এক পাউন্ড কেক রেসিপি

in Incredible India17 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি বেশ অনেকদিন পর আপনাদের সামনে নিয়ে হাজির হয়েছি একটা কেকের রেসিপি। কেক তৈরি করতে আপনারা আমাকে অনেক পোস্টে দেখেছেন। যারা আমার পোস্ট প্রত্যেকদিন ফলো করেন। তারা ভালো করে জানবেন যে আমি কেক তৈরি করতে কত ভালোবাসি। এর সাথেই কেক জাতীয় জিনিস আমার কতটা পছন্দের তাও আমি প্রত্যেক পোস্টে উল্লেখ করি।

আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। ওর নাম সহেলি। ও বয়সে আমার থেকে বড়। তাই আমি ওকে দিদি বলে ডাকি। দিদি কোনদিনও আমার হাতের কেক খায়নি। গল্পে গল্পে একদিন আমার কেক তৈরি করার কথা শুনতেই, ও আবদার রাখল যখনই আমি কেক তৈরি করি যেন ওকে দিই। একদিন সময় করে তাই ওর জন্য কেক বানিয়েছিলাম।

20241003_134907.jpg

দিদি ম্যাংগো ফ্লেভারের কেক সবথেকে বেশি পছন্দ করে। এই ব্যাপারটা আমি খেয়াল করেছিলাম যখনই ওকে আইসক্রিমের দোকানে ম্যাংগো ফ্লেভারের আইসক্রিম খেতে দেখতাম। ম্যাংগো ফ্লেভার মোটামুটি আমারও পছন্দ। তাই ওর জন্য একদিন সময় নিয়ে কেক তৈরি করা শুরু করলাম।

এত সুন্দর একটা কেক তৈরি করছি আর আপনাদের সাথে শেয়ার করব না সেটা একদমই হয় না।। তাই আমি খুব সুন্দর করে ধাপে ধাপে ছবিগুলি তুলে রেখেছিলাম আর এর সাথেও করে রেখেছিলাম একটা ভিডিও। আপনারা বুঝতে না পারলে ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন। কত সহজে কেকটা এত সুন্দর ভাবে তৈরি হয়ে গেছে তার ভিডিওটিতে পুরোপুরি দেখা যাচ্ছে।

লিংক

এবার প্রথমেই আপনাদের সাথে উপকরণগুলো শেয়ার করে নিন। কেক তৈরি করতে যে উপকার গুলো প্রত্যেকবার ব্যবহার হয় সেগুলোই এবারে ব্যবহার হবে। পরিমান ঠিকঠাক রাখলে কেক অবশ্যই ঠিকঠাক ভাবে হবে। আপনারা ভিডিওর পাশাপাশি নিচের লিস্টটা যেখানে উপকরণ লেখা আছে সেটা ফলো রাখবেন।

উপকরণ
নংসামগ্রীপরিমাণ
ময়দা১২৫ গ্রাম
চিনির গুঁড়ো১০০ গ্রাম
সাদা তেল৫ টেবিলস্পুন
বেকিং পাউডারদেড় টেবিল স্পুন
বেকিং সোডা১/৪ থ টিসপুন
ক্রিমপরিমাণ মতো
চিনির গুঁড়োপরিমাণ মত
ম্যাংগো সিরাপপরিমাণ মতো
চিনি সিরাপপরিমাণ মত
১০দুধপরিমাণ মতো

প্রথম ধাপ

প্রথমে একটি পাত্রে আমি ময়দা, চিনির গুঁড়, সাদা তেল আর অল্প করে দুধ নিয়ে নিচ্ছি।

20241004_120339.jpg

দ্বিতীয় ধাপ

কিছুক্ষণ ভালো করে মিশিয়ে নেওয়ার পর দিয়ে দেবো বেকিং পাউডার ,বেকিং সোডা। ব্যটার একটু পাতলা করে নেওয়ার জন্য এতে দিয়ে দিচ্ছি আরেকটু দুধ। দুধের পরিমাণটা আপনারা ভিডিওতে লক্ষ্য করবেন।

20241004_120410.jpg

তৃতীয় ধাপ

ব্যটার তৈরি হয়ে গেলে একটা এক পাউন্ডের কেক টিন নেব। টিনের চারিপাশে তেল ছড়িয়ে দেব। ভালো করে মাখিয়ে নেওয়ার পর বাটার পেপার বসিয়ে দেব। তারপর সমস্ত বেটারটা ঢেলে দেব।

20241004_120609.jpg

চতুর্থ ধাপ

একটা কড়াই পাঁচ মিনিটের জন্য প্রি-হিট করে নেওয়ার পর। তাতে এই পাত্রটি বসিয়ে দেব। ঢাকনা লাগিয়ে দেওয়ার পরে ৪৫ মিনিট বেক হতে রেখে দেব।

20241004_120638.jpg

পঞ্চম ধাপ

প্রায় ৪৫ মিনিট পর যখন কেক বেক হয়ে যাবে। একটা কাঠি দিয়ে কেকটা চেক করে নিয়ে নামিয়ে নেব।

20241004_120718.jpg

ষষ্ঠ ধাপ

কেক ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর কেকটাকে তিন ভাগে কেটে নেব।

Screenshot_20241004_120104_Gallery.jpg

সপ্তম ধাপ

কেকের পার্ট গুলোকে একটা সাইডে সরিয়ে রেখে ক্রিম তৈরি করা শুরু করব। আমি এখানে দেড় কাপ মতো ক্রিম নিয়েছি। তারপরে আমার ইলেকট্রিক হ্যান্ডউইকচারের সাহায্যে ক্রিম টাকে উইপ করা শুরু করলাম। এরমধ্যেই আপনি পরিমাণ মতো চিনির গুরু অ্যাড করতে পারেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত ক্রিম পুরোপুরি উইপ হচ্ছে, হাইস্পিডে ততক্ষণ ইলেকট্রিক মিক্সচার টা চালিয়ে যেতে হবে।

20241004_120733.jpg

অষ্টম ধাপ

একটা কেক বোর্ডের ওপর কিছুটা পরিমাণ ক্রিম লাগিয়ে নিয়ে কেকের একটা পার্ট বসিয়ে দিচ্ছি। তার ওপর দিয়ে দেবো সুগার সিরাপ। এটা কেকটা অনেকটা নরম হবে। এরপর চারিদিকে বানিয়ে রাখা ক্রিমটা স্প্রেড করে দিচ্ছি। এরপর দিয়ে দিচ্ছি ম্যাংগো সিরাপ।

20241004_120833.jpg

নবম ধাপ

পরপর ধাপে ধাপে প্রত্যেকটা কেক পার্ট বসিয়ে নিয়ে, ঠিক এইভাবে কেকের ভেতরের অংশটা কভার করে নেব।

20241004_120858.jpg

দশম ধাপ

এরপর ওই সাদা ক্রিমের সাহায্যে পুরো কেক তাকে কভার করে নেব চারিদিক দিয়ে।

Screenshot_20241004_120200_Gallery.jpg

একাদশ ধাপ

এরপর ক্রিমের সাথে একটু হলুদ ফুড কালার মিশিয়ে নিয়ে। আমি কেকের উপরের অংশে কিছুটা স্প্রেড করে নিয়েছি। স্প্যাচুলার সাহায্যে খুব ভালোভাবে কেক তাকে সুন্দর একটা সেপ দিয়েছি। তারপর নিজের পছন্দমত নজেলের সাহায্যে কেক ডিজাইন করেছি।

20241004_120946.jpg

রেডি

সবশেষে দিদির জন্য বানানো কেক বলে, নীল রঙের ক্রিম দিয়ে ওপরে দিদি কথাটা লিখে দিয়েছি। কেকের ওপর স্প্রিঙ্কেল ছড়িয়ে দিয়েছি। আর এভাবে তৈরি হয়ে গেছে, দারুন একটা কেক।

20241003_134905.jpg

আশা করছি আমার আজকের কি পোস্ট আপনাদের সকলের ভালো লাগবে। যাদের যাদের লোভ লাগছে, তারা ঠিক এইভাবে বাড়িতে বানানোর চেষ্টা করুন। একদম অবিকল এরকমই কেক হবে। ম্যাংগো ফ্লেভার এর একটি যে অসাধারণ খেতে হয়েছিল তা আমার দিদি আর দিদির বাড়ির সবাই আমাকে ফোন করে অনেকবার জানিয়েছে। শুধু তাই নয় আমার সাথে যতবার দেখা হয় ,এখনো অব্দি ওরা এই কেকের সুনাম করে।

Sort:  
Loading...
 17 days ago 

কেক টা দেখে কিন্তু আমার লোভ লেগে যাচ্ছিলো,ভাবছিলাম আপনার বাসাটা আমার বাসা কাছাকাছি হলে মাঝেমধ্যে 2, 3 টা কে অর্ডার করা যেতো,, তবে সে গুরে বালি
তবে মনকে সান্ত্বনা দিলাম আপনার রেসিপিটা শিখে নিয়ে, আজ আপনার কেক তৈরি রেসিপি টা সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন যেটা দেখে এবং শিখতে পেরে ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।।

Loading...
 16 days ago 

Definitely so yummy and alluring tasty cake recipe. You make perfectly. Thanks for sharing friend.

 12 days ago 

ঈশা তোকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি কেকে রেসিপি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য। আমি তো অবাক হয়ে যাচ্ছি তোর রান্নার স্কিল দেখে। যে কোন রান্নার ভিডিও বা পোস্ট শেয়ার করলেই আমি সেই পুরনো ঈশার কথা ভাবি যে কিনা চা ছাড়া আর কিছুটি রান্না করতে পারত না। যদিও তখন তুই অনেকটাই ছোট ছিলিস। তাও সেই ঈশা আর এই ঈশার আকাশ পাতাল তফাৎ।

আর জীবনে ভালো পরিবর্তন থাকা প্রয়োজন। আমি খুব খুশি তুই এত সুন্দর ভাবে রেসিপিটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিস। আমি পার্সোনালি কখনো কেক বানাইনি বা সরাসরি কেক বানানো দেখিওনি। তবে তোর বেশ কিছু কেকের রেসিপি দেখে আমার মনে মনে একটা সুপ্ত বাসনা জেগেছে যে আমার হবু বরের জন্মদিনের একখান কেক যদি বানিয়ে দেওয়া যায়। যদিও আদৌ সেটা কেক হবে কিনা আমার জানা নেই তবে কয়েকদিন পর পর তো সুন্দর লোভনীয় কে কে রেসিপি দিচ্ছিস যে সেটা দেখে সুপ্ত বাসনাটা মাঝে মাঝেই সাড়া দিয়ে উঠছে।

কেক বানাতে কি কি লাগে এই বিষয়েও আমার তেমন কোন জ্ঞান ছিল না। তবে তোর পোস্ট দেখে সেই বিষয়ে কারোর কোন সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই। খুব সুন্দর ভাবে ডিটেলসে উপকরণ গুলো তুই শেয়ার করেছিস।

ময়দা, চিনি গুঁড়ো, সাদা তেল, দুধ এগুলোতো সহজে পাওয়া যায়। রইল বাকি উপকরণগুলো, সেগুলো বাজার থেকে কিনে আনলেই সহজে বাড়িতে এত সুন্দর একটা কেক বানিয়ে ফেলা যায়।

আর বাইরের কোন খাবার ই পুষ্টিকর হয় না। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে গেলে বাড়িতে মানিয়ে খাওয়ার চেয়ে দ্বিতীয় কোন উপায় নেই। আর তাছাড়া কাছের মানুষদের জন্মদিনে এত সুন্দর একটা কেক বানিয়ে তাকে সারপ্রাইজ দেওয়াটাও বেশ মজার। কাছের মানুষেরা নিজের হাতে তৈরি জিনিস দিলে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়। তাই তোর এই রেসিপিটা দেখে অনেকেই অনায়াসে বাড়িতে সুন্দর একটা কেক বানিয়ে ফেলতে পারে।

আর শুধু কেক বানিয়ে দিদিদের খাওয়ালেই হবে না, এই পিংকি দিদি কেউ খাওয়াতে হবে। যদিও খানিকটা টেস্ট করেছিলাম। সত্যি দারুণ বানিয়েছিলিস। তাহলে এরপর আবার কোন দিন কেক খাওয়ার সুযোগ হচ্ছে আমাদের?