স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বাইসাইকেল চালানো আমাদের দরকার....................

in #health2 years ago

প্রিয় বন্ধরা,

গীতিকার মনির সরকার মানুষকে কেন দুই চাকার বাইসাইকেল এর সঙ্গে তুলনা করেছেন তা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও দুই চাকার বাইসাইকেল যে মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু সেটি নিয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই। সাইকেল চালানোর অনেক উপকারিতা আছে। এটি শরীরের জন্য যেমন উপকারী তেমনি পরিবেশগতভাবে উপকারী। আর জ্বালানি তেলের দাম যখন উর্ধ্ব গতি তখন আপনার পরম বন্ধু বাইসাইকেল।

সাইকেল চালানোর শারীরিক উপকারিতা

main-qimg-c9722269aa5c94330c5ea77adae97ecf-lq.jpg

source

সাবেক আওয়ার রেকর্ডধারী জীবনের বেশিরভাগ সময় বিষণ্নতায় ভুগছেন। তিনি বলেন বাইরে বের হওয়া এবং সাইকেল চালানোর বিষণ্ণতার আক্রান্তদের সাহায্য করবে। সাইকেল না চালালে আমি জানিনা আমি কোথায় থাকতাম। পাঁচ বছর ধরে ২৬০০০ জনেরও বেশি ব্যক্তির উপর গ্লাসকো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, কাজে যাওয়ার সময় যারা সাইকেল ব্যবহার করতেন তাদের হূদরোগ বা ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অর্ধেক কমে গিয়েছিলো। পেশি এর গঠন মজবুত করতে সাইক্লিং এর জুড়ি মেলা ভার। মস্তিষ্কে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে, ফলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে। নিয়মিত সাইকেল চালানোর মাধ্যমে স্ট্রোক হার্ট অ্যাটাক এবং উচ্চ রক্তচাপের মত কার্ডিয়াক সমস্যায় রোধ করা যায়। সাইক্লিং করলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। ৩০ থেকে ৬০ মিনিট সাইকেল চালানোর ফলে প্রতিদিন শরীরের সব অংশ থেকে চর্বি কমতে পারে। ব্রেনকে শান্ত করে এবং নিঃসরণ করে হ্যাপি হরমোন' যার প্রভাব পড়ে মেদ কমাতে। বলা হয় ক্যালোরি গ্রহণ এর চেয়ে বছর বেশি হলেই কমবে ওজন। ওজন কমাতে হলে তারিখ ক্যালরি বার্ন করার কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত সাইক্লিং দিনে ৪০০ থেকে ১০০০ ক্যালরি বার্ন করতে সাহায্য করে। সাইকেল চালানোর ফলে ভারসাম্য, ভঙ্গি ও মনোযোগ বাড়ে। সাইকেল চালানোর সময় নিজের দেহকে স্থিতিশীল করতে গিয়ে সামগ্রিক ভারসাম্য সমন্বয় এবং ভঙ্গিমার উন্নতি ঘটে। এর ফলে হঠাৎ পড়ে গিয়ে ফ্র্যাকচার হওয়ার ঘটনা কবে ঘটে। নিয়মিত সাইকেল চালানো অভ্যাস ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে যারা কমপক্ষে ৩০ মিনিট সাইকেল চালান তাদের স্তন এবং কোলন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। কারণ হলো সাইকেল চালানো কোষচক্র রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত সাইকেল চালানো ঘুমের সাহায্য করে বিশেষ করে। ইনসমনিয়ায় এটি বেশ কার্যকর। ঘুমের উন্নতির জন্য সাইকেল চালানোর সবচেয়ে কার্যকর সময় হল সন্ধ্যা। তাছাড়া সকালে সাইকেল চালালে এটি সারাদিন শরীর সক্রিয় রাখে এবং রাতে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে।

পরিবেশগত উপকারিতা


photo-mahade-2.jpg

source

সাইকেলে গাড়ি ও বাসের মতো অন্যান্য পরিবহন এর তুলনায় অনেক কম রাবার এবং লুব্রিকেট ব্যবহৃত হয়। প্রতিবছর গাড়িতে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ রাবার এবং লুব্রিকেন্টের যোগান দিতে হাজার হাজার একর বন উজাড় করতে হয়। যানবাহন উৎপাদনে ব্যবহৃত মাটির নিচ থেকে খনন করা হয়। যা সমতলভূমির অংশে ও বন প্রচারে ভূমিকা রাখে। এমন কি কোন ছোট খনন ও বছরের পর বছর ধরে গাছপালা ও রাখতে পারে। ফলে কাটা পড়ে গাছ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরূপ প্রভাব পড়ে। মোটর চালিত পরিবহন থেকে সৃষ্ট ৬০% দূষণ চালানোর প্রথম কয়েক মিনিটে উৎপাদিত হয়। এই ওয়ার্ম আপ এর জন্য কম দূরত্বে গাড়ি চলা দীর্ঘ দূরত্বের গাড়ি চালানোর চেয়ে বেশি বায়ুদূষণ তৈরি করে । তাই কম দূরত্বের সংক্ষিপ্ত পথ সাইকেল দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতে পারে। এ ছাড়া সাইকেল চালালে যানজটও কমে। রাস্তায় কোন গাড়ি মানে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

কোথায় পাওয়া যাবে সাইকেল


edited-cycle-mehedi-hasan-1591870256230.jpg

source

ঢাকা শহরের বড় পাইকারি সাইকেল মার্কেট পুরান ঢাকার বংশালে অবস্থিত যা বংশাল সাইকেল মার্কেট নামে পরিচিত। এখানে পাওয়া যাবে বাহারি রঙের ডিজাইনের বিভিন্ন সাইকেল। এটি কাজী আলাউদ্দিন রোড হয়ে নাজিরা বাজার চৌরাস্তা পর্যন্ত এসে শেষ হয়েছে। বলা হয়ে থাকে এমন কোন সাইকেলের পার্টস নিয়ে যায় এখানে পাওয়া যায়না। এই মার্কেটে নতুন সাইকেলের দোকানের পাশাপাশি বেশ কিছু পুরাতন সাইকেলের দোকানও রয়েছে। ছোট-বড় মিলিয়ে আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ টি দোকান রয়েছে। এখানে সাইকেলের ব্যবসা শুরু হয়েছে আনুমানিক ৪০ থেকে ৪৫ বছর আগে। সম্পূর্ণ সাইকেল আমদানি করা হয় বরং সেখানে সংযোজন করা হয়ে থাকে। সাধারণ সাইকেল ছাড়াও এক্সপোর্ট সাইকেল, বাচ্চাদের সাইকেলও পাওয়া যায় এখানে। চলতি সময়ে জ্বালানি সংকট ও উত্তপ্ত তেল বাজার ও আর্থিক পেক্ষাপট বিবেচনায় সাইকেল হতে পারে সময়োপযোগী বন্ধু।

আমাদের সাথে থাকুন

নতুন সব তথ্য জানুন

ধন্যবাদ