ঋণমানে বাংলাদেশের সক্ষমতার বার্তা পাচ্ছে না বিশ্ব

prothomalo-bangla_2023-09_ee7a1e03-b856-4c4f-b0a9-47fb664cf8ad_821ab7ea_f2d8_4bde_9de6_bbe6d579c674.webp
শেষ পর্যন্ত ফিচ রেটিংসও বিশ্বের অন্য দুই বড় ঋণমান নির্ণয়কারী প্রতিষ্ঠানের সুরেই কথা বলেছে। তারাও আর বাংলাদেশের অর্থনীতির ব্যাপারে পূর্ণ আস্থা রাখতে পারছে না, তাই পূর্বাভাস ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’ করে দিয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, একের পর এক ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা বা রেটিং এজেন্সি যখন কোন দেশের ব্যাপারে একই সুরে কথা বলে, তখন বাইরের বিশ্বের কাছে একটিই বার্তা যায়। সেটি হলো, দেশটির অর্থনীতি সক্ষমতা হারাচ্ছে।

বিশ্বে ঋণমান যাচাইয়ের কাজটি যারা করে, তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য তিনটি প্রতিষ্ঠান—মুডিস, স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস বা এসঅ্যান্ডপি এবং ফিচ। এই তিন প্রতিষ্ঠান পরিচিত ‘বিগ থ্রি’ হিসাবে। গত মে মাসে প্রথম খারাপ খবরটি আসে মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিসের কাছে থেকে। দুই মাস পরেই এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল এবং আরও দুই মাস পরে, গত সোমবার ফিচ রেটিংস বাংলাদেশের পূর্বাভাস ও ঋণমান সম্পর্কে হতাশাজনক খবরই দিল।

বাংলাদেশের অর্থনীতি যে চাপের মধ্যে রয়েছে, তা আর্থিক খাতের কর্তারাও এখন আর অস্বীকার করেন না। তবে মাত্র চার মাসের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী তিনটি ঋণমান যাচাইকারী সংস্থার কাছ থেকে অনেকটা একই রকম বার্তা আসার কারণে বাইরে থেকে বাংলাদেশকে দেখা হবে ভিন্ন চোখে। অর্থনীতির বিশ্লেষক ও বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন যেমনটা বলছেন, ‘বাইরে থেকে বাংলাদেশকে আর খুব ভালো দেখাচ্ছে না।’

গত ৩০ মে মুডিস ইনভেস্টরস সার্ভিস বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ৩ থেকে বি১-এ নামানোর ঘোষণা দিয়েছিল। এই পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে যুক্তি হিসেবে সংস্থাটি বলেছিল, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি রয়েছে। ডলার-সংকট চলমান এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত কমে যাচ্ছে, যা দেশের বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে।

এরপর গত ২৬ জুলাই এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের আউটলুক বা দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল থেকে নেগেটিভ বা নেতিবাচক করে দেয়। এ ক্ষেত্রে দুটি কারণ দেখায় এসঅ্যান্ডপি। প্রথমত, বিদেশি মুদ্রায় স্বল্প মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ পরিশোধের যে বাধ্যবাধকতা আছে, তার অবস্থা আগামী বছর আরও খারাপ হতে পারে। দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপের মুখে আছে।