জন্মদিনের মুহূর্ত - দ্বিতীয় পর্ব

in Incredible India2 days ago

নমস্কার।আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। গতদিন যেখানে থেমেছিলাম।আজ সেখান থেকেই লিখছি।
এবার সকাল বেলায় চলে এলো খাবার। খাবারে ছিল লুচি, আলুর দম আর মিষ্টি। মিষ্টি মানেই শীতকালে খেজুরের গুড়ের সন্দেশ। আমরা সবাই মিলে এক এক করে খেতে বসে গেলাম।

Screenshot_20241230_101439_Gallery.jpg

প্রথমেই বাবা, দুই জেঠু আর ঈশানকে খেতে বসিয়ে দিয়েছিলাম। কারণ ওরা সকাল থেকে না খেয়ে রয়েছে। স্বাভাবিক ওদের এখন অনেক বয়স হয়েছে, এতটা খাটাখাটনি সহ্য হয় না। যাই হোক ওদের খাওয়া হয়ে গেলে আমি আর ওর ফ্যামিলি মিলে সবাই বসে পড়লাম।।

20250104_190353.jpg

20241229_113535.jpg

লুচি আলুর দম দুর্দান্ত রান্না হয়েছিল। সাথে সন্দেশ ছিল দারুণ খেতে। আমাদের খাওয়া হয়ে গেলে মা আর জেঠিন খেয়ে নিল। তারপরে আবার ফটো সেশন চললো। দাদা বৌদির অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে দিলাম। সাথে দুই ভাইয়ের ছবি তুলে দিলাম।

20241229_124428.jpg

20241229_132513.jpg

তারপর দুই ভাই ছুটল পুকুরের দিকে। আসলে ওদের পুকুরে মাছ চাষ করা হয়। এবার মাঝেমধ্যে সখ করে মাছ ধরাও যায়। এই সূত্রে ওরাই আমরা যাতে মাছ ধরতে পারি, সেজন্য বড়শি নিয়ে গিয়েছিল। আর ওরা দুজন মিলে চেয়ার পেতে বসে পড়ল। মাছ ধরবে বলে। আমি যেহেতু জল দেখে ভীষণ ভয় পাই ।সাঁতার জানিনা, তাই জলের বেশি কাছাকাছি যাচ্ছিলাম না। ওরা দুজন মিলেই মাছের খাবার আর ময়দার গোলা নিয়ে বসে পড়েছিল।

1000185810.jpg

যাইহোক এদিকে রান্নাবান্না জোড় কদমে চলছিল। সকাল থেকে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। আমি ভেবে যাচ্ছিলাম না অত রান্না কি করে দুই তিন ঘন্টার মধ্যে হবে। কিন্তু রাধুনীরা বারবার বলছিল যে আরামসে হয়ে যাবে। আসলে যাদের প্রফেশনাল রান্না করা অভ্যাস আছে তাদের বেশি সময় লাগে না।

আর মাঝেমধ্যে আমার বাবা আর জেঠু মাছ ধরার দিকে যাচ্ছে। এসব করতে করতে সময় কেটে যাচ্ছিল। আর আমরা মেয়েরা নানান গল্প আড্ডাতে ব্যস্ত ছিলাম। এরপরে শুরু হয়ে গেল নৌকা বিহার।

20241229_132230.jpg

ওর বাবা নৌকা চালাতে পারে। ওর বাবার সাথে আমার ভাই এক দুইবার নৌপথে ঘুরেও আসলো পুকুরে। তারপর আবার আমার জেঠু খুব উৎসাহের সাথে নিজে নৌকা চালাবে বলে ,নৌকা নিয়ে নামল পুকুরে। ঈশান জেঠুর সাথেও একবার নৌকাতে উঠে পড়ল।

20241229_150116.jpg

IMG-20241231-WA0030.jpg

এভাবে পরপর সবাই মিলে একবার একবার করে নৌকা চড়া হয়েছে।। কিন্তু থেকে গেলাম আমি একা। আমাকে বাবা কিছুতেই নৌকোতে উঠতে দেয় না। যেহেতু আমি সাঁতার জানিনা। বাবা খুব আমাকে নিয়ে চিন্তা করে। তাই জলে নামতেই দেয় না।। আমার মন টন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। কারণ সবাই নৌকাতে উঠে নানান রকম ছবি তুলছিল।

20241229_140934.jpg

অবশেষে আমার মন খারাপ দেখে মা আর জেঠিন মিলে আমাকে টেনে টেনে নিয়ে গেল। ওর বাবা মা আর আমি নৌকোতে উঠলাম। ওঠার সময় যতটা না ভয় লাগছিল ,উঠে সবথেকে বেশি ভয় লাগছিল। কারণ স্বাভাবিক একটু দুলছিল নৌকোটা ।

20241229_143207.jpg

তবে ওর বাবা খুব ভালোভাবে চালাচ্ছিল বলে ভয় লাগছিল না। ওর মা আমার অনেক ছবি তুলে দিল। আর ওদিকে চিন্তার চোটে ও আর আমার মা-বাবা পুকুরের পাড়ে দাড়িয়ে ছিল। খুবই ভালো লাগলো নৌকো চড়ে। সবাই মিলে বেশ মজা করলাম। এই ছোটখাটো আনন্দ গুলো অনেক।

20241229_145450.jpg

আমার মা যখন নৌকোতে উঠল ,তখন ওরা দুই ভাই মিলে নৌকা চালাচ্ছিল। সবার কোন ভয় নেই কারণ সবাই সাতার জানে। সমস্যা আমাকে নিয়েই ছিল। ছোটবেলাতে যদি সাঁতার শিখে রাখতাম, তাহলেই সমস্যাগুলো হতো না। এটা নিয়ে আফসোস হয়। তবে এখন অব্দি আমার জলে নামতে খুবই ভয় লাগে। কেমন যেন মনে হয় ,কেউ যদি জলের ভেতর থেকে পা ধরে টানে। তারপর আরো নানান ধরনের ভয় কাজ করে।

Screenshot_20241230_101425_Gallery.jpg

যাই হোক পরের দিন কেক কাটিং এর পর্ব নিয়ে আলোচনা করব। আজকে এখানে শেষ করছি।

Sort:  
Loading...
Loading...

@tipu curate

;) Holisss...

--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.

 2 days ago 

ছবি দেখেই মনে হচ্ছে জায়গাটা কতটা সুন্দর। এরকম জায়গায় পিকনিক করতে সকলেরই খুব ভালো লাগবে। এবছরের মনে হয় তোমার সেরা জন্মদিন পালন করা হয়েছিল। নৌকা চড়ে বেশ ভালোই ঘুরে বেড়িয়েছো। পুকুর দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। এছাড়াও চারিদিকে সরষের ফুল ফুটে রয়েছে দেখতে অসাধারণ লাগছে।

 2 days ago 

আপনার নৌকো চড়ার অভিজ্ঞতা আর পুরো দিনের আনন্দের বর্ণনা পড়ে দারুণ লাগলো। ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই জীবনের বড় আনন্দ দেয়, আর সেগুলো পরিবারের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মজাই আলাদা। নৌকোতে ওঠার ভয় সত্ত্বেও যেভাবে আপনার পরিবার আপনাকে সাহস জোগাল, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সাঁতার না জানার আফসোস থাকলেও, এই অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে মনে রাখার মতো। গল্পগুলো আর ছবি বর্ণনা এত সুন্দরভাবে করা, যেন সবকিছু চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। আশা করি, ভবিষ্যতে এমন আরও অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটাবেন!

 2 days ago 

প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই, এত সুন্দর একটি আনন্দ মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আমার কাছে মনে হয় , পৃথিবীর সবচাইতে অসহায় স্থান হলো মাঝ নদীতে একা থাকা! আমিও সাঁতার তেমন ভালো পারি না। কিন্তু আমাদের সবারই ভালোভাবে সাঁতার শেখা উচিত বলা যায় না কখন দরকার হয়। আপনার পোস্টটি পরে জানতে পারলাম। আপনি নৌকায় চড়তে অনেক ভালোবাসা, আপনার জন্য দোয়া রইল দিদি,আপনি যেন এইভাবে সবসময় হাসিখুশি থাকেন। ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।