একদিন হঠাৎ

গল্প:- একদিন হঠাৎ

মা আমি বেরোচ্ছি, দরজাটা দিয়ে দাও । যা বাজারহাট করে দিয়েছি, তাতে এক সপ্তাহ চলে যাবে তারমধ্যে যদিও আমি তানিয়াকে নিয়ে চলে আসব তারপর বিয়ের যেটুকু কেনাকাটা বাকি আছে করে নেবো। তুমি সাবধানে থেকো।

                  দুর্গা দুর্গা ,  তুই সাবধানে যাস। আটটা বেজে গেল 10 টায় ফ্লাইট ,পৌঁছে খবর দিস আর তাড়াতাড়ি তানি দিদি ভাইকে নিয়ে ফিরে আসিস অনেক কাজ বাকি আছে হাতে আর মাত্র 15 দিন সময়।

                 হ্যাঁরে টগর , তোর দুধ গরম করা হলো? তোকে আজ আর রান্না করতে হবে না  । আমি দুপুরে দুটো সিদ্ধ ভাত করে খেয়ে নেব । আজ আর মাছ, তরকারি কিছুই করার দরকার নেই ।দেখলি তো দাদাবাবু বলে গেল শরীরটা ঠিক রাখতে হবে ।তুই একটু সাবধানে থাকিস,  সামনে অনেক বড় কাজ। তোকেই তো সব কাজ করতে হবে আর কে আছে বল ? মা মরা মেয়ে , বিয়ে দিয়ে পাত্রস্থ করতে পারলে বাঁচি ।আমি আর কদিন!  যার এসব করার কথা,  সেই তো চলে গেল। মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে স্বাবলম্বী হয়েছে এটুকু অবশ্য দেখে গেছে রিমিতা।  এটাই সান্তনা।

                   শোন তুই যা ।আমি একেবারে দরজা দিয়ে পুজোয় বসবো ।তোকে চিন্তা করতে হবেনা । সকালে আমি একটু দুধ আর ওটস খেয়ে নেব।

                 শোনো মাসিমা আমি ও বেলা আসবো না। তুমি সব বাসন রেখে দিও। আমি কাল সকালে এসে একেবারে মেজে দেবো ।তুমি যেন মাজতে যেও না। আমার মেয়েটাকে ওবেলা দেখতে আসবে পাত্রপক্ষ।

                ওমা ! তোর মেয়ে তো এখনো 18 হয়নি , জানিস এটা অন্যায় ।

                কি করবো বলো ! আর তাছাড়া একবার দেখলেই কি বিয়ে হয়ে যায় ? আমাদের মত গরীব ঘরে লাখ কথার আগে বিয়েই হয় না । তাও যদি মেয়েটা আমার মতো গায়ের রংটা একটু পেতো,  একেবারে বাপের  মুখ বসানো । কি করে যে বিয়ে দেবো কি জানি!  আমিআসছি , তাহলে তুমি দরজাটা লাগিয়ে দাও।

                এখন আবার কে ফোন করল দেখি পুজো টাও ভালো করে করা হলো না।  নিলয়ের ফোন তো নয়! ওতো পৌঁছে ফোন করবে বলেছে  । কি জানি কে ফোন করল বুঝতেও পারছিনা।

                হ্যালো- - - কে?

  দিদি ,  বড় স্বপ্না দি বলছেন ? আমি - - 

আপনি ইংলিশ পড়াতেন , আর ছোট স্বপ্না দি লাইফ সাইন্স । কি মনে পড়েছে !

                    হ্যাঁ মানে তুমি কে ভাই ? এখন তো আর কেউ ওই নামে ডাকে না , এখন আমি জেঠিমা মাসিমার দলে তা তুমি- - - -

               আমি শান্তনু । শান্তনু বোস  । 95  এ মাধ্যমিক। তার আগে অবশ্য আরো দশটা বছর আপনার স্কুলে - - আর একটু পরিচয় দিই আমার , আমি অশান্ত বোস !! 

                 মনে পড়েছে,  মনে পড়েছে  ! ! ঠিক , মোটেও তুমি শান্ত নয় । একেবারে অশান্ত ছেলে । তোমার দুষ্টুমিতে টিচার থেকে স্টুডেন্ট সবাই তটস্থ থাকতো । 

                দুষ্টুমি নয় দিদি বদমাইশি  বলুন। কি করিনি! মারপিট থেকে ছোটখাটো চুরি , বন্ধুদের টিফিন খেয়ে নেওয়া সবেতেই সিদ্ধহস্ত ছিলাম  অবশ্যই পড়াশোনাটা বাদ দিয়ে । ওই গোলমেলে টেন্স কিছুতেই আমার মাথায় ঢুকতো না । আপনি ক্লাসে আমার কান মুলে দিতেন,  নীলডাউন করে ক্লাসের বাইরে দাঁড় করিয়ে দিতেন।  টেন্স এর একটা চার্ট করে দিয়েছিলেন,  তবুও এই গাধাটা বুঝতে পারত না অথচ দেখুন - - 

                হ্যাঁ মাধ্যমিক দেওয়ার পর তো তুমি অন্য স্কুলে চলে গেলে,  তারপর আমিও কিছুদিন বাদে কর্মজীবন থেকে অবসর নিলাম । জীবন এবং জীবিকার সন্ধানে তোমরা কে কোথায় ছড়িয়ে পড়লে ! 

                    তা হঠাৎ আমায় ফোন করলে ? কি করো তুমি এখন?

                বলছি বলছি !  আমি এখন বোস্টনে থাকি। 10 বছর বাদে গতমাসে আমি দেশে ফিরেছি এ মাসের  15 th আমি ফিরে যাব  । হাতে আর কয়েকটা দিন , এই পরিচিত বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করছি আর কি!  আমাদের ব্যাচের  সায়নের থেকে আপনার ফোন নাম্বার পেলাম । এখন তো ওই কয়েকজনই আছেন ।  আমার সঙ্গে আমার স্ত্রীও এসেছে দিদি । ওকে আপনার অনেক গল্প করেছি । ওর ও আপনাকে দেখার খুব ইচ্ছা , আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে আজ বিকালে গিয়ে সস্ত্রীক আপনাকে প্রণাম করে আসবো । আপনি ইচ্ছা হলে আমার কানটা মুলে দিতেও পারেন সেই ছোটবেলার মতো।  হা- হা- হা ।

                বাই দ্যা ওয়ে,  নিলয় দা তো এখন ব্যাঙ্গালোরে ! আর নিলয় দার মেয়ে তানিয়ার তো বিয়ে,  আর কদিন পরে ! বৌদির খবরটা শুনলাম , খুব খারাপ লাগছে জানেন।  ঠিক আছে তাহলে ওই কথাই রইল বিকেলে যাচ্ছি । আপনাদের ফ্ল্যাটে কেয়ারটেকার আছে তাকে একটু বলে রাখবেন না হলে তো আবার পারমিশন পাবো না ওপরে যেতে।  জাস্ট ফাইভ মিনিটস । 

ওমা তুমি সব খবর রেখেছো !

              স্মৃতির সরণি বেয়ে মনটা চলে গেছে সেই স্কুলের চাকরি জীবনে। ছেলেটা বদমাইশির জন্য স্মরণীয় হয়ে আছে। প্রায়‌ই গার্জেন কল হত । ওর মা আসত করুন মুখ করে,  ছেলে কথা শোনে না!  এর পেন চুরি করে , ওর খাতা চুরি করে, । বাবা-মা কোন অভাব রাখে না তবুও । বাবার হাতে প্রচন্ড মার খায় ।মার খেয়ে খেয়ে ছেলেটা একদম ডেসপারেট হয়ে উঠেছিল।  বুক ফুলিয়ে বন্ধুদের বলতো বেশ করেছি চুরি করেছি যা পারিস করে নে।  একদিন ওর মা এসে আমার হাত দুটো ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ল দিদি আপনি একটু শাসন করুন শাস্তি দিন আমি পারছি না,  ওর বাবাও সারাদিন থাকে না কি করবো বুঝতে পারছিনা।

                             স্কুলের সব গল্পই আমি তখন শাশুড়ি মার সঙ্গে শেয়ার করতাম । আমার উনি তো দেশ রক্ষায় নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন।  ছেলেকে একাই মানুষ করতে হয়েছে।  স্কুলের ছেলেদের সমস্যা বাড়িতে আলোচনা করছিলাম  । অশান্ত  মানে শান্তনুর সমস্যাটা শুনে শাশুড়ি মা বলেছিলেন নিশ্চয়ই ছেলেটা গতজন্মে চোর গুন্ডা বদমাইশ ছিল  , তার কর্মের ছাপ বহন করছে ও। সাহিত্যের ছাত্রী আমি আধ্যাত্মিকতা বুঝতে পারিনি,  তবে এটা বুঝতে পারছিলাম মারধর করে কিছু হবে না। ওকে বোঝাতে হবে , আমি চেষ্টা করেছিলাম , ওর মাকে বলেছিলাম একটা ডাক্তার দেখাতে হবে । মানে সাইক্রিয়াটিস্ট।  ওর মায়ের ব্যাপারটা বোধগম্য হয়নি। 

বিড়বিড় করে বলেছিল আমার ছেলেটা তো পাগল নয়! হ্যাঁ - হুঁ করে চলে গিয়েছিল সেদিন।

               সত্যি সময় কত তাড়াতাড়ি চলে যায় ! তার মাঝে চলে গেছে একটা যুগ তারও বেশি এইতো গত মাসে আমি 74 পুর্ণ করলাম । মনে হয় এইতো সেদিন শাশুড়ি মায়ের চলে যাওয়া,  নিলয়ের বিয়ে , তানিয়ার জন্ম,  বড় হওয়া,  পাঁচ বছর আগে ওনার চলে যাওয়া,  তানিয়ার চাকরি পাওয়া , তারপর হঠাৎ করে বৌমা রিমি তার চলে যাওয়া বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি করেছে । মেয়েটা বড় ভাল ছিল।  বিয়ের পর কদিনই বা ছিল কলকাতায়,  বিয়ের একমাস পরেই ব্যাঙ্গালোরে চলে গেল নিলয়ের কাছে ।  মাঝে মাঝেই চলে আসতো,  তবে ওখানে একটা চাকরি পাবার পর আর ঘনঘন আসতে পারতো না । দুজনেই চাকরি করার জন্য মেয়েটা এখানেই মানুষ হয়েছে । উচ্চমাধ্যমিক দেবার পর বাবা-মায়ের কাছে ব্যাঙ্গালোর চলে গেল । তারপর তো ওখানেই চাকরি করছে । ছেলের বাড়ি ও কলকাতায় তাই বিয়েটা এখান থেকেই হবে।

                    সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ইন্টারকম টা বেজে উঠল কেয়ারটেকার জানতে চাইল একটি অল্প বয়সী ছেলে আর মেয়ে ওপরে উঠতে চাইছে পাঠাবে কিনা আমি সম্মতি দিতেই ঘরে বেল বাজল উঠে দরজা খুলে দিয়ে বসতে বললাম । টগর  বিকেলে আসবে না তাই নিজেই তিন কাপ চা বানিয়ে ওদের সঙ্গে গল্প করতে বসলাম । অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করতে বেশ ভালই লাগে , এক লহমায় ফিরে গেলাম বর্ণময় কর্মজীবনে।

                বছর পঁয়ত্রিশের শান্তনুর মধ্যে দেখার চেষ্টা করি অতীতের সেই ছোট্ট শান্তনু কে। সঙ্গে মেয়েটি বেশ চৌখস ইংরেজিতে। এক প্যাকেট মিষ্টি হাতে দিয়েই হঠাৎ করে একটা প্রণাম করে নিমেষে মনটা জয় করে নিল।

                    তোমাদের জন্য একটা করে ডিমের অমলেট বানিয়ে আনি! 
                   না-  তার - দরকার নেই।

তাহলে তোমাদের আনা মিষ্টি গুলোই একটা ডিসে দিই! একটু খাও , আমাদের ই বা এত মিষ্টি কে খাবে ! বউকে নিয়ে প্রথম এলে । আমাদের ঘরে তো মিষ্টি থাকে না খুব একটা, সুগারের রোগী সবাই। ছেলেটাও নেই, সকালেই চলে গেল, আগে জানলে একটু মিষ্টি আনিয়ে রাখতাম।

                আমরা মিষ্টি খেতে আসেনি মাসীমা,  আপনারা আলমারিতে তানিয়ার বিয়ের জন্য যে গয়না আর কুড়ি লাখ টাকা রাখা আছে সেটা চুপচাপ বার করে দিন ।।

    মানে? কি বলছ তোমরা! টাকা পয়সা গয়না! 

      ঠিক  শুনেছেন ।

    থর থর করে কাঁপতে লাগলাম। নিলয় বারবার বলে গিয়েছিল কাউকে এলাও না করতে। ফ্ল্যাটে এত নিরাপত্তা থাকায় নিশ্চিন্তে ছিলাম । এত বছর আছি কোনদিন এরকম পরিস্থিতিতে পড়িনি।  কি করবো এখন হে বিপদপতারণ মধুসূদন দিনরাত তোমায় ডাকি তুমি বিপদ থেকে উদ্ধার করো । 

    আমি -  বাথরুমে- যাব  ।আমার পেটে ব্যথা করছে। আমি - একটু - জল -খাব  । তোমরা কি আমার সাথে ইয়ার্কি করছ?  আমার হার্টের অবস্থা ভালো নয় ।বয়স হয়েছে । প্লিজ তোমরা চলে যাও।  আমার সন্ধাহ্নিক করার সময় হয়ে গেছে।

                  আমাদের হাতে সময় নেই,  আমরা চলে যাবার পর আপনি যতক্ষন খুশী পূজা অর্চনা করুন।  টাকা পয়সা গয়না আগে সব বার করে দিন ।

        আর দাঁড়াতে পারছি না ঠাকুরের সিংহাসন ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললাম । পায়ের ব্যথার জন্য পুজো করতে পারতাম না সিংহাসনটা দেয়ালে ঝুলিয়ে দিয়ে ছিলেন উনি । ঠাকুর মায়ের ছবির সামনে দাড়িয়ে বললাম মা তুমি পথ দেখাও । পাশেই একটা সুইচ নিরাপত্তার জন্য ফ্লাটের সবার ঘরেই আছে কিন্তু কোনোদিন ব্যবহার করিনি , আমার মিলিটারি স্বামী বলেছিলেন বিপদে পড়লে অন করো তোমার ঈশ্বর যদি থাকে তোমার বাঁচাতে আসবে।  সুইচটা অন করলাম কিছু হল না , কোন সাইরেন বাজলো না।

                        আস্তে আস্তে গিয়ে বালিশের তলা থেকে চাবিটা বের করে আলমারি খুলতেই ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ে গয়নার বাক্স থেকে সমস্ত গহনা বৌমা আর আমার গহনা মিলে প্রায় 40 ভরি গহনা  । ওদের সঙ্গে আনা ব্যাগে ভরে তাগাদা দিল টাকাটা বের করে দেওয়ার জন্য ।

                    হে ভগবান আমি কি করবো? এ আমাদের কি সর্বনাশ হল !
     কোনমতে বললাম ওটা পাশের আলমারিতে।

হঠাৎ বেল বেজে উঠলো । কে এলো আবার?

          শান্তনুর বউ পিঠে রিভলবার ঠেকিয়ে চাপা গলায় বলে উঠল যেই আসুক আপনি বলুন আপনি ব্যস্ত দরজা থেকে বিদায় করে দিন।

     দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে এলো ওই মেয়েটা , কেমন যেন ডাকাবুকো পুরুষালি চেহারা।  রাতদুপুরে গাড়ি এসে নামিয়ে দিয়ে যায় আবার কখনো কখনো রাতে গাড়ি এসে নিয়ে যায় কি করে কে জানে! এই কমপ্লেক্স এর ভেতরের দিকের ব্লকে থাকে । সবসময় শার্ট আর জিন্স পরে থাকে চোখে কালো চশমা । কি জানি কি কি মনে করে এলো। 

ওকে কি বলব ব্যাপারটা? ও কি এদের ই দলে !

 মাসিমা , আমাকে একটু চা খাওয়াবেন?

 চা মানে,  চা খাবে তুমি?

 আপনি কি কোন কারনে ভয় পেয়েছেন ? এত নার্ভাস ফিল করছেন  কেন ! আমায় চেনেন তো।

            হ্যাঁ মানে মাঝে মাঝে লবি দিয়ে দেখেছি তোমায় যেতে আসতে।

          আমিও খেয়াল করেছি আপনি লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে দেখেন।

          আমার গেস্ট এসেছে।  আমার ছাত্র পুরনো। অনেকদিন আগের । ওরা আমার সাথে দেখা করতে এসেছে।

                 শান্তনুর বউ আমায় টেনে সোফায় তার পাশে বসিয়ে দিল । পিঠে বন্দুকের নলের উপস্থিতি টের পাচ্ছি ।  কাপড় ভিজে গেল।

                মেয়েটা এসে জোর করে আমার পাশে বসলো আমি আমার চা  টাই তার সামনে ধরলাম ।ও নামিয়ে রাখল । মাসীমা আপনার গেষ্টরা আমি আশায় বিরক্ত হচ্ছেন , কোথা থেকে এসেছেন ওনারা?

               ব্যারাকপুর !  সে তো অনেকটা দূর ফিরতে রাত হয়ে যাবে তো এখন‌ইতো সাতটা বেজে গেল।

কথা বলতে বলতে মাসিমার পিঠে কাপড়ের আড়ালে থাকা মেয়েটির হাতে ধরে মচকে দিতেই আঁ করে চিৎকার করে উঠল । শান্তনু পড়ে যাওয়া রিভলবারটা তুলে মাসিমার দিকে তাক করতেই নিকিতা বলে উঠলো কোন লাভ নেই , আমি জানি ওটা খেলনা পিস্তল । এই দেখুন আমার হাতে যেটা রয়েছে এটা আসল !! একটা গুলিতে আপনার পা টা এফোঁড় ওফোঁড় করে দেব। নিশানা অব্যর্থ । পালানোর চেষ্টা করে লাভ নেই । দরজার বাইরে আমার সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী দাঁড়িয়ে ।
কমপ্লেক্সের গেটে পুলিশ গাড়ী নিয়ে অপেক্ষা করছে আপনাদের।

        যাবার আগে অবশ্যই আপনাদের ব্যাগ সার্চ করব,  কি আছে বার করুন। 

                আমি এতক্ষনে কিঞ্চিৎ সাহসের সঙ্গে বললাম আমার আর বৌমার সমস্ত গহনা  - - তানিয়ার বিয়ের জন্য তুলে রেখেছিলাম ও পছন্দমত নেবে। ওরা হঠাৎ এসে আমার ছাত্র পরিচয় দিয়ে এসব - -

                পুলিশ এসে ওদের নিয়ে যাবার পর নিকিতা হাতটা ধরে বললো আর কোন ভয় নেই আপনি বাথরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে নিন।

                   আপনার নাতনির বিবাহতে বাবা নিমন্ত্রিত হয়েছিলেন , আমি গত সপ্তাহে কার্ড দেখেছি। আর আজ সন্ধ্যেবেলা অফিস থেকে ফেরার পথে গেটে ঢুকতে গিয়ে চোখে পড়ল আপনাদের লবীর লাল লাইট টা ।বুঝতে পারলাম আপনি বিপদে পড়েছেন ভিতরে।  সাহায্য চাইছেন।  তবে এতটা এই রকম পরিস্থিতি সেটা বুঝতে পারিনি।

                 কেয়ারটেকারের থেকে জানতে পারলাম আপনার ছেলে আউট অফ স্টেশন । আপনি একা   এরা এই সুযোগগুলোই কাজে লাগায় । ওদের কাজে লাগানো হয়েছিল ।  দলের পান্ডা কে ধরার চেষ্টা করতে হবে , এই ধরনের ক্রাইম দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে । আপনি যে এই পরিস্থিতিতে ওই সুইচটা অন করতে পেরেছিলেন তার জন্য ধন্যবাদ । ভাগ্যক্রমে আমার চোখে পড়ে , আমি না এলে অবশ্য ফ্ল্যাটের কেউ-না-কেউ দেখত।  আমিই কেয়ারটেকারের নজরে আনি  ব্যাপারটা। 

                  আপনি আমার আচরন খুব একটা ভালো চোখে বোধহয় দেখতেন না ।  আসলে আমিও একটু লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতেই পছন্দ করি।  সন্ধ্যার পর‌ও  চোখে  থাকে কালো চশমা।  আমি সিবিআই অফিসার নিকিতা চৌবে।

কলমে :- সোনালি মল্লিক
images.png