আজ আমার বিয়ে

in #busy7 years ago

ভাবলাম, বিয়ের দিন হিসেবে একটা নোট লিখি। এখন তো আর মায়ের চোখ আমার ফেসবুক প্রোফাইলে পড়ার ভয় নেই, যে লিখতে গেলে ভয় পাবো, কেউ দেখে ফেলবে কিনা।
হলুদ গোলাপ দিয়ে তোকে প্রপোজ করেছিলাম, হয়ত হলুদ গোলাপ সাধারণের চোখে বন্ধুত্বের প্রতীক। আমি সেটা জানতাম না। কিন্তু আমার কাছে তুই বন্ধুর চেয়েও বেশি যে? ফুলটা দিয়ে হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসেই চোখ নামিয়ে ফেলেছিলা, যেখানে আমার খ্যাতি আছে নির্লজ্জ হিসেবে, সেই আমি লজ্জায় চোখ উঠাতে পারিনি,তুই যে সাথে সাথে I do বলেছিলি,সেটাও আমার কানে ঢোকেনি। হিহিহি.... জীবনে একবারই মাত্র প্রপোজ করা কাউকে, সেটাও ঠিকমত করতে পারিনি... :p
ফুলটা দিয়ে এসেছিলাম কালরাতের শহীদের স্তম্ভে। মৃদু হাওয়া বইছিল সেই সময়টাতে। তাও ভালো,কোন বইয়ের পাতায় চাপা পড়ে বিবর্ণ হয়ে কিংবা ফুলটা হারিয়ে যাওয়ার স্মৃতি নেই। সারাজীবন আমাদের মগজের স্মৃতিভাণ্ডারে, সেটা একটা তাজা গোলাপ হিসেবে শহীদের স্তম্ভে সৌরভ ছড়িয়ে যাবে।

ভালোবাসি :)

তোর পরিকল্পনা ছিল,তুই পাঞ্জাবি পড়বি, চুল কালো করবি। আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিবি।
যেহেতু কাছে নেই,তাই আমি বলেছিলাম, তোর দিকের কাজগুলো তুই পারলে করিস। সাথে পারলে কোন একটা বাচ্চাকে পেট ভরে খাইয়ে দিস। আমি এদিক থেকে তোর কপালে একটা চুমু পাঠাবো। সেটা আমার দোয়া হয়ে তোকে সব বিপদ থেকে দূরে রাখবে।

কাজগুলো না করতে পারলেও কোন ব্যাপার না। বারবার বলেছি,আবার বললাম, সেই ২৯ অক্টোবর, ২০১৭ তে নেভাল থেকে আসার পথে বাসে তুই আমার কপালে চুমু দিয়ে আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছিলি। আমিও তোর গালে পালটা চুমু দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম, "আমিও মেনে নিলাম এবং তোমাকে আমার স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলাম"

আর কিছু কি লাগে? বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পাই আর না পাই,কাজী বিয়ে না পড়াক,সাক্ষী না থাকুক, কেউ না জানুক...
আমরা দুজনে জানি,
তুই আমার, আমি তোর। :)
এটুকুই তো যথেষ্ট। এক জনম, তার পরের কোন জনম বা জান্নাত থাকলে, তার জন্যও।
আমি কিন্তু এখনো ঠিক করতে পারিনি, তোকে কি পিচ্চি বলে ডাকবো, নাকি পিচ্চি জামাই বলে ডাকবো? "পিচ্চি জামাই" বলতে গেলে খালি পেট ফেটে হাসি বের হয়ে আসে। কি করতাম ক? জানিনা, কেন হাসি আসে :p

এ প্রান্ত থেকে আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসাটা শুধু তোর জন্যই থাকবে। পৃথিবীর কোন প্রলোভন/আঘাত/আক্রমণ যেমন তোকে,পিচ্চিকে টলাতে পারবে না,আমাকে,হারামীটাকেও টলাতে পারবে না। কারণ, অনেকদিন হয়েছে,হারামীটা তার ক্ষ্যাপা রূপটা বের করেনি। কাউকে ভালোবাসলে হারামীটা কতটা ক্ষেপে গিয়ে তার জন্য সব বিলিয়ে দিতে পারে,দুনিয়া তা এবার দেখবে।
পিচ্চি, কিশোরী কতটা ক্ষমতাশালী ছিল,তার কিছু কিছু বর্ণনা তোকে দিয়েছি। এবার তুই নিজের চোখে দেখবি, তোর জন্য কিশোরীটা কি কি করতে পারে। তোর জন্য "আরেকটা সায়েদ" তো সে হয়ে উঠবেই, সাথে আরো বেশি কিছু হবে সে।
দুনিয়ার সমস্ত প্রলোভন তখন তোর কাছ থেকে কিশোরীকে সরাতে চাইবে। কিন্তু কিশোরী তখন একদিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রাখবে, পিচ্চি যে পথ দিয়ে হেঁটে গেছে,সেই পথের শেষ মাথা, যেখানে পিচ্চি তার দৌড় শেষ করে এসে কিশোরীটাকে কোলে তুলে নিয়ে চুমু খাবে। :)

জানি,কথাটা অনেক বেশি বলি। আবার বলছি,বারেবারে বলব,অজস্রবার বলব।

ভালোবাসি,ভালোবাসি,ভালোবাসি, জন্ম জন্মান্তরের জন্য ভালোবাসি,পিচ্চি।

এগিয়ে যা,আরো বেশি ক্ষমতা নিয়ে ফিরে আয়। যাতে একদিন আমরা নির্ভয়ে সমস্ত বাধাকে তুচ্ছ করে হাসিমুখে একে অপরের হাত ধরে পৃথিবীর সামনে দাঁড়াতে পারি।

-ইতি, তোর হারামী। �

Sort:  

This post has received gratitude of 1.85% from @appreciator courtesy of @rita253!