জন্মদিনের সারপ্রাইজ
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। প্রথমের ছবি দেখে বুঝতে পারছেন আজকের আমার পোস্টটি জন্মদিন বিষয়ক। হ্যাঁ, গতকাল আসলে আমার জন্মদিন ছিল। জন্মদিন নিয়ে প্রত্যেক বছর ডিসেম্বর মাসে আমার অনেক উত্তেজনা থাকে। আমি প্রত্যেক বছর খুব এক্সাইটেড থাকি এই বিষয়ে। দাদু চলে যাওয়ার পর থেকে কিছু বছর সত্যিই আমি এতটাই খারাপ অবস্থায় ছিলাম এসব নিয়ে ভাবতামই না।
কিন্তু এখনো আমার সেই উত্তেজনা সেই এক্সাইটমেন্ট জন্মদিন নিয়ে রয়ে গেছে। তবে এবারের আমি সেরকম কোন কিছুই প্ল্যান করিনি। প্রত্যেক বছর বন্ধুরা হঠাৎ করে এসেই সারপ্রাইজ দেয় আর জন্মদিন সেলিব্রেট করা হয়।। তারপরে খাওয়া-দাওয়ার একটা পর্ব থাকে অন্যদিন। কিন্তু এ বছর এসব কিছুই ভাবি নি। ভেবেছিলাম বাড়িতেই একা একা কেক কেটে জন্মদিন সেলিব্রেট করব। নিজের হাতেই কেক বানাবো। আর সাথে আমার বাবা-মা থাকবে মৌসুমী বৌদি থাকবে।
কিন্তু তার আগে থেকেই প্ল্যানে একটু ওলট-পালট হয়েছে। তার মধ্যেই উলটপালটের প্রথম ঘটনা আজকে আমি শেয়ার করছি। শনিবার রাতে যখন বারোটা বাজে। হঠাৎ করে দরজায় ধাক্কা। আমি যে ঘরে শুয়েছিলাম সেই ঘরে দরজায় ধাক্কা দিতে শুরু করে। দরজা খুলে দেখি মৌসুমী বৌদি। এত রাতে বৌদিকে দেখে আমি তো অবাক। বৌদি আমাকে জড়িয়ে ধরে উইস করলো। তারপর বলল চলো।
এবার এর আগের ঘটনা বলি। বৌদি ডাকার পাঁচ দশ মিনিট আগে থেকেই আমি বাইরের গেটে আওয়াজ পাচ্ছিলাম। একবার উঠে দেখতে গিয়েছিলাম বাইরের গেটে আজ হচ্ছে কিনা। কিন্তু তখন গেট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমি বুঝতে পারিনি। কিন্তু মনে মনে ভাবছিলাম বৌদিরা আবার এসব কিছু করছে না তো।
যাইহোক বৌদির সাথে আমাদের দোতালায় ছুটলাম। বৌদি আমার চোখ বন্ধ করে নিয়ে গেল দোতলায়। তারপর চোখ খুলতেই দেখি ওরা কি দুর্দান্তভাবে ডেকোরেশন করেছে। সন্ধ্যেবেলার দিকেই বৌদি ডবল সাইড টেপ খোঁজার জন্য এসেছিল। পড়ে না পেয়ে ব্লাক টেপ নিয়ে গেছে। এই ব্ল্যাক টেপ দেখি সুন্দর করে দেওয়ালে আটকে আছে। ওটা দেখে সব থেকে হাসি পেল। এর সাথেই দেখলাম গাঁদা ফুল দিয়ে কত সুন্দর করে লিখে রেখেছে হ্যাপি বার্থডে। আর সবথেকে মজার যেটা লাগলো। আমাদের বাড়িতে এত টেবিল চেয়ার থাকতে এরা একটাও টেবিল চেয়ার কুঁড়েমি করে আনেনি।
কিনে রাখা কেকটা একটা বালতির ওপর রেখেছে। আমাদের দোতালায় রংয়ের কাজ চলছে। রংয়ের একটা ফাঁকা বালতি উপর করে তার ওপরে কেক রেখে দিয়েছে। আমি রীতিমতো ওখানেই হাসাহাসি শুরু করেছিলাম। যে আর তোমরা কিছু পেলে না। এত এত টেবিল থাকতে এ জুটলো। কিন্তু এত মজার জিনিসটাকে আর আমি ফ্রেম থেকে বাদ দেইনি। ওই অবস্থাতেই কেক কেটেছি।
মৌসুমী বৌদির সাথে আমার আর এক পাশের বাড়ির কাকা কাকিমা, তার ছেলে মেয়ে, তার মেয়ের মেয়ে মানে নাতনি। সবাই ছিল। ছোট মেয়েটি ওই বাড়ির নাতনি হয়। ওরাও বেড়াতে এসছে মামার বাড়ি। আর এই অবস্থাতেই এসব প্ল্যানিং করেছে। যদিও প্ল্যানিংটা নাকি মৌসুমী বৌদির। আমি সত্যিই এত অবাক হয়ে গিয়েছি। আমার কোন ধারনাই ছিল না এরা রাত দুপুর বেলা এসব করতে পারে।
তারপর সবাই মিলে ছবি তোলা হলো। কেক কাটা হল। সবাই একা করে আমার পাশে বসে ছবি তুলতে লাগলো। আমি যে জামা কাপড় পড়েছিলাম সেই জামা কাপড় পড়েই আমাকে বসতে হয়েছে। এটা বৌদির জেদ যে সাজুগুজু করা যাবে না। কি এক বড় আবদার। অবশেষে ওই অবস্থাতেই আমাকে নিয়ে ছুটেছে।
সবমিলিয়ে কেক কাটা হলো , সবাই শীতে কাঁপতে কাঁপতে কেক কাটলাম। কেকটা খেতেও খুব ভালো ছিল। গাঁদা ফুল দিয়ে ওরা এত সুন্দর সাজিয়ে ছিল আমার একদম ওর মধ্যে বসতে ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু ওটাই নাকি ফটো স্যুটের জায়গা ছিল। এ কারণেই আমাকে ওরা ওখানে বসিয়েছিল। আমি ভাবছিলাম যে আমি বিন্দুমাত্র গেস করতে পারিনি যে এসব হতে চলেছে।
সত্যিই আমার এত এত আনন্দ হয়েছে। আমি কল্পনা করতে পারিনি যে বৌদিরা এরকম ভাবে প্ল্যান করবে। আমি সত্যিই অনেক কৃতজ্ঞ এবং আমি ভগবানকে কি বলে ধন্যবাদ দেব জানিনা। যে এত ভালবাসার মানুষ আমি জীবনে পেয়েছি।
আমার জন্মদিন এর দুদিন পরেই নতুন বছর শুরু হয়। তাই আমার জন্মদিনটা আমার মনে হয় আমার কাছে সব থেকে বড় একটা পাওনা। এদিনকেই আমি সারা বছরের সমস্ত কিছু একবার করে ভাবি আর পরের বছরে কি হবে সেটা নিয়ে ভাবতে থাকি। এবং সবরকম প্রার্থনা এই জন্মদিনের দিনেই করে থাকি।
যেহেতু বছর শেষ হতে চলেছে। তাই এরকম একটা বড় সারপ্রাইজ পাব আমি সত্যিই ভাবতে পারিনি। কথায় আছে যার শেষ ভালো তার সব ভালো। এবারও দেখছি এত ভালোভাবে জন্মদিনের দিনটা কাটাতে পারলাম। আশা করছি নতুন বছর খুব ভালো কাটতে চলেছে।
#happybirthday
0.00 SBD,
0.02 STEEM,
0.02 SP
আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই অনেক আনন্দিত হয়েছি, হঠাৎ করে কেউর কাছ থেকে সারপ্রাইজ পাওয়া,এটা অনেক মজার একটা বিষয়। যাই হোক মৌসুমী আপু আপনাকে চমকে দেওয়ার জন্য একটা সারপ্রাইজ দিল। সারপ্রাইজটা সত্যিই অসাধারণ হয়েছে, এত সুন্দর একটি আনন্দ মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আবারো জানাচ্ছি আপনাকে হ্যাপি বার্থডে দিদি 💐 💐 ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রথমে আপনাকে জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। আপনার আগামী দিনের পথ চলা অনেক বেশি সুন্দর হোক এটাই কামনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে। আসলে প্রিয় মানুষগুলোর কাছ থেকে এভাবে সারপ্রাইজ পাওয়াটা মনে হয় একটা ভাগ্যের ব্যাপার। আপনি আপনার প্রিয় মানুষের কাছ থেকে পেয়েছেন যেটা জানতে পেরে ভালো লাগলো।
আপনার বৌদি আপনার বাবা-মা এবং আপনার বাসার সবাই আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। তাই আপনাকে না জানিয়ে তারা নতুন করে আপনাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য আগে থেকেই সবকিছু করে রেখেছে। সবার জন্যই দোয়া রইল ধন্যবাদ আপনার জন্মদিনের প্রথম পর্ব আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Happy birthday Isha
আপনার জন্মদিনের অভিজ্ঞতা পড়ে মনটাই ভালো হয়ে গেল! মৌসুমী বৌদি এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের এই সুন্দর সারপ্রাইজ সত্যিই অনেক ভালোবাসার নিদর্শন। গাঁদা ফুল দিয়ে ডেকোরেশন আর বালতির উপর কেক রাখার ঘটনাটা খুব মজার লাগল! এত সাদামাটা অথচ আনন্দে ভরা মুহূর্তগুলোই তো জীবনের আসল সুখ। আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই জন্মদিনের জন্য। নতুন বছরও এমনই আনন্দময় হোক!
Happy birthday