জামাই ষষ্ঠী পালনের কারণ
নমস্কার বন্ধুরা।কেমন আছেন সবাই।আজ আমি আপনাদের সাথে জামাই ষষ্ঠীর মাহাত্ম্য শেয়ার করব। কেন এই জামাই ষষ্ঠী পালন করা শুরু হয়। এর পিছনের গল্প আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব । আমার মা এর কাছ থেকে যেটুকু জানতে পেরেছি, তাই জানাচ্ছি।
আমি শুনেছি জামাইষষ্ঠী পেছনে অনেক পুরনো গল্প রয়েছে যা লোকমুখে প্রচলিত। হিন্দু ধর্মে দেবদেবীদের কথা তো আপনারা জানেনই ।আমাদের ধর্মের প্রচুর দেব দেবীর কথা বলা হয়েছে এবং তাদের রূপ বৈচিত্র্য নিয়েও অনেক কাহিনী রয়েছে ।তাদের মহিমার কথাও বই খুঁজলে নানান কাহিনী সমেত পাওয়া যায়। এর মধ্যেই ষষ্ঠী ঠাকুর বা ষষ্ঠী দেবী একজন ।ষষ্ঠী পুজো আমাদের মায়েরা করে থাকেন ।বাঙ্গালীদের মধ্যে এই প্রচলন সবথেকে বেশি।
অনেকেই হয়তো শীতলা ষষ্ঠীর নাম শুনতে পারেন। সেদিনও দেবী ষষ্ঠীর আরাধনা করা হয়। বলা হয় ষষ্ঠী দেবী হল সন্তান এর দেবী এবং সন্তান রক্ষা করার দেবী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বট , অশ্বত্থ বৃক্ষ মূলে এই দেবীর পূজা হয় ।বাড়ির বউরা তেল ,হলুদ, দই , ঘট ও বটের ডাল ইত্যাদি উপকরণের সাহায্যে ষষ্ঠী পুজো করে থাকে ।অনেকে দেবী-ষষ্ঠীকে দুর্গার আরেক রূপ হিসেবেও মেনে থাকে।
ছোটবেলা থেকে আমিও ষষ্ঠী দেবীর আরাধনা করতে দেখে এসেছি ।আমার আশেপাশে এবং বাড়িতেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাদের সন্তান রয়েছেন ,আমাদের মায়েরা ঠাকুমারা এই পূজা করে থাকেন। শীতলা ষষ্ঠী ভিন্ন দিনে পূজো হয়। আর জৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথিতে জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়।
জামাইষষ্ঠী নিয়েও অনেক ধরনের গল্প রয়েছে। এ প্রচলন যে বৈদিক যুগ থেকে, তা অনেক জায়গাতেও লেখা আছে। বলা হয়ে থাকে ,আগে মেয়েদের বিয়ের পর মেয়েরা বাপের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি পেত না। সেই সময় যৌতুক প্রথা এতটাই প্রবল ছিল যে ,যতদিন না পর্যন্ত মেয়ের বাবা যৌতুক সম্পন্ন করতে পারতো, ততদিন মেয়েকে বাড়িতে পাঠানো হত না। মা বাবার মন তার সন্তানদের জন্য ছটফট করত। এ কারণেই এই দিনটিকে ঠিক করা হয় যে দিনকে বলা হয় ,বাড়ির মায়েরা তার মেয়ে জামাইয়ের জন্য ঠাকুরের কাছে পূজা করে এবং মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ করে বাড়িতে আপ্যায়ন করে।
এরফলে মেয়েকেও তারা দেখতে পারতো, এই পুজো যেন এক পথে দুই কাজ। মেয়েকে অনেকদিন পর পাওয়া, সাথে মেয়ে জামাই - এর জন্য পুজো করা। এ ভাবেই নাকি এই নিয়ম শুরু হয়।
এছাড়াও এর পিছনে লৌকিক কিছু গল্প আছে । গল্পে বলা হয়েছে। একজন মহিলা, যিনি অত্যন্ত লোভী, মাছ চুরি করে খেয়ে বিড়ালের নামে দোষারোপ করে। এদিকে বিড়াল হল মা ষষ্ঠী দেবীর বাহন। তাই সেই মহিলা অভিশাপ পায় এবং তিনি যতবার সন্তান সম্ভবা হন ।ততবার সন্তান হারিয়ে ফেলেন। এরকম চলতে চলতে যখন মহিলা বুঝতে পারে তার ভুল। তখন দেবীর আরাধনা শুরু করে। দেবী তুষ্ট হয়ে তাকে সুস্থভাবে সন্তান প্রদান করে।এভাবেই নাকি ষষ্ঠী পুজো প্রচলিত হয়েছে।
কিন্তু এখনকার যুগে জামাইষষ্ঠী মাহাত্ম্য এটাই যে, দুই পরিবারের মেলবন্ধন, জামাই মেয়ের সাথে একটু সুন্দর মুহূর্ত কাটানো এবং শাশুড়ির হাতে জামাই আদর। আগেকার যুগে মেয়েদের উপর যে যৌতুকের কঠোরতা ছিল তা এ যুগে অতটা নেই। যে কারণে এই নিয়ম শুরু ,তা হয়তো নেই ,কিন্তু তাও জামাইষষ্ঠী এখনো পালন হয়ে আসে।
যাই হোক আপনাদের সাথে এই সমস্ত কিছু শেয়ার করতে পেরে বেশ ভালো লাগলো। আমার বাবাকে জামাইষষ্ঠীর দিনকে আমরা বাড়িতেই সুন্দর করে সকালবেলায় সাজিয়ে গুছিয়ে খেতে দিয়েছিলাম ।যেহেতু বাবা যেতে পারিনি এবারে মামার বাড়ি। আর প্ল্যান করেছিলাম পরে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে ভালো খাওয়া দাওয়া হবে।
আজি এখানেই শেষ করছি সকলে সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।
আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জামাইষষ্ঠী প্রচলিত হওয়ার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারলাম। আপনাদের ওখানে জামাইষষ্ঠী খুব সাড়ম্বরে পালন করা হয়।
এই জামাইষষ্ঠী পালনের গল্পটি সত্যি বেশ অন্যরকম। তবে একসাথে এত বেশি খাবার দেয়া হয় যে জামাই বাবুর নিশ্চয়ই বারোটা বেজে যায় এগুলো খেতে গিয়ে।
সব মিলিয়ে আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
Oh yes! We support ANY quality post and good comment
ANYWHERE and at ANYTIME
Curated by : @patjewell
জামাইষষ্ঠী হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বড় একটি অনুষ্ঠান। মেয়ে জামাইকে আপ্যায়ন করে শ্বশুড় বাড়িতে খাওয়ানো হয়। এর পেছনের ঘটনা জানা ছিল না। আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আগেকার দিনে যৌতুক প্রথা খুব পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় মেয়েকে দেখার দারুণ একটি বুদ্ধি বের করেছিলো। আমার অনেক বন্ধু আছে যারা এই জামাইষষ্ঠী খাওয়ার আশায় বসে থাকে। অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার পোস্ট থেকে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই আগেরকার যুগের অনেক রীতিনীতি ছিলো যেগুলো মানুষের চলার পথে অনেক বড় বাধা।যৌতুক প্রথার জন্য আগের যুগের অনেক নারী নিপীড়নের স্বীকার হয়েছে।যাই হোক আপনাদের বিশেষ ষষ্ঠী পুজোর মাধ্যমে অবহেলিত মেয়েটি বাবার বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে।এভাবেই টিকে থাকুক পৃথীবির হাজারো মানুষের আন্তরিকতা। ধন্যবাদ জানাই সুন্দর বিষয়টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জামাইষষ্ঠী কেন পালন করা হয়ে থাকে আজকে আপনি আমাদের সাথে সে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেছেন। একটা পরিবারের মধ্যে বন্ধন তৈরি করার জন্য এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়ে থাকে। তবে আমার মনে হয় আপনারা সাধারণত শ্বশুরবাড়িতে গিয়েই অনুষ্ঠান পালন করা হয়। যতটুকু আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।