Better Life With Steem || The Diary game || 20- Dec-2024
আসসালামু আলাইকুম।আশাকরছি সবাই ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ইন্ডিয়ান বাসী, বাংলাদেশ বাসী,সবাইকে জানাই আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সবার প্রতি আমার ভালবাসা রইল।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলাম সাড়ে আটটার সময়। আজ শুক্রবার তাই শুক্রবার দিনটা একটু কাজ থাকে আমার। সকালবেলায় মা বলছে আলু আনার জন্য,
ফ্রেশ হয়ে আলু আনার উদ্দেশ্য রাস্তায় বের হলাম। গিয়ে দেখি আমাদের এলাকার বিখ্যাত ব্যবসায়ী আলু বিক্রি করছে, আমি বিখ্যাত কেন বললাম, কেননা যে বয়সে স্কুল যাওয়ার কথা ছিল । এই বয়সে ওই ব্যবসা করে, গরিব ঘরের সন্তান তো তাই পড়াশোনা করে না। কেননা যদি পড়াশোনা করে তাহলে ব্যবসা করতে পারবে না, হয়তো সংসার চালাতে পারবে না।
এই ছেলেটির নাম খোকন এর বয়স ৮ থেকে ৯ বছর আরও ছোটবেলা থেকেই এই ব্যবসা করত। আজকে সকালবেলা যেয়ে দেখি ওই আলুর ব্যবসায় করছে। ওই আগে কলার ব্যবসায় করতো, কয়েকদিন ধরে দেখা যায় ওই শাক সবজির ব্যবসায় করে, খোকন রে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কিরে খোকন কলার ব্যবসা কি ছেড়ে দিছো। খোকন আমাকে বলল না ভাই, কলার ব্যবসায় ছাড়ি নাই, শীতকাল তো তাই কলা একটু কম চলে! এই কারণেই শাকসবজি নিয়ে বসলাম, আমি কিছু আলু কিনলাম।
পরে আমি বাসায় চলে আসলাম, আমার কিছু কাপড়-চোপড় আজকে ধুইলাম। আমার ঘর পরিষ্কার করলাম। আমি সময় পেলে আমার কাজ আমি নিজে করি,
কবুতরের খাঁচাগুলো পরিষ্কার করলাম। ও একটা কথা বলতে আমি ভুলেই গিয়েছি কয়েকদিন আগে, আমার কবুতরের ঘরে দুইটা নতুন অতিথি এসেছে। আমার রাজা, রানী কবুতর খুশিতে পুরাই বাক বাকুম। কবুতরের খাঁচার সামনে যেয়ে দেখি রাজা দুইটা বাচ্চারে খাওয়াচ্ছে। দেখে খুব ভালো লাগলো, সন্তানের প্রতি মানুষ যেমন ভালোবাসা ও যত্ন করে। ঠিক তেমন ভাবেই আল্লাহতালা পশু পাখিদের মধ্যে ভালোবাসা দিয়েছে, সন্তানের প্রতি যত্ন নেয়ার জন্য। দেখে খুব ভালো লাগলো, তাই আপনাদের সাথে আমার রাজা রানীর কিছু ছবি শেয়ার করলাম।
আজকে যেহেতু শুক্রবার তাই নামাজে যেতে হবে, মসজিদে যেয়ে দেখি মানুষ অনেক ভিড়। এত ভিড়ের মধ্যেও জায়গা পেয়ে গেলাম, একটা বিষয় আমি উপলব্ধি করতে পারলাম । এই পৃথিবীর মানুষ বড়ই স্বার্থপর, স্বার্থ ছাড়া কেউ- কাউকে এক চুল পরিমাণও ছাড় দেয় না। আমি এই কথা কেন বললাম জানেন, এই মসজিদ আছে একটা স্থান, এই মসজিদে মানুষ , মানুষকে তার নিজের জায়গা ছেড়ে দেয় নামাজ পড়ার জন্য। অপরদিকে মসজিদ থেকে যখন এই মানুষটা বের হবে। আপনি তার কাছে সাহায্যে চাইবেন, সে সাহায্য করবে না। এই জন্য বললাম মানুষ বড়ই অদ্ভুত, স্বার্থ ছাড়া কেউ কাউকে সাহায্য করে না।
বাসায় আসলাম এসে খাওয়া দাওয়া করলাম, খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট নিচ্ছি কেননা আব্বাই বলছে , আমাকে নিয়ে বের হবে একটি জায়গা যাবে , তাই আর আজকে ঘুমাই নাই। এক-দেড় ঘণ্টা পর আব্বায় বলল আজকে আর যাবে না, পরে সন্ধ্যার সময় আমি বের হলাম। একা হাঁটার জন্য, আমার যেদিন মন ভালো লাগেনা ঐদিন আমি একা, একাই বের হই ,একা একাই হাঁটতে থাকি। কেন জানি আমার কাছে অনেক ভালো লাগে, তাই একা - একা হাঁটি আমি ।
হাঁটতে, হাঁটতে একটি বাচ্চা ছেলের সাথে আমার দেখা হয়ে গেল । বাচ্চা ছেলে আমার কাছে শীতের কাপড় চাচ্ছে ওর শীতের কাপড় নাই। সত্য কথা বলতে আমার কাছেও টাকা ছিল না। যে আমি ওকে কাপড় কিনে দিবো। হয়তো বাসা কাছে থাকলে আমার, বাসা থেকে ওরে কাপড় এনে দিতাম। তাই ওরে আমি কিছু টাকা দিই , আর ওর দিকে অবাক চোখে চেয়ে থাকি। আর আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাইলাম, আল্লাহ আমারে অনেক ভালো রাখছে। আমি কিছুক্ষণ বাচ্চাটার উপর ফলো করি দেখি বাচ্চাটা সবার কাছে টাকা চাচ্ছে। শীতের কাপড় চাচ্ছে কেউ ওকে ফিরিয়ে দিচ্ছে আবার কেউ ওরে টাকা দিচ্ছে।
আমি এই বাচ্চার ছবিগুলো উঠাচ্ছি , বাচ্চাটায় একটা কাপড় ব্যবসায়ী, লোকটার কাছে কাপড় চাচ্ছে । লোকটা বিরক্ত হয়ে ওরে যখন বকা দিবে। ঐ সময়ে লোকটা দেখল আমি ছবি উঠাচ্ছি, পরে বাচ্চাটাকে আমার সামনে বলল ভাই টাকা নাই তুমি চলে যাও, আমি চুপ ,চাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম। আর মনে , মনে ভাবছি , এটা আপনার বাচ্চা হলে, আপনি কি এই ভাবে তারে ফিরিয়ে দিতে পারতেন। আমরা মানুষগুলো বড় অদ্ভুত, এই পৃথিবীর বুকে ভালো মানুষ খুবই কম দেখা যায়।
পরে বাচ্চাটির পিছনে - পিছনে আমি হাঁটতে থাকলাম। যে দেখলাম আমি যে টাকা দিছি ওই টাকা দিয়ে একটা রুটি কিনছে, পরে আমি লক্ষ্য করলাম বাচ্চাটি ওর ছোট্ট ভাইকে এই রুটির অর্ধেক অংশ ওরে খাবারের জন্য দিচ্ছে,। এইসব দেখে, আমার মনে অনেক অশান্তি শুরু হল । সৃষ্টিকর্তা আমাদের কত ভালো অবস্থানে রেখেছে, তারপরও আমরা তার কৃতজ্ঞ প্রকাশ করি না, আমার পাশেই বাচ্চাটি এই শীতের ভিতরে এই ভাবে হাঁটছে খাদ্যের অভাবে মানুষের কাছে হাত পাতচ্ছে।
এইতো আজকে এই ভাবেই আমার সারাটা দিন শেষ করলাম। শুকরিয়া করি আল্লাহর কাছে, আমাকে আরেকটি দিন বাঁচার তৌফিক দান করলো। আমার যদি কোন ভুল হয়ে থাকে, তাহলে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ
আজ ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ সাল