আমার নিজের লেখা গল্প।। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালোবাসা।। পর্ব-৩৮
প্রিয়, পাঠকগণ,
তীক্ষ্ণ জবাব আসে। 'চোপরাও! যাকে জিজ্ঞাসা করছি সে বলবে। এই, বুড়ি,শুনছ? জবাব দাও।' ঘৃণায় মায়ের সমস্ত অঙ্গ যেন জ্বলে যেতে লাগল। হঠাৎ ভয়ংকর কাঁপতে আরম্ভ করল, যেন ধাক্কা খেয়ে ঠাণ্ডা জলে পড়ে গেছে। তারপর হঠাৎ একেবারেখাড়া হয়ে উঠল, ক্ষতচিহ্নটা তামাটে রং ধরল, ভুরুটা যেন নেমে এল চোখের ওপর।
হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল মা, 'অত চ্যাঁচাচ্ছেন কেন? ওই তো চ্যাংড়া বয়স। মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখেছেন কতটুকু?...' পাভেল ওকে থামাতে চেষ্টা করে, 'শান্ত হও মা, শান্ত হও।'
'থাম্, পাভেল।' বলে উঠে মা ছুটে যেতে চায় টেবিলের কাছে। চিৎকার করে ওঠে, 'কেন, কেন লোকেদের ধরেন আপনারা?'
'চুপ! তাতে আপনার কী?' ধমকে ওঠে অফিসার। 'ভেসঙ্গিকভকে নিয়ে এস।' তারপর নাকের কাছে ধরে কী একটা কাগজ পড়তে লাগল।
নিকলাইকে আনা হল। কাগজ পড়া থামিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে অফিসার, 'এই, টুপি উতারো।'
রীবিন মায়ের কাছে এসে তার কাঁধে একটু ধাক্কা দিয়ে চুপি চুপি বলে:
'অত উত্তেজিত হয়ো না, মা।' অফিসারের কাগজ পড়ার শব্দ ডুবিয়ে নিকলাই বলে ওঠে:
'আমার হাত ধরে রেখেছে যে, টুপি খুলব কেমন করে?' টেবিলের ওপর কাগজখানা ছুড়ে ফেলে বলল অফিসার, 'সই কর।'
সকলে সই করে। মায়ের উত্তেজনা কমে গেল, মনের আগুন নিবে যায়, অসহায় অপমানে চোখ জলে ভরে আসে। বিবাহিত জীবনের কুড়িটি বছর ধরে এমনি চোখের জল ফেলে এসেছে সে। কিন্তু শেষ কটা বছর তার তিক্ত স্বাদ প্রায় ভুলেই গিয়েছিল।
For work I use:
মোবাইল |
realme C25s |
ফটোগ্রাফার |
@dreamlife10 |
লোকেশন |
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
মাঠে |
অফিসার তার দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে বলে: *'এখনই সব চোখের জল ফুরিয়ে ফেলবেন না দেবী। এর পরে কী ফেলবেন? কিছুটা বাকি রাখুন।' আবার রাগে মা জ্বলে ওঠে। বলে:
'মায়ের চোখের জল ফুরোয় না কখনো। আপনার মা থাকলে সে বুঝবে!' অফিসার তাড়াতাড়ি ঝকঝকে তালা লাগানো নতুন ব্রিফকেসটায়
কাগজপত্রগুলো তুলে ফেলল। তার পর হুকুম দিল: 'মার্চ!'
বন্ধুদের হাত চাপতে চাপতে পাভেল শান্তভাবে মৃদুস্বরে বলে, 'আন্দ্রেই, নিকলাই, আবার দেখা হবে।'
অফিসার একটুকরো হাসি ছুড়ে মেরে বলে:
'তা ঠিক, শিগগিরই দেখা হবে।'
চলবে..........