খাওয়া দাওয়া
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। তবে আমার শরীরটা ভালো নেই। হয়তো ওয়েদারটা চেঞ্জ হচ্ছে, তাই শরীরটাও খারাপ হয়ে গেছে, ঠান্ডা গরম লেগে যাওয়া যাকে বলে। তাই জ্বর এসেছে, কিছুদিন খুব দৌড়াদৌড়ি গেছে আমার উপর দিয়ে। তারপর জ্বর বা কোন একটা সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক ,সেটা আমি বুঝতে পারছি ।
যাই হোক শরীর আছে। অসুস্থ আমরা হই। আবার ঠিক হয়ে যাব ।গতকাল আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছিলাম যে জামাইষষ্ঠীতে বাবা ,জেঠু শ্বশুর বাড়ি যেতে পারেনি বলে ,আমরা সবাই জেঠু এবং বাবার জন্য প্ল্যান করেছিলাম রেস্টুরেন্টে ।রেস্টুরেন্টে যাওয়ার সমস্ত কিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। বাকি কথা আজকে বলতে এসেছি।
রেস্টুরেন্টটা যখন শুরু হয় তখন কয়েকটা বিচুলি চালা দিয়ে ঘর করে শুরু হয়েছিল ।তারপরে এখন যা রেস্টুরেন্টের অবস্থা। চোখ জুড়িয়ে যাবে।রেস্টুরেন্টে কতগুলো পার্ট তৈরি হয়েছে ।তার মধ্যে বসুধা জনপ্রিয় বসুধাতে শুধু বাঙালির সমস্ত আইটেম পাওয়া যায় খাবারের। এছাড়াও আরো বড় বড় তিনটে হল আছে। তিনটে তিন রকমের। ওখানে সব রকমের খাবার পাওয়া যায়। অনুষ্ঠান পারপাসে ভাড়া দেওয়া হয় রেস্টুরেন্টটা। ওদের আলাদা করে সেই জায়গাও রয়েছে।
আসলে রেস্টুরেন্টের প্রপার্টিটা এতটাই বড় যে ওরা ইচ্ছামতন রেস্টুরেন্টটাকে সাজাতে পারছে। আমার নিজেরও ভীষণ ইচ্ছা ভবিষ্যতে রেস্টুরেন্ট খোলার। তবে ভগবান কি করবেন জানিনা। যদি ভগবান সাথে থাকেন অবশ্যই এই আশা পূর্ণ হবে।
আমরা রেস্টুরেন্টে গিয়ে এই প্রথমে অর্ডার করে নিয়েছিলাম ফিস ফ্রাই ,চিকেন ললিপপ স্টার্টারের জন্য ।তারপরে মেইন কোর্স এ আমরা নিয়েছিলাম বাটার নান , মটন বিরিয়ানি ,বাসন্তী পোলাও, বাটার পনির কুলচা , মটন কষা এবং চিকেন কষা ।
তারপরে সমস্ত মেইন কোর্স শেষ হয়ে যাওয়ার পরে,ডেজার্ট এর জন্য আইসক্রিম নিয়েছিলাম চকলেট আইসক্রিম আর ম্যাংগো আইসক্রিম ।সাথে বাবা জেঠু মাসালা সোডা খাবে, তাই সেটা অর্ডার করা হয়েছিল।
আমরা দুই ফ্যামিলি বেশ অনেকদিন পরে একসাথে হয়েছিলাম ।সবাইকে একসাথে পাওয়াটাই মুশকিল হয়ে যায়। যে যার নিজের কাছে এত ব্যস্ত থাকে। একজন থাকে তো আরেক জন থাকে না ,সেদিন সময় করে সবাই মিলে যেতে পেরেছি এটাই অনেক। ওখানে গিয়ে খিদেতে আমার তো পেট ফেটে যাচ্ছিল ।কারণ সবারই খুব খিদে পেয়ে গেছিল। তারপর দেরি করে গিয়েছি। বাবা এবং জেঠুর কাজ শেষ হতে দেরি হয়েছিল ,তাই রেস্টুরেন্টে পৌঁছাতে দেরি হয়ে গেছে।
যাইহোক মেন কোর্সের আগে স্টার্টারগুলো ওরা একটু দেরি করে দিল ।তবে প্রত্যেকটা জিনিস খুব ভালো ছিল এবং ফ্রেশ ছিল ।রেস্টুরেন্ট টার বেশ নাম রয়েছে এদিকে। বেশ কয়েক বছর খুবই জনপ্রিয় এই রেস্টুরেন্ট - মাদারস্ হাট।
আমি বাসন্তী পোলাও অল্প করে খেয়েছি। কুলচা একটা পিসে চারটে পার্ট করে দেয়, আমি তার দুটো খেয়েছি। আমি দুটি চিকেন ,এক পিস মাটন খেয়েছি। আর কিছুই না ।মেন কোর্সের আগে ফিস ফিঙ্গার আর চিকেন ললিপপ খেয়েছিলাম একটা করে। আর শেষে চকলেট আইসক্রিমটা আমি নিজের জন্য নিয়েছিলাম। আমার মাসালা সোডা খেতে অতটা ভালো লাগে না ,আর খাবার পরে মিষ্টি জিনিস খেতে আমার ভীষণ পছন্দ।
আমার বাবা জেঠু বাটার নান এর সাথে মাটন খেতে খুব ভালোবাসে। তাই ওরা সেটাই ভালোভাবে খেয়েছে। এটাই অনেক ।আমরা চেয়েছিলাম দুপুরবেলায় ওদের জন্য থালি বলবো। জামাইষষ্ঠীর স্পেশাল থালি ওরা শুরু করেছিল এবং রেখেছিল তিন দিনের জন্য ,শুক্রবার দুপুর অবধি এই থালি এভেলেবেল ছিল ।কিন্তু আমরা যেহেতু দুপুরে যেতে পারলাম না তাই রাতে এইভাবে খাওয়া দাওয়া হল। তাতে যদিও আমার বাবা জেঠুর ভালো হয়েছে।
এককালে খুব ভালোভাবে ওরা খেতে পারত। এখন বয়স হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার অনেক কিছু না করে দেওয়ায় খাবারদাবারের বাছাই হয়ে গিয়েছে। আর খাব বলে সমস্ত কিছু খেলেও হয় না ।একটু বুঝে শুনে খেতে হয়। কারণ এখন যা গরম, উল্টোপাল্টা খেলে শরীর খারাপ করতে পারে।
এই রেস্টুরেন্টের সব থেকে আকর্ষণীয় আরেকটি বিষয় ছিল যে এরা এখানে রোবট সার্ভিস চালু করেছিল। আমি এর আগে এরকম রোবট সার্ভিস কোন রেস্টুরেন্টে দেখিনি। কৃষ্ণনগরের মানুষও হয়তো এরকম রোবট সার্ভিস দেখেনি আগে ।তাই বেশ আকর্ষণীয় ছিল ব্যাপারটা। রোবট করে খাবারগুলো নির্দিষ্ট টেবিলে পৌঁছে যাচ্ছিল। রোবট থেকে খালি নামিয়ে নিতে হচ্ছিল, যারা সার্ভ করছিলেন তারাই নামিয়ে দিচ্ছিলেন।
এই রোবট গুলো একটার সাথে একটা ধাক্কাও খায় না ।পরস্পরের সামনাসামনি চলে আসলে একে অপরকে সাইড দিতে জানে। কোন টেবিলে খাবার পৌঁছাতে হবে সেটাও এদেরকে ভালোভাবে বুঝিয়ে রাখা আছে। রোবট গুলোর নাম অনন্যা। এই রেস্টুরেন্টে মহিলারাই সব করেন। রান্না থেকে শুরু করে সার্ভ করা সব কিছু।
আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছাতে রাত বারোটা বেজে গিয়েছিল। সেদিন খুব মজা হয়েছে। মাঝে মধ্যে সবার সাথে সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে যেতে ভালো লাগে। পরিবারের সাথে সময় কাটানোর একটা আলাদাই মূল্য রয়েছে। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন বন্ধুদের সাথে আর পরিবারের সাথে সময় কাটানোর আকাশ পাতাল তফাৎ।
আজ এখানেই শেষ করলাম। সকলে ভালো থাকুন।
TEAM 5
আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন এই প্রার্থনা করি।আপনি আপনার পরিবারের জন্যে যেটি করেছেন নি:সন্দেহে আপনি বাহবা পাওয়ার দাবিদার।আসলে সবারই এমন ইচ্ছা থাকে পরিবারকে সাথে নিয়ে কোনো রেস্টুরেন্টে বসে খাবে।কিন্তু সবার এটা সম্ভব হয়ে উঠে না।আর হ্যাঁ, আসলেই রেস্টুরেন্টটা দেখতে খুবই সুন্দর। আর আপনি অনেক ভালো ভালো খাবারের ওর্ডার দিয়েছিলেন।সব মিলিয়ে অনেক সুন্দর একটা সময় অতিবাহিত করেছেন।
আজ গিয়েছিলেন আপনার পরিবারের সবাই মিলে , আপনার জেঠুর পরিবারের সাথে মিলিত হয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে, সেখানে গিয়ে অনেক ধরনের খাবার খেয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের এবং খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনাও করেছেন।
আমি আপনার মত চকলেট আইসক্রিম একটু বেশি পছন্দ করি।
একদম ঠিক কথা বলেছেন যে গরম পড়ে এই গরমে বুঝে শুনে খাবার খাওয়াই ভালো।
সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ দারুণ কিছু খাবারের নাম জানার পাশাপাশি ছবিও দেখা হয়ে গেলো। দেখে অর্ধভোজন । এত এত পদের খাবার সামনে পেলে তো লোভ সাম্লানোই দায় হয়ে যায়। নিশ্চয়ই অনেক মজার ছিল খাবার গুলো। আমার তো মনে হচ্ছে এখনি গিয়ে খেয়ে আসি। ধন্যবাদ এই লোভনীয় পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
রোবট দিয়ে খাবার সার্ভ করা এটা আমাদের বাংলাদেশেও রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত যাওয়া হয়নি ইনশাল্লাহ যাওয়ার চেষ্টা করব। পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্য নিয়ে খুব ভালোভাবে খাওয়া দাওয়া করেছেন। চিকেন ললিপপ দেখেই তো লোভ লেগে গেল। তবে আমি মাটন খাই না যার কারণে সেদিকে আর গেলাম না। ধন্যবাদ পরিবারের সাথে কাটানো আনন্দঘন মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।