"ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেমনই হোক না কেন,সাহায্য করার মানসিকতা যেন নষ্ট না হয়"

in Incredible India2 years ago

help-g9cad39cbb_1920.jpg

source
(উপকার করার মতো মানসিকতা সবসময় রাখা উচিৎ)

প্রিয়,
পাঠকগন,

আশাকরি আপনারা প্রত্যেকেই ভীষন ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটা খুব ভালো কেটেছে।

অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে কিন্তু অনেকটা বেশি ঠান্ডা পড়েছে। সত্যি বলতে গত তিন-চার দিন ঠান্ডা একেবারেই ছিলো না বললেই চলে।

কিন্তু আজ সকাল থেকে বেশ ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছিলো, আর সেই কারনেই সারাদিন ভালোই ঠান্ডা ছিলো। যাইহোক, বেশিরভাগ সময় আমি আপনাদের সাথে আমার রান্না করা কোনো রেসিপি ভাগ করে থাকি কিন্তু আজকে আমি সেটা করবো না।

কারন আজ আপনাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত ভালোলাগার অনুভূতি ভাগ করতে ইচ্ছা করছে। আমি আগেও আপনাদের জানিয়েছিলাম স্বভাবগত দিক থেকে আমি একটু চুপচাপ।

আর আমার এই চুপ থাকাটা অনেকেই অনেক ভাবে নিয়ে থাকে। অনেকে সেটা নিয়ে সমালোচনাও করে। আমরা যখন একটি অফিসে কাজ করি, তখন সেখানে বিভিন্ন জায়গার বিভিন্ন মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় হয়।

বিভিন্ন জায়গা থেকে আসার কারনে স্বাভাবিক ভাবেই সকলের মানসিকতাও ভিন্ন হয়। আমার অফিসেও তাই। কিন্তু আমার সাথে কারোর সামনাসামনি কোনো মনোমালিন্য না থাকলেও আমি জানি আমাকে বেশকিছু জন খুব একটা পছন্দ করে না।

সত্যি বলতে তাতে আমার বিশেষ কিছু যায় আসে না। কারন আমি জানি আমি আমার জায়গায় দাড়িয়ে কোনো অন্যায়কে প্রশয় দিতে পারবো না। সেটা করতে পারলে আমি হয়তো অন্য কারোর চোখে ভালো হতে পারতাম কিন্তু নিজের চোখে নীচে নেমে যেতাম।

এইরকম অনেক ছোট ছোট কারনে আমি অফিসে বেশ কয়েকজনের কাছে বড্ড অপ্রিয় ছিলাম। আমার সাথে কাজের সূত্রে যাদের বহু দিনের সম্পর্ক, যারা জানে মানুষ হিসাবে আমি কেমন, তারা অনেকেই আমাকে বলেছেন, যে আমাকে নিয়ে কিছু জনের সমালোচনা চলতেই থাকে।

আমি তাদের কথা শুনে হেসে উড়িয়ে দিই। আসলে আমি আমার জীবনে কাছের মানুষের কাছ থেকে এতো সমালোচনা পেয়েছি যে সহকর্মীদের সমালোচনায় আমার বিশেষ কিছু ফারাক পড়ে না।

যাইহোক, এইরকম পরিবেশের মধ্যে কাজ করতে আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমি অফিসে শুধুমাত্র নিজের কাজটি করতে যাই, অন্য কারোর কাছে নিজেকে ভালো প্রমাণ করতে যাই না।

কিন্তু আজকে হঠাৎ করে একজন সহকর্মীর ব্যবহার আমাকে অবাক করলো। অফিসের কিছু কাজে তিনি সমস্যায় পড়েন এবং আমি তাকে সাহায্য করি। যদিও তিনি আমার কাছে সাহায্য চাননি। কিন্তু আমার মনে হলো সমস্যার সমাধানটা যখন আমার জানা, তখন চুপ করে থাকাটা অন্যায়।

তাই নিজে থেকে এগিয়ে গিয়েই সমাধান করলাম, অবশ্য নিজেকে সবজান্তা প্রমাণ করতে নয়, মানবিকতার কারনে। আর এই কাজটি আমি কোনো কিছুর পাওয়ার প্রত্যাশায় করিনি, এটাও আমার অফিসের সকলেই জানেন।

যাইহোক, অফিস থেকে বেড়িয়ে বাসস্ট্যান্ডের দিকে এগোচ্ছি হঠাৎ পিছন থেকে কেউ ডাক দিলো। পিছন ফিরে দেখি আমার সেই সহকর্মী।

IMG_20221229_220044.jpg

(কাজের জায়গা আমাদের দ্বিতীয় পরিবার)

একটু লজ্জাবোধ নিয়ে এগিয়ে এলেন আমার দিকে। আমাকে ধন্যবাদ জানালেন। আমিও হেসে বললাম, ধন্যবাদ জানানোর কিছু নেই। আসলে কাজের অভিজ্ঞতা একটু বেশি থাকায় আমি সাহায্য করতে পারলাম, এই যা।

তিনি তখন নিজের মন থেকেই বললেন, আমার সম্পর্কে তার অনেক কিছু ধারণা ছিলো, আমার পিছনে অনেক সমালোচনা তিনি নিজেও করেছেন আমাকে নিয়ে। কিন্তু আজ তার অনেক ভুল ধারণা দূর হয়েছে। তিনি নিজে ভুল প্রমাণিত হয়েছেন নিজের কাছে।

জানিনা কেন আমার ভালো লাগলো। না আমার প্রশংসা করেছেন তার জন্য নয়। তিনি আমার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের ভুলটা নিজে নিজেই স্বীকার করলেন এটা দেখে। এটা কিন্তু সকলে পারে না। মনে মনে অনেকেই ভুল বুঝতে পারলেও, তা স্বীকার করতে পারে না বেশিরভাগ মানুষই।

বেশ ভালো লাগলো জানেন। কোনো মানুষ যদি আপনাকে উপর থেকে বিচার করে যদি ভুল বোঝে, মনের কোনো একটি কোণায় হয়তো একটু খারাপ লাগা থেকেই যায়, কিন্তু যখন সেটা দূর হয়ে যায় বেশ ভালো লাগে।

আমার জীবনে ভুল বোঝা মানুষের অভাব নেই,তাই তাদের মধ্যে কেউ যদি আমাকে একটু হলেও বুঝতে পারে তখন বেশ ভালো লাগে।

অনেক দিন ধরে কোনো বিষয়ে কোনো ভালো লাগা অনুভূত হয়নি আমার। ব্যক্তিগত জীবনেও বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। সেই সময় এইরকম সামান্য একটা ঘটনা মনকে ভালো করে দিলো।

আপনাদের জীবনে কখনো এমন কোনো মুহুর্ত এসেছে কিনা নিশ্চয়ই জানাবেন, সকলে ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।

Sort:  
Loading...