একটি ঈগল পাখির আর্ট

in Incredible India4 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আমি অনেকদিন পর আজকে ভাবলাম আপনাদের সাথে আমার একটা ড্রইং শেয়ার করি। আমি রান্না শেয়ার করে থাকি। আগে যেমন গান ছবি আঁকা প্রচন্ড পরিমাণে শেয়ার করতাম সেটা এখন কম হয়ে গেছে কাজের চাপে। ছবি আঁকলেও সেই ছবিগুলোকে আমি ক্যামেরাবন্দি করতে পারিনা। আসলে যখন মন হয় তখন কাজ করতে বসি ,তাই অতো খেয়াল থাকে না। আবার সব সময় গান রেকর্ড করার ও সময় হয়ে ওঠেনা।

20241016_191400.jpg

চারিদিকে এত চাপ নিয়ে বসে থাকলে মাথা সবসময় নানান তালে ব্যস্ত থাকে। যেটুকু নিজের মতন করে সময় পাই, সেই সময়টুকুতে গান অথবা ছবি আঁকতে বসলে মনে হয় সেগুলো নিজের জন্যই থাক। সেগুলোও কোন কাজের পারপাসে ব্যবহার করব এই মানসিকতা নিয়ে কখনোই কাজ করা হয়ে ওঠেনা। আর এই কারণে ছবি তুলতে পারি না।

এই ছবিটার ক্ষেত্রেও একটা গল্প আছে । আমি ছোটবেলা থেকেই একটি জিনিসে বিশ্বাসী। যখন আমাদের মন ভালো না থাকে আমার মনে হয় ওই সময় আমরা যদি কিছু কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকি তাহলে আমাদের মন ঠিক থাকে। অথবা ডাইভার্ট হয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রে আমি খেয়াল করে দেখেছি আমার মন ভালো না থাকলে আমি যদি ছবি আঁকতে বসি, অথবা হাতের কোন কাজ করি, অথবা গান করি, কিংবা কবিতা লিখি, কাজটা করার পর আমার মন কিন্তু খুব ভালো হয়ে যায়। বরং কাজটা করা হয়ে গেলে মনে একটা আলাদা এনার্জি এবং শান্তি পাই।

যে সমস্ত কিছু ভেবে খুব বেশি চাপ লাগে, এই সমস্ত কাজ করার পর চাপটা অনেকটা কমে যায়। কিছুদিন আগেও যখন মন একদম ভালো ছিল না। চারিদিকে এত ব্যস্ত ছিলাম, সাথেই মাথায় এত প্রেসার পড়ছিল। আমি ভাবলাম আমার ছবি আঁকা উচিত। সন্ধ্যাবেলায় সমস্ত কাজ বাদ দিয়ে তাই ছবি আঁকতে বসে গেলাম। কিছুটা মন হালকা করার জন্য। এতে করে হয়তো আমার কাজের ক্ষতি হলো। কিন্তু আমার মন অনেকটা ভালো হয়ে গেল।।

আমি যে ছবিটি আজকে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করছি ,সেই ছবিটা অনেকটা মান্ডালা আর্টের মত। অনেক ধৈর্য নিয়ে এই ছবিগুলো আঁকতে হয়। আর এই ধৈর্যের কারণেই হয়তো এই ছবিগুলি আঁকার পর আমাদের মনে একটা শান্তি কাজ করে।। এ ধরনের সমস্ত ছবি ট্রিটমেন্ট এর মত কাজ করে। আমি খেয়াল করে দেখেছি ছবিটা আঁকা শুরু হয়ে যাওয়ার পর, শেষ করার একটা তাগিদ লেগে থাকে।

আমি আপনাদের সকলকে সাজেস্ট করবো, আপনারাও আপনাদের মন খারাপের সময়গুলোতে অথবা অত্যাধিক প্রেসার এর সময়গুলোতে এরকম কাজ করে দেখতে পারেন। যাইহোক আমি ধাপে ধাপে আপনাদের সকলের সাথে ছবিগুলো শেয়ার করে নিচ্ছি। কিভাবে পর পর আমি এই এত সুন্দর একটা আর্ট তৈরি করে নিলাম, তার পুরো প্রসেসটা আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWYkgDRGimVUej6BECg7qRtYRA82QwrcYx6p28RoC2tjvKtWa2ZrDcQTNKTxfBYXGiFwkGFvBXpwcxFEXrPanqC.jpeg

20241018_140801.jpg

প্রথমেই দেখুন, আমি পেন্সিলের সাহায্যে আমার ড্রইং নোটবুকে পাখির মুখের অবয়ব তৈরি করছি।

20241018_140919.jpg

ঈগল পাখির মুখ তৈরি হয়ে গেছে। সাথে অ্যাবস্ট্রাক্ট ফর্ম এর জন্য আমি ওর শরীরের অংশগুলোকে একটু অন্যভাবে একে নিচ্ছি।

20241016_164123.jpg

পেন্সিলের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ছবিটা ঠিক এরকম দেখতে লাগছিল।

20241018_141018.jpg

এবারে আমি ব্যবহার করছি হাইটেক পেন এবং একটি কালোজেল পেন। প্রথমেই পাখির চোখের জায়গাটুকু এঁকে নিলাম।

20241018_141120.jpg

এবার পুরো বডিটাই কালো কালি দিয়ে পেন্সিলের কাজগুলোকে পুনরায় কভার করে নিচ্ছি।

20241018_141232.jpg

এই জায়গায় আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমি পাখির মুখের জায়গায় ডিজাইন করা শুরু করেছি। মন মত আমি ডিজাইন করে নিচ্ছি।

20241016_183924.jpg

মুখের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর ছবিটি এরকম দেখতে লাগছিল

20241018_141335.jpg

এবারে আমি পাখির শরীরের প্রত্যেকটি পালকের আলাদা আলাদা করে ডিজাইন করা শুরু করব।

20241018_141500.jpg

পালক গুলোকে যাতে পালকের মতনই দেখতে লাগে তাই ডিজাইন টাও সেরকম হওয়া উচিত। আলপনার মতন ডিজাইন করলে কিন্তু চলবে না।

20241018_141722.jpg

আপনারা নিজেরাই দেখুন পাখির প্রত্যেকটা পালকে কিভাবে আমি ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইন করে নিয়েছি। একটা পালকের সাথে আরেকটি পালকের পার্থক্য আপনারা ভালো করে দেখলেই বুঝতে পারবেন।

ফাইনাল লুক

20241016_191419.jpg

ধৈর্য ধরে আপনি যে কাজই করবেন ,সে কাজ অনেক সুন্দর এবং ভালো হবে। আমার মনে হয় আমার এই ছবিটি ও সেটার একটি প্রমাণ। ধৈর্য ধরে আমি চুপচাপ একটা না যেভাবে কাজটা করেছি, তাতে এত সুন্দর একটা আর্ট অবশেষে তৈরি হয়েছে। পুরো কাজটা করার পর ছবিটি দেখে আমার অত্যন্ত ভালো লাগছিল। আমার ইচ্ছা আছে এই ছবিটি ফ্রেমে বাঁধাই করে নেওয়ার।

আশা করছি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। সকলে ভাল থাকবেন। মন ভালো না থাকলে অবশ্যই নিজের পছন্দমত কাজগুলো করবেন।

Sort:  
Loading...
 4 days ago 

যখন আমাদের মন ভালো না থাকে আমার মনে হয় ওই সময় আমরা যদি কিছু কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকি তাহলে আমাদের মন ঠিক থাকে।

উপরিউক্ত কথাগুলোতে আমিও বিশ্বাসী, আর নিজের দৈনন্দিন জীবনে আমিও ঠিক এটাই করে থাকি, তবে তোমার মতন যেহেতু আমার এত গুণ নেই! তাই আমি যেটা করি সেটা হলো, হয় নেল পেইন্ট করি নয়তো বই পড়ি!

এই সময় গান শুনলে আমার মন বেশি খারাপ করে, সব আনন্দের গানেও দুঃখের গন্ধ পাই।

জীবন অতিবাহিত করতে গেলে আসলে মিশেল অনুভূতির মধ্যে দিয়ে সকলকেই যেতে হয়, আর সত্যি বলতে এখন কাউকে বিশ্বাস করে মনের অনুভূতি ভাগ করে নেওয়াও চাপের, সম্পর্কে চিড় ধরতে না ধরতেই সব রঙ বদলে ফেলে!

তুমিও ভুক্তভুগী তাই বললাম। তবে আজকাল আমার বয় ফ্রেন্ড ভালো আঁকা উপহার দিচ্ছে না এটা নিয়ে আমার মনে একটা চাপের সৃষ্টি হয়েছে, তবে আজকে তোমার আঁকা সেই চাপকে লাঘব করতে সহায়ক সেটা অনস্বীকার্য।

এইভাবে ভবিষ্যতেও তোমার প্রতিভার বিকাশ হোক এই কামনা করি।

Loading...
 3 days ago 

এটা একদম ঠিক কথা যদি মন খারাপ থাকে তাহলে যে কোনো একটি কাজের মধ্যে থাকলে মন টি ভালো হয়ে যাই। যে কোন একটি কাজের মধ্যে থাকলে যে বিষয় নিয়ে মন খারাপ হয়ে যায় সেই বিষয় মাথা থেকে চলে যায় তাই তো মন ভালো হয়ে যায়। এবং আপনার প্রশংসা করতে হয় আপনার গাছের ছবি আঁকানো আমি কম বেশি দেখেছি। এবং আপনার কবিতাও অনেক পড়েছি পাশা পাশি গান শুনেছি। আপনি সব দিক থেকে অনেক পারদর্শী এবং আজকে এই সুন্দর একটি ঈগলের ছবি উপহার দিয়েছেন আমাদেরকে। এই ছবিটি দেখতে অসম্ভব সুন্দর হয়েছে ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি শেয়ার করার জন্য।