বাড়ি ফেরা। 🏚️
"নমস্কার বন্ধুরা"! আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি এক ভিন্ন ধরনের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক.......
হঠাৎ সুমির মনে হলো যে কেউ মনে হয় তাকে ফলো করছে। সুমির হঠাৎ করেই খুব ভয় হতে শুরু করে। সুমি এমনিতে খুব সাহসী মেয়ে। সুমির আত্মবিশ্বাস খুবই প্রখর। সুমি কখনোই কোন তৃতীয় শক্তির ভয় পায় না। সুমী তৃতীয় শক্তিকে বিশ্বাস করে না এমনটাও নয়। সে বিশ্বাস করে কিন্তু সে এটাও মনে করে যে পৃথিবীতে মানুষের থেকে বেশি ভয়ংকর আর কিছু হতে পারে না।
সুমি এই জগৎ সংসারে শুধু মানুষকেই ভয় পায়।সুমির মতে অন্য যা কিছুই আছে তাদের দেখলে বোঝা যায় যে তারা জন্তু। কোন প্রাণীটি আমাদের জন্য ভালো আর কোন প্রাণীটি আমাদের জন্য বিষাক্ত তা আমরা সেই প্রাণীটিকে দেখলেই বুঝতে পারি। কিন্তু মানুষ একমাত্র এমন ব্যক্তি যে যাদের দেখলে বা তাদের সাথে যুগ যুগ বসবাস করলেও বোঝা যায় না বা তাদের চেনা যায় না যে, তারা কেমন।
মানুষ যে কখন কি পরিস্থিতিতে আমাদের ক্ষতি করবে এটা আমরা আগে থেকে কখনো বুঝতে পারিনা। আজ সুমি তাদের গ্রামের বাড়িতে গেছে। সবাই বলে তাদের গ্রামে নাকি একটু ভয় আছে। সুমি বিশ্বাস করে না এমনটা নয় কিন্তু তার মনে হয় এটার পেছনে নিশ্চয়ই কোন না কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তো অবশ্যই আছে। কিন্তু সুমির হঠাৎ তাদের গ্রামে আসার কারণ এটা নয়। সে হঠাৎ তার গ্রামে এসেছে কারণ তার দাদি হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
সে চেয়েছিল পরের দিনই সকালের রওনা দেবে কিন্তু তার আব্বা তাকে অনেকবার করে বলায় সে সেই সন্ধ্যাতেই রওনা হয়েছে। এখন মাত্র দশটা বাজে। তেমন কোনো রাত নয়। কিন্তু গ্রামের ক্ষেত্রে অন্য কথা। তাদের গ্রামের রাত দশটা মানে অনেক রাত। কোন বাড়িতেই এখন এমন কাউকেই পাওয়া যাবে না যে জেগে আছে।
সুমি ঘাটে নেমে আজ কোন ভ্যান গাড়িও আজ আর পায়নি। তাই সে দেরি না করে হাঁটতে শুরু করেছে, ঘাটে অযথা দাড়িয়ে না থেকে সে হেঁটে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘাট থেকে তাদের বাড়ি তেমন দূরে ও না। হেঁটে যেতে বড়জোর পনেরো মিনিট লাগে। তাই সুমি কিছু না ভেবেই হাঁটা শুরু করেছে। সুমির হঠাৎ হাঁটার মাঝে মনে হলো তাকে যেন কেউ দেখছে। সে পায়ের শব্দ মনে হয় পেল।
সে হঠাৎ ঘাবড়ে গেল। কিন্তু সে তার হাঁটা চলার মধ্যে তার কোন প্রতিক্রিয়া দেখলো না। সুমির হঠাৎ মনে হয়েছিল এটা যদি কোন বাজে লোক হয় তবে সে কিভাবে তার হাত থেকে বাঁচবে। সুমীর মাথায় নানা ধরনের চিন্তা আসতে থাকে। তবে সে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে খুব শান্তভাবেই হাঁটতে থাকে। এবং সে খেয়াল ও করতে থাকে,যে সে পায়ের শব্দটা ও তার থেকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে হাঁটতে থাকে।
একটা পর্যায়ে সে তার বাড়িতে আলো জলতে দেখতে পেল। তখন তার মনে সব ভয়ে আস্তে আস্তে চলে গেল। কিন্তু সুমি যত তার বাড়ির দিকে এগোতে থাকে তত সেই পায়ের শব্দটা বিলীন হতে থাকে। এবং একটি তীক্ষ্ণ মৃদ্যু আলোর মতো কান্নার শব্দ তার কানে আসতে থাকে।
সুমি তখনই বুঝতে পারে যে তার দাদীর এই ইহ জগৎ থেকে ওপারে চলে গেছে। কিন্তু যাওয়ার আগে তার প্রিয় নাতনিকে তার বাড়িতে সুষ্ঠুভাবে পাহারা দিয়ে পৌছে দিয়ে গিয়েছে। হঠাৎ সুমি কি মনে করে পিছন ফিরে সালাম দিয়ে আবার তার বাড়ির দিকে হাঁটা দিলো।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.