আমার নিজের লেখা গল্প।। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালোবাসা।। পর্ব-৪৬
প্রিয়, পাঠকগণ,
দেখ ভাই, তুমি তো মেলাই বই পড়েছ। আইন-কানুন জানো। আমায় একটু বলে দেবে?.. পুলিশি জুলুম অথবা মালিকের অন্যায় ব্যবহারের খবর নিয়ে এসেছে হয়তো
সে। গোলমেলে ব্যাপার হলে এক পরিচিত উকিলের কাছে একটা চিরকুট দিয়ে পাঠিয়ে দেয় পাভেল। কিন্তু যখন পারে নিজেই একটা সমাধান করে দেয়। নেহাত অল্প বয়স হলেও গম্ভীর প্রকৃতির এই ছেলেটির ওপর ক্রমশই লোকের শ্রদ্ধা বাড়ে। সবকিছুতে সোজাসুজি কথা বলে, চাল নেই, ভয়-ডর নেই; যা ধরবে তাই করে ছাড়বে। চোখ কান সব খোলা- একমনে সব শোনে। যে-কোনো ঝগড়াঝাঁটি হলে খুঁজে বের করবেই মানুষে মানুষে সম্পর্কের অন্তহীন দৃঢ় যোগসূত্রটি। একটা ব্যাপারে পাভেলের খুব মর্যাদা বেড়ে গেল।
কারখানার চারদিকটা ঘিরে পচাপানায় ভরা একটা জলা ছিল। জঙ্গল হয়ে গিয়েছিল জলাটা। গ্রীষ্মকালে হলদে রঙের গ্যাস উঠত আর মশার ডিপো হয়ে থাকত। গোটা বস্তিতে ঘরে ঘরে জ্বর লেগে থাকত ওই কারণে। জলাটা কারখানারই সম্পত্তি। সেবার এক নতুন ডিরেক্টর এলেন। তিনি দেখলেন ওটার জল-নিকাশের বন্দোবস্ত হলে বেশ দু-পয়সা মুনাফা হয়, সেইসঙ্গে পিট নিষ্কাশন করাও সম্ভব। সুতরাং বস্তি-উন্নয়নের জিগির তুলে জল-নিকাশের খরচ বাবদ শ্রমিকদের মজুরির রুক্ল পিছু এক-কোপেক কাটার হুকুম দিয়ে ফরমান জারি
করলেন। শ্রমিকরা খেপে গেল। বিশেষ করে আরো খেপল ট্যাক্সটা দিতে হবে শুধু শ্রমিকদেরই, কর্মচারীদের মাপ।
নোটিশটা বেরল শনিবার। পাভেল সেদিন কারখানায় আসেনি, শরীর ভালো ছিল না। সুতরাং কিছুই জানতে পারেনি ও। পরের দিন গির্জায় প্রাতঃকালীন উপাসনার পর ওর কাছে এল কারখানার ঢালাই-খানার পুরনো কর্মী বুড়ো সিজভ
- সৌম্য চেহারা; আর এল সেই লম্বা মেজাজি মেকানিক মাখোতিন। তাদের কাছেই শুনল ও ব্যাপারটা।
ধীরে সুস্থে সশ্রদ্ধভাবে বলল সিজভ, 'আমার বয়স্করা বৈঠক করে ব্যাপারটার আলোচনা করেছি। তুমি সব জান-শোন, তাই তোমার কাছে আমাদের পাঠানো হয়েছে জানবার জন্য যে ডিরেক্টর আমাদের পয়সা দিয়ে মশা মারতে পারবেন এমন কোনো আইন আছে কিনা।'
For work I use:
মোবাইল |
realme C25s |
ফটোগ্রাফার |
@dreamlife10 |
লোকেশন |
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
মাঠে |
মাখোতিন তার কুঁতকুতে চোখ লাল করে বলল, 'চার বছর আগে শালারা টাকা নিয়েছে গোসলখানা করবে বলে। তিন হাজার আটশ রুক্ল উঠেছিল। সে শালার গোসলখানার টিকিটিও চোখে দেখলুম না আজ অবধি।'
মুনাফা লুটবে কারখানার মালিকেরা। মুখ হাঁড়ি করে চলে গেল দুজনে। মা ওদের এগিয়ে দিয়ে এসে হেসে বলল:
'তুই দেখি বুড়োদেরও বুদ্ধি জোগাস্!'
চলবে..........