আমার নিজের হাতের লেখা একটি গল্প | ভোরের আলো |
রাতের অন্ধকার কাটিয়ে ভোরের আলো যখন আস্তে আস্তে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন শহরের এক কোণে রমিজুদ্দিনের চোখ খুলে যায়। অজস্র কাজের মাঝে, জীবনের ভারে ন্যুব্জ এই মানুষটি প্রতিদিন ভোরেই জেগে ওঠে। তার একমাত্র সঙ্গী হচ্ছে ছোট্ট মেয়ে, রিমা।
রমিজুদ্দিন একজন দিনমজুর। সারাদিন কষ্ট করে পরিশ্রম করে, সে তার মেয়ের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করে। ছোট্ট রিমা বাবা ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। মায়ের মুখটা কখনো দেখেনি সে, তার জন্মের সময়ই মা চলে গিয়েছিলো পৃথিবী থেকে।
ভোরের আলো যখন ঘরের জানালা দিয়ে আস্তে আস্তে ঢুকতে শুরু করে, তখন রিমা ছোট্ট হাত দিয়ে বাবার মুখ স্পর্শ করে বলে, "বাবা, তুমি উঠে পড়ো। আজ তো স্কুলে যেতে হবে।"
রমিজুদ্দিন মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হাসে। মেয়ের চোখে সেই ছোট্ট স্বপ্ন দেখে সে—একদিন তার মেয়ে পড়াশোনা করে বড় মানুষ হবে। রিমার স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছা দেখে তার ক্লান্ত শরীরেও যেন নতুন উদ্যম আসে।
রমিজুদ্দিন জানে, শহরের মানুষগুলো তার মতো সাধারণ হলেও, তাদের প্রত্যেকেরই কিছু স্বপ্ন আছে। এই স্বপ্নগুলোকে পূরণ করতে হবে, তবেই তো তাদের জীবনের অন্ধকার ভোরের আলোর মতো দূর হবে।
আজকের ভোরের আলো তাদের জীবনে নতুন আশার সঞ্চার করে। রমিজুদ্দিন মেয়েকে নিয়ে সেই ভোরের আলোতে পা বাড়ায়, যেন সেই আলোই তাদের জীবনে সুখের, শান্তির এবং সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠবে।
রমিজুদ্দিন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, সে তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে সব করবে। ভোরের আলো তাদের জীবনের প্রতীক হয়ে ওঠে, যেই আলোয় রিমার স্বপ্ন পূরণ হবে, এবং রমিজুদ্দিনের জীবনের ক্লান্তি দূর হয়ে আসবে নতুন এক দিনের সূচনা।