বিশ্বকাপ ম্যাচের ফল আগেই জানাবে যে
আজ যদি পল বেঁচে থাকত...
ঢালিউডের সিনেমার এ ডায়লগটা ব্যবহার করতেই হলো। ২০০৮ ইউরো থেকে ২০১০ বিশ্বকাপ—এ দুই বছর পল যা দেখিয়েছে! এরপর ফুটবলে কোনো ভবিষ্যদ্রষ্টা হাজির হলেই পলের নামটা একবার মনে পড়ে। পলকে চিনতে পারছেন তো? ওই যে আট বাহুর সেই অতি সাধারণ অক্টোপাস যে অতি প্রাকৃত ক্ষমতা দেখিয়ে হয়ে উঠেছিল অসাধারণ।
image sources
ধরাধামে মাত্র ৩৩ মাস ছিল পল। কিন্তু এ ক্ষুদ্র সময়েই বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়ে গেছে সে। ২০০৮ ইউরোতে জার্মানির ৬টি ম্যাচের ভবিষ্যদ্বাণী জানতে চাওয়া হয়েছিল পলের কাছে। ৪টি ম্যাচেরই সঠিক ফল জানিয়েছে সে। কিন্তু এতেও যারা বিস্মিত হননি তারা চমকে গেছেন দুই বছর পরেই। বিশ্বকাপে জার্মানির ৭টি ম্যাচেরই সঠিক ফল বলে দিয়েছে সে। এমনকি স্পেনই যে বিশ্বকাপ জিতবে সেটাও জানিয়েছে সে। এমন সফল জীবনটা কাটিয়ে বিদায় নিয়েছে সে ২০১০ সালের অক্টোবরেই।
তো হঠাৎ করেই পলের কথা মনে আসল কেন? জার্মানির মতো রাশিয়াও এবার বিশ্বকাপের জন্য এক ভবিষ্যদ্রষ্টাকে প্রস্তুত করছে। নতুন এই নিদানদাতার বাহুসংখ্যাও কম, মাত্র ৪। নামটা যদিও পলের তুলনায় অনেক ভারিক্কি, অ্যাকিলিস। গ্রিক বীরের নাম নিয়েই এবার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা কিংবা রাশিয়ার ভবিষ্যৎ জানাবে অ্যাকিলিস নামের এই বিড়াল।
সেন্ট পিটার্সবার্গের হার্মিটেজ জাদুঘরে থাকে অ্যাকিলিস। হাজার হলেও বিশ্বকাপের ফল আগেভাগে জানানোর মতো গুরুগম্ভীর দায়িত্ব তার কাঁধে। এ কারণেই এক সময়কার শীতকালীন রাজপ্রাসাদেই ঠিকানা হয়েছে অ্যাকিলিস ও তার সঙ্গীদের। ২০১৭ সালে কনফেডারেশন কাপে ভবিষ্যদ্বাণী করে হাতেখড়িও (পড়ুন, পায়ে খড়ি) হয়েছে তার।
বিজয়ী নির্ধারণের পদ্ধতিটা পলের মতোই। দুটো পাত্রে খাবার রাখায় হয়। একই খাবার, একই পাত্র। শুধু দুই পাত্রে মুখোমুখি হওয়া দুই দলের পতাকা সেঁটে রাখা। সেখান থেকে যে খাবারটা বেছে নেবে অ্যাকিলিস, ধরে নেওয়া হবে সে দলকেই বিজয়ী ধরে নিচ্ছে সে। এর আগে প্রত্যেক দলের চার্ট, খেলার সূচি দেখে প্রস্তুতি সেরেছে অ্যাকিলিস। বধির হওয়াতে মনোযোগ অন্যদিকে সরে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।
তবে আপাতত অন্যভাবে প্রস্তুত হচ্ছে অ্যাকিলিস। আধ্যাত্মিক ক্ষমতা নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ না থাকলে তার বিশাল বপুটা নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। হার্মিটেজ জাদুঘরের পাশের এক পোষা প্রাণীর দোকানে ব্যায়াম করানো হচ্ছে তাকে। এ প্রসঙ্গে প্রাণী চিকিৎসক আনা কনদ্রেতিয়েভা জানান, অ্যাকিলিস এখন কাজ করছে, ‘বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে সে। মানুষ ওকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাবার খেতে দেয়। সে যখন এখানে এসেছিল তখন ওকে বিড়াল নয়, ফুটবল মনে হচ্ছিল। আমরা তাই খাবারে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিয়েছি।’
প্রস্তুতিটা ভালোমতো সাড়তে পারলেই হয় এখন!