বন্যার পানি আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে।
হ্যালো বন্ধুগন আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন, আমিও আপনাদের দোয়া এবং সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।
আমাদের ছোট গ্রামটা যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত, আমাদের গ্রামের অধিকাংশ জায়গা যমুনা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ অন্য জায়গায় নিজেদের বাসস্থান তৈরী করে বসবাস করছে, প্রতি বছর বর্ষাকালে আমাদের গ্রামে বন্যা হয়, শুধু আমাদের গ্রাম না বরং আমাদের কাজীপুরের অনেক জায়গা বন্যায় প্লাবিত হয়।
কয়েকদিন আগে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধির কারণে আমাদের এলাকায় বন্যা শুরু হয়, কয়েক বছর হল ঠিক মত বড় বন্যা হয় না, পানি বৃদ্ধির পরিস্থিতি দেখে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে, এই বছর বড় বন্যা হবে, কিন্তু বন্যার পানি তিনদিন বৃদ্ধির পর কমতে শুরু করে, যদিও যে বন্যা হয়েছে এতে অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে, এখনও পরিপূর্ণ ভাবে পানি কমে নাই, আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। এই বন্যার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার সময় মানুষজনের অনেক কষ্ট হবে। বন্যার সময় অনেক মানুষের ঘরের মধ্যে পানি প্রবেশ করে, তারা তখন নিজেদের ঘরে অবস্থান করতে পারে না, তারা তখন আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসে। যখন বন্যার পানি বেশি বৃদ্ধি পায় তখন মানুষ সহ অনেক প্রাণীর কষ্ট হয়।
আমাদের গ্রামে বন্যায় প্লাবিত মানুষদের জন্য নতুন একটা আশ্রয় কেন্দ্র তৈরী করা হয়েছে। সেই আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও কেউ আসে নাই, আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে, এই বছর বন্যার সময় এই আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার করা লাগবে, কিন্তু বন্যার পানি কমতে শুরু করার কারণে আর ব্যবহার করতে হয় নাই। এই বছর আরও একবার পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, তখন যদি পানি বৃদ্ধি পায় তাহলে এই আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার করা হবে।
আমাদের কাজীপুর উপজেলার প্রায় আঠারোটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার কারণে বন্ধ রয়েছে, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই নদীর ঐপাড় (যেটাকে আমরা চর অঞ্চল বলে থাকি) অবস্থিত, যেসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু করার কারণে মানুষের মনে আনন্দ অনুভব হচ্ছে, সবাই অনেক খুশি হয়েছে, অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধির ভয়টা দূর হয়ে গেছে।
বন্যার সময় আমাদের এলাকায় অনেক মাছ পাওয়া যায়, সবাই মাছ ধরা শুরু করে, বন্যার পানি দেখলেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে, ছোটবেলায় বন্যার পানি আসা শুরু হলেই প্রথমে কলার গাছ দিয়ে ভেলা তৈরী করতাম। আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় এটাকে কলা গাছের ভুড়া বলা হয়ে থাকে। বন্যার শুরুতেই কলা গাছের ভেলা তৈরী করা ছিল আমাদের প্রধান কাজ।
বন্যার সময় আমাদের স্কুল বন্ধ থাকত, যার কারণে আমরা সারাদিন বন্যার পানিতে আনন্দ করতাম, কখনও সবাই মিলে এক সাথে গোসল করতাম, আবার কখনও সবাই মিলে মাছ ধরতাম, বন্যার সময় একটু সুযোগ পেলেই পানিতে নেমে যেতাম, যার কারণে আমাদের অভিভাবকদের অনেক বকুনি খেয়েছি, কখনও মা শাসন করত, কখনও বাবা শাসন করত, কখনও বড় ভাই শাসন করত, যত শাসনই করুক আমাদেরকে পানি থেকে দূরে রাখতে পারে নাই। সাময়িক এর জন্য হয়ত বিরতি দিয়েছি কিন্তু পরক্ষণেই আবার পানিতে নেমেছি।
এখন বন্যার পানি দেখলে সেই ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনের কোনে ভেসে ওঠে, মনে চায় যদি আবার সেই ছোটবেলার মত বন্যার পানির সাথে নিজেকে মিশে দিতে পারতাম, সেই সকল বন্ধুদের নিয়ে এক সাথে আনন্দ করতে পারতাম! সেই পুরানো দিন আর কখনও ফিরে আসবে না।
বন্যার সময় অনেক মানুষের ক্ষতি হয়, বিশেষ করে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়, এই বছর কিছুদিন আগেই গ্রামের মানুষ জমির ফসল ঘরে তুলেছে, কেউ কেউ আবার জমিতে নতুন ভাবে ফসল চাষ শুরু করেছিল, তাদের ফসল বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার আজকের পোস্ট পড়ার জন্য। |
---|
আমি দোয়া করি যাতে খুব দ্রুত আপনাদের এখান থেকে বন্যার পানিগুলো সরে যায় যেহেতু আপনি বলেছেন যে বন্যার পানি শুরু করেছে পানি গুলো সরে যাবে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টে মনোযোগ দিয়েছেন এবং সুন্দর একটা কমেন্ট করেছেন, বন্যার পানি কমে গেলে গ্রামের মানুষদের জন্য একটু সুবিধা হবে।
খবরে দেখেছিলাম যে যমুনার পানি বিপদসীমার উপ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যদি পাড়ের মানুষগুলি খুব কষ্ট করে। আমার শশুর বাড়ি পদ্মার কাছাকাছি। আমার ননাশের বাড়িও পদ্মা যদি ভেঙে নিয়েছে। যদিও এখন আবার চর জেগেছে।
তবে যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে জেনে খুশি হলাম। বন্যার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা মানে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কিন্তু কিছু করারও নেই।
নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে অনেক মানুষের কষ্ট হয়, কয়েকদিন বৃদ্ধির পর কমতে শুরু করেছে, আপনার শ্বশুরবাড়ি নদীর কাছে জেনে ভাল লাগল, ধন্যবাদ।
খবরে দেখছি অনেক জায়গায় বন্যা হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের এখানে বৃষ্টির দেখা নেই। বন্যা হলে তো মানুষের কষ্ট হবেই। বন্যার সময় সবকিছু বন্ধ থাকা স্বাভাবিক ব্যাপার। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি সবাই যেন তাড়াতাড়ি বন্যার কবল থেকে রক্ষা পায়।
মাঝে মাঝে বৃষ্টির প্রয়োজন, বৃষ্টির দ্বারা অনেক উপকার হয়, অতিরিক্ত হলে আবর ক্ষতি হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
বর্ষাকালে আমাদের এখানেও বন্যা হয় যার ফলে অনেক মানুষ কষ্টের জীবন যাপন করে।। আপনাদের বাসা যমুনা নদীর পাশেই এটা আগে থেকেই জানা ছিল আর পানি বাড়ার সাথে সাথে অনেক প্রতিষ্ঠান সহ অনেক পরিবার পানি বন্দী হয়ে যায় শুনে খারাপ লাগলো।।
বন্যার পানি কমতে শুরু করলে মানুষের জীবনে প্রশান্তি চলে আসে, কারণ পানি কমলেই কষ্ট দূর হয়ে যাবে, যদিও পানি বৃদ্ধি পেলে অনেক মাছ পাওয়া যায়, ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য জন্য।
আপনাদের বাসায়ও পানি উঠেছে নাকি ভাই যদি পানি উঠে বললেন ত্রান পাঠিয়ে দিবো 🤣🤣 দুই বস্তা চিরা এক বস্তা চিনি এতে হবে 😆
আমাদের বাড়াতে এখনও ওঠে নাই। 🤣🤣 সাথে কিছু মুড়ি পাঠিয়ে দিয়েন, তাহলে ভাল হবে।
বন্যায় প্লাবিত হওয়া যে কতটা কষ্টকর সেটা প্লাবিত মানুষই বোঝে। বাংলাদেশের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হলেই বন্যা ভেসে যায় সব কিছু। আসলে এই মানুষগুলো নিজেদের জন্য ভালো ঘরও প্রস্তুত করতে পারে না। যাক আগের থেকে জল কমা শুরু করেছে দেখে ভালো লাগলো।
বন্যায় প্লাবিত মানুষ সব দিক দিয়ে কষ্ট করে, ঠিকমত চলাফেরা করতে পারে না, ঠিক মত রান্না করে খেতে পারে না, কোথাও যেতে হলে পানিতে ভিজে যেতে হয়। আমরা কামনা করি সবার কষ্ট যেন দূর হয়। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
ভাই প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই বন্যা সংক্রান্ত আপডেট আমাদের মাঝে দেওয়ার জন্য।
আলহামদুলিল্লাহ বন্যার পানি কমতে শুরু করছে। এই বন্যার কারণে অনেকেই বাসস্থান ত্যাগ করছে প্রত্যেক বছর বাংলাদেশে কোন না কোন অঞ্চলে বন্যা হয়ে থাকে।
যখন বন্যার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন মানুষের অনেক কষ্ট হয়, প্রতি বছর বাংলাদেশের কোন না কোন অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।