেলায় কিছু সময় প্রথম পর্ব🥰
হ্যালো,
আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।
শ্রী শ্রী কৃষ্ণের রাসযাত্রা ২৯ কার্তিকে হয়েছে এবং ২৯ তারিখে পূর্ণিমার উপবাসও নিশিপালন ও পূজো হয়েছে।
রাস উপলক্ষে মেলাও রাসলীলা হচ্ছে। সাতদিন পর্যন্ত হবে এই রাসযাত্রার মেলা।ছোরবেলা থেকেই এই মেলা উপভোগ করে আসছি। খুব আনন্দ হতো এই রাসযাত্রা মেলায়। ছোট বেলায় রাসযাত্রার রাসনীলা কির্তন দেখতে খুব ভালো লাগতো।
আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে রাসলীলা হচ্ছে যাচ্ছে সবাই মেলায়।সবার যাওয়া দেখে আমারও মন চাইলো যেতে। সন্ধ্যার পর শুরু হবে তাই একা হলে যেতাম না।যেহেতু বর এসেছে তাই মেলায় যাওয়ার ইচ্ছে টা বেড়ে গেলো।
রেডি হয়ে মা,মেয়ে বরের বাইকে উঠে চলে গেলাম রাসযাত্রা মেলায়।গিয়ে বাইক গ্যারেজে রেখে মেলায় গেলাম।
বেশ ভালো লাগলো মেলায় গিয়ে। হাজার হাজার মানুষ রাসযাত্রা মেলায় গেছে।কেউবা মেলায় আবার কেউবা বিছিয়ে দেয়া খরে বসে পড়ছে আগে ভাগেই সামনে লীলা কির্তন শোনার জন্য।
আমি ঘুরে ঘুরে বানিয়ে রাখা রাসযাত্রা উপলক্ষে বানিয়ে রাখা প্রতিমা দেখলাম।
প্রথমে দেখলাম মেইন গেইটে একটি মহিলা পুলিশ বানিয়ে রেখেছে তা দেখে বেশ মজা পেয়েছে আমার মেয়ে সাথে আমিও
এরপর মন্দিরের প্রতিমা দর্শন করলাম।মন্দিরে বেশ কিছু প্রতিমা রয়েছে। শী কৃষ্ণের রাসযাত্রা তাই রাধা কৃষ্ণ মাঝে রেখেছে ও চারপাশে সব রাধারানীর অষ্ট সখী।
এই রাসযাত্রা পুরোটা শ্রী কৃষ্ণের জীবনযাত্রা দিয়ে সাজানো।শ্রী কৃষ্ণের শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের সব চিত্র এই মেলায় ফুটিয়ে তুলেছেন এবং বানিয়ে রেখেছেন মূর্তি।শ্রী কৃষ্ণকে হত্যা করার জন্য পুতিনা রাক্ষসী যখন মানুষ রুপে এসেছিলো এবং শ্রী কৃষ্ণকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের বিষ মাখা দুধ পান করতে দিয়েছিল কিন্তুু শ্রী কৃষ্ণ তো সব জানতেন এবং দুধ পান করার সময় কামড়ে দিয়েছেন এবং তখন প্রতিমা রাক্ষসীর রাক্ষস যে রুপ বেরিয়ে এসেছে তা এখানে মূর্তির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।
রাধাকৃষ্ণ একে অপরের পরিপূরক। রাধা কৃষ্ণের নীলা আমরা সবাই জানি। রাসমেলায় সব প্রতিমার মাঝে কৃষ্ণের অবতার রুপ তুলে ধরা হয়েছে। এই তো এখানে কালিও কৃষ্ণ। কৃষ্ণ কালীর রুপ ধারণ করেছিলো সেটাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
এরপর কৃষ্ণকে কাংস রাজার বন্দীশালা থেকে কৃষ্ণের বাবা ঝড় বৃষ্টির মাঝে কৃষ্ণকে কৃষ্ণের পালিত মাতার কাছে রেখে আসার দৃশ্য তুলে ধরেছেন।
দ্রৌপদীর বস্ত্র হরন। যখন কুরুবংশের দুর্যোধন দ্রৌপদীর বস্তু হরন করে তখন দ্রপদী শ্রীকৃষ্ণকে স্বরন করে এবং দ্রৌপদীর শরীরের বস্ত্র শেষ হয় না।যতোই বস্ত্র ধরে টানতে থাকে ততই বাড়তে থাকে অবশেষে দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণ করতে পারে না।দ্রৌপদীর কৃষ্ণ ভক্তি ও সতিত্বের জন্য সন্মান রক্ষা হয়।
এরকম ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমার সব থেকে ভালো লাগা হলো তিলক।তিলক দিতে আমার খুব ভালো লাগে।তিলক আমার মেয়েও দিতে ভালোবাসে। তিলক দিচ্ছেন এক মহিলা তা দেখে আমি এগিয়ে গেলাম এবং তিলক দিয়ে নিলাম।তিলক দেয়ার পর বেশ ভালো লাগছে আমার।
কিছুক্ষণ পর শুরু হয়ে গেলো নীলা কির্তন।আজ হচ্ছে রাজা হরিস চন্দ্রের লীলা কির্তন। অনেক মানুষের সমাগম হয়েছে। সবাই খুব মনযোগ দিয়ে লীলা কির্তন উপভোগ করছে।আজকের লীলা কির্তনে রাজা হরিস চন্দ্রের জীবনের সব কিছু তুলে ধরা হয়েছে।
ছোটবেলায় রাস পূর্ণিমায় জন্য সারাবছর অপেক্ষা করতাম।দিদুর সাথে প্রতিদিন যেতাম দেখতে রাসলীলা।আমাদের বাড়ি থেকে বেশ কাছেই রাস হতো আর সেজন্য প্রতিদিন যেতামও রাসযাত্রায় ও লীলা কির্তন শেষ করে আসতাম।সাতদিনে সাতটি লীলা হতো এখনেও হচ্ছে ও হবে সাতদিন সাতটি।
প্রতিদিন যেতামও প্রতিদিন দেখতাম বানিয়ে রাখা প্রতিমা। একশো আটটি প্রতিমা থাকতো। প্রতিদিন একই প্রতিমা দেখতে কখনো বিরক্ত লাগতো না বরং সময় নিয়ে দেখতাম। সেই দিনগুলোকে খুব মিস করি।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে বাকি পর্ব নিয়ে।
সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।
টাটা
পোস্ট | বিবরণ |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @shapladatta |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
ডিভাইস | OppoA95 |
লোকেশন | বাংলাদেশ |
আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।
আপনাদের রাস পূর্ণিমা মেলা সম্পর্কে এই প্রথম কিছুটা ধারণা পেলাম আপু। এর আগে এই সম্পর্কে জেনেছিলাম হালকা কিন্তু মনে ছিল না তবে আজকে আবার কিছুটা জানার সুযোগ হয়েছে। আজকের পোষ্টের মধ্য দিয়ে এই মেলা সম্পর্কে অনেক কিছু জানার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
তিলক কেটে তোমায় কিন্তু রাইসুন্দরীই লাগছে শাপলা। জানো আমাদের সবার ভেতরেই কোথাও না কোথাও রাধিকা বাস করে৷ কোন না কোন ক্ষণে রাইয়ের মন আমাদের মনের সাথে মেলে৷
যাইহোক রাসের মেলার গল্প পড়তে বেশ লাগল৷ তোমাদের ওখানে বেশ ধুমধাম করে রাস পালন হয় দেখছি৷ আমি কোন দিন যাইনি রাসের মেলায়৷ তাই দেখে আরই ভালো লাগছে৷ হরে কৃষ্ণ...