Biriyani rules
বিরিয়ানি খাওয়ার নিয়ম-কানুন---
খাব বললেই বিরিয়ানি খাওয়া যায় না। বিরিয়ানি গেলা হলে আলাদা কথা। কিন্তু খাওয়ার মতো করে যদি খেতে হয়, তাহলে খানিক প্রস্তুতি লাগে বইকী! সর্বদা মাথায় রাখতে হবে, ডাল-ভাত-চাউমিন-তরকা-রুটি এসব একদিকে। আর বিরিয়ানি একদিকে। রেস্টুরেন্টে হাফ চাউমিন হয়। হাফ তরকা হয়। এমনকী মন দিয়ে খুঁজলে হাফ এগরোলও হয়তো মিলবে কোথাও না কোথাও। কিন্তু হাফ বিরিয়ানি? নাহ। ‘কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি’। কারণ, এ দেবভোগ্য জিনিস আধা মুখে তুলে বাকি হাফ স্যাক্রিফাইস করতে পারেন না কেউই। কী করে বিরিয়ানি ১০০ শতাংশ উপভোগ করতে হয়, সে নিয়ে আমার একটা থিওরি আছে। মেনে চলুন। দেখবেন, ঠকবেন না।
১)একটা ভাল বিরিয়ানি খাওয়ার পরিকল্পনা শুরু হয় তার আগের দিন রাতের থেকে। কারণ একটাই। স্টোরেজ ফাঁকা রাখা। কী করে স্টোরেজ ফাঁকা রাখবেন? ইসবগুলো কাজ হয় না? এক কাজ করুন। আগের রাতে কড়াপাকের ঝাল দিয়ে ফুচকা খেয়ে নিন। বেশি না, দশ টাকার। দেখবেন পরের দিন সকালে কাজ হবে। প্রবল বেগে আপনার স্টোরেজ ভোরের দিকেই ক্লিয়ার হয়ে যাবে। বিরিয়ানির পথ তো প্রশস্ত হলই। সঙ্গে সাবলীল ত্যাগের সুখ হল উপরি পাওনা।
২) এরপর দরকার, ‘বিরিয়ানি খাব। বিরিয়ানি-ই খাব। বিরিয়ানি না খেলে বুক ধড়ফড় করছে’।এরকম ড্রাগ অ্যাডিক্টেড সুলভ মানসিকতা। নিজেকে সিডিউস করুন। আপনি করেন কি না জানি না, তবে আমি যেটা করি, সেটা হচ্ছে, ডেট ধরে ধরে রেস্তোরাঁয় গিয়ে বিরিয়ানির ছবি তুলে রাখি। আপনার ফোনে কীভাবে ফাইল সেভ হয়? Photo_1, Photo_2 এইভাবে? আমার ফোনে সেভ হয় এইভাবে Handi_23JUNE_KACCHI। পুরনো স্টক থেকে সেই ছবিগুলো খুঁজে বের করুন। দেখুন। লালা ঝরুক। এভাবে কাটুক, কম করে ১২ ঘণ্টা। তবে গিয়ে বুঝবেন, অনাহারের পরে সামনে তাগড়াই হরিণ পেলে শিকারী বাঘের কেমন উল্লাস হয়। ওই উল্লাস এবং হিংস্রভাবটা ধরে রাখুন। বৈষ্ণবসুলভ মিনমিনে ভাব নিয়ে মাটনের তাগড়াই পিসে কামড় বসানোর কোনও অধিকার কারও নেই। মাটন কামড়াতে গেলে ফর্সা ধবধরে নারী গ্রীবায় দাঁত বসানোর জন্য কাউন্ট ড্রাকুলার নির্মমতা। আছে? তাহলে পয়েন্ট নম্বর টু-তে চোখ রাখুন।
৩) কখন বিরিয়ানি খাবেন? দুপুরে নাকি ডিনারে? যদি দুপুরে হয়, তাহলে ব্রেকফাস্ট অবশ্যই হাল্কা খাবেন। মনে রাখবেন, কবি বলেছেন, ‘অমরত্বের প্রত্যাশা নেই, নেই কোনও দাবি দাওয়া। এই নশ্বর জীবনের মানে শুধু তোমাকেই খাওয়া।‘ তাহলে খেতে যখন হবে শুধু তাকেই, তাহলে কেন খামোখা ব্রেকফাস্টে লুচি, কচুরি খেয়ে পেট ভারী করবেন? বিরিয়ানির সকালে ব্রেকফাস্ট হোক হাল্কা বিস্কুট। আগের রাতে ফুচকা খেয়ে ত্যাগের পথ স্মুদ করেছেন। সে তো কর্নফ্লেক্স বা কচুরি খেয়ে পেট ডাঁই করার জন্য নয়। ঘড়ির কাঁটায় অপেক্ষা শুরু করে দিন। লাঞ্চে যাওয়ার আর কতক্ষণ বাকি?
৪) ঘুম থেকে ওঠা আর বিরিয়ানি খাওয়া--- এই মাঝের সময়টা বড় ছটফটানির। কী করবেন, কী করবেন ভাবতে ভাবতে অধৈর্য লাগতেই পারে। সময় নষ্ট করবেন না,এই সময় নিজেকে টিউন করে নিন কিঞ্চিত বাদশাহী মেজাজে। গান শুনবেন তো গজল। কবিতা পড়বেন তো মির্জা গালিব, মীর তকী মীর। বেশি হাঁটাচলা করবেন না। আশা করি, আপনার বাড়ির লোকজন আপনার বিরিয়ানি-প্রীতির কথা জানেন, তাই একগ্লাস পানি গড়িয়ে খেতে হলেও, দু’বার তালি দিয়ে হাঁক পাড়ুন, ‘ওরে কে আছিস, পানি দিয়ে যা’। যদি সে হুকুম তামিল হয়, তা হলে জানবেন, আপনি বড় ভাগ্য করে এই পরিবারে জন্মেছেন।
৫) এবার শো-টাইম। সেজেগুজে তৈরি হচ্ছেন খেতে যাওয়ার জন্য। একী! টাইট জিন্স পরছেন? বিরিয়ানি খেতে গেলে টাইট পোশাক নৈব নৈব চ। ঢোলা পাজামা পরুন। কারণ, বিজ্ঞানের নিয়ম এবং ইলাস্টিসিটির সূত্র বলে, পেটে খাবার ঢুকলেই পেট ফুলবে। তখন টাইট জিন্স আপনার তলপেট চেপে ধরবে। তখন? সবচেয়ে ভাল, হাল্কা থ্রি কোয়ার্টার টাইপের কিছু পরে গেলে। স্টাইলও হল। কমফোর্ট-ও হল। নিন এবারে বেরিয়ে পড়ুন।
৬) বাস রিক্সার ভিড় ঠেলে আপনি এবার দোকানের সামনে। বিরিয়ানি একা খেতে নেই। তাই সঙ্গে এসেছেন আপনার বন্ধু। না হয় প্রেমিক/প্রেমিকা। না হয় অন্য কেউ। কাউকে না পেলে আমাকে ফোন করুন। রণে-বনে-সাইক্লোনে এই একটি কাজে আপনি আমাকে সঙ্গে পাবেন। পৃথিবীর যে প্রান্তে হোক। প্রথমেই দুম করে ঢুকে পড়বেন না যেন দোকানে। আগে সামনে গিয়ে দাঁড়ান। টের পাচ্ছেন ভিতর থেকে কেমন হাল্কা সুবাস ভেসে আসছে। চোখ বন্ধ করে দোকানের সামনে দাঁড়ান। প্রাণভরে গন্ধটা শুঁকুন। মনে মনে বলুন, এ জগত মিথ্যা, সংসার মিথ্যা, সেমেস্টারে সাপ্লি মিথ্যা, মান্থ এন্ডে বসের দাঁত খিঁচুনি মিথ্যা, বাড়ি ফিরলে দজ্জাল বউয়ের খিচখিচ মিথ্যা। জীবনে অখণ্ডমণ্ডলাকার সত্য কেবল তুমি, তুমি, তুমি। যদি আমি সঙ্গে থাকি, আর দোকান যদি চট্টগ্রামের কোনও বড় দোকান হয়, তাহলে কোন খানে কোন দিকে মুখ করে দাঁড়ালে সবচেয়ে ভাল গন্ধটা পাওয়া যাবে, সেটা দেখিয়ে দেবো।
৭) বিরিয়ানির দোকানে মেনুকার্ডের কোনও প্রয়োজন নেই। আপনার হিসাব পূর্বনির্ধারিত। আপনি খাবেন মাটন বিরিয়ানি সঙ্গে চিকেনের সাইড ডিশ। মনে রাখবেন, মাটন ইজ রিয়েল বিরিয়ানি। চিকেন বিরিয়ানি ইজ নাথিং বাট কমপ্রোমাইজ। তবে বিরিয়ানি তো মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। বিরাট কোহলির মতো। ওপেনার রোহিত শর্মা তো অন্য কেউ। তাই ডাক পড়ুক কাবাবের। খেলা শুরু হোক গলৌটি কাবাব এবং স্যালাড শোভিত ধনিয়ার চাটনি দিয়ে। একটা-দু’টো-তিনটে। ব্যাস! আর না। তিন মিনিটের ব্রেক নিন। সঙ্গে আমি থাকলে আপনাকে সময়ের হিসাব রাখতে হবে না। আমিই খেয়াল করিয়ে দেবো।
Hello,
We have found that all or part of the above post may have been copied from: https://www.facebook.com/bukpocket/posts/1502527706440451:0
Not indicating that the content you post including translations, spun, or re-written articles are not your original work could be seen as plagiarism.
These are some tips on how to share content and add value:
Repeated plagiarized posts are considered spam. Spam is discouraged by the community, and may result in action from the cheetah bot.
If you are actually the original author, please do reply to let us know!
More Info: Abuse Guide - 2017.
If you reply to this comment directly, we may not notice your response.
It is recommended to contact us in our Discord Channel, instead.
Thank you.