হৃদয় জমে থাকা কিছু কথা

in Incredible India4 days ago
নমস্কার

সবাই কেমন আছেন?আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।

কারো প্রতি কারো গভীর টান ও মমতা দেখলে আমার ভীষণ ভয় লাগে।মনে হয় যেন আমার মতো তারা যদি কষ্ট পায়।যখন আমাকে কেউ স্নেহকরে, ভালো ব্যবহার করে তাদের প্রতি আমার একটা আত্মটান তৈরি হয়ে যায় ।এক পর্যায়ে দেখা যায় যে, সে সম্পর্ক থেকে বড় কোনো আঘাতপ্রাপ্ত হই । এ জীবনে মানুষের প্রতি আমার আত্মটান এবং বিশ্বাস আমাকে বারবার প্রতারিত করেছে।

ai-generated-8734374_1280.jpg

pixabay

ইদানিং একটা বিষয় আমি খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করছি, আর সেটা হচ্ছে আমার ছেলে তার পিসিমণিকে খুব ভালোবাসে। পিসি মনের প্রতি তার একটা গভীর টান তৈরি হয়েছে। ওর কথাবার্তা এবং আচরণের মধ্যে স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ পাচ্ছে যেটা আমি আগে অতটা দেখতে পাইনি ।এই তো কয়েকদিন আগে ওর পিসিমণি আমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছিল ।কয়েকদিন ছিল তারপর চলে গেছে ও ওর পিসি মনিকে বলছিল, পিসিমণি তুমি আজ যেও না আজ তুমি থাকো, কাল সকালে যেও। পিসিমণি ওর আবেগ অনুভূতিকে উপলব্ধি করতে পারেনি । ওর পিসিমণি চলে যাওয়ার পর যখনই ওর পিসিমনের কথা মনে পড়তো ,তখন ও কান্না শুরু করতো। ওর কান্না দেখে আমি ওকে বলতাম ,তুমি কান্না করছ কেন ?তখন ও বলল আমার পিসিমনি ও অভয়ের কথা মনে পড়ছে। অভয় হচ্ছে আমার ননদের ৮ মাসের ছোট্ট একটা বেবি ।

তখন ছেলেকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বললাম, তোমার পিসিমণি আবার আসবে। তুমি ছেলে মানুষ। ছেলেরা কি কান্না করে? আর ছেলেরা কান্না করলে খারাপ দেখায় ।এই বলে ওকে সান্তনা দিতাম ।মাঝে মাঝে ও বলে মা চল না পিসিমণির বাসায় যাই !পিসিমণি ও অভয়কে দেখে আসি ।অভয়কে আমার খুব দেখতে ও ধরতে ইচ্ছে করছে ।আমার ছেলের এই ছোট একটি ইচ্ছে যদিও পূরণ করা সম্ভব তবুও আমি পূরণ করতে পারিনা ।কারণ কোন একটা কারণে তাদের বাসায় আমার যেতে ইচ্ছে করে না ।আমার ননদের বাসা কিন্তু আমার বাসা থেকে বেশি একটা দূরে নয়। আমার বাসা থেকে ওর বাসায় যেতে আধা ঘন্টা সময় লাগে ।সত্যি কথা বলতে কি ?আমরা সব মানুষেরা সবাই একরকম নই এ কথাটা আমরা সবাই জানি। কিছু কিছু মানুষ খুব বেশি আবেগপ্রবণ আবার কারো কারো মধ্যে আবেগ পরিলক্ষিত করা যায় না। আমার ননদটা যদিও একটি সন্তানের মা হয়েছে তবুও ওর মধ্যে পারিবারিক টান ও আবেগ অনুভূতি বেশি একটা দেখতে পাই না । যাই হোক, হয়তোবা একটা সময় এই বিষয়টা ঠিক হয়ে যাবে।

mother-1851485_1280.jpg

pixabay

আমি একটা জিনিস ভেবে অবাক হই সে বিষয়টা হচ্ছে ,কিছু কিছু মেয়ে আছে যারা একটা পরিবারে জন্মগ্রহণ করার পর থেকে যে পরিবারের মানুষগুলো তাকে লালন পালন করে খুব স্নেহে ভালোবাসা দিয়ে বড় করে তুলে, যাদের সাথে তার রক্তের সম্পর্ক, যে পরিবার থেকে সে পৃথিবীটাকে চিনেছে ,যাদের অবদানে লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে, যাদের ছত্র ছায়ায় থেকে বাইরের জগৎটাকে চিনেছে ,তাদেরকে ভুলে যায় তখন ,যখন ভালো লাগা এবং ভালোবাসার বয়সে পা দেয়। যখন একটা অপরিচিত পুরুষের সাথে তার সম্পর্ক তৈরি হয় সে ভুলে যায় তার অতীতকে । ভুলে যায় তারপরিবারেরমানুষের মমতার কথা।সবাইকে ভুলে গিয়ে সবচাইতে বেশি আপন হয়ে যায় সেই অপরিচিত পুরুষটি । সমস্ত মমতা থাকে শুধু তার জন্য । নিজের পরিবারের জন্য থাকে না কোন আত্মটান । টান থাকে অন্য পরিবারের মানুষগুলোর জন্য ।

jesus-8632199_1280.jpg

pixabay

যাই হোক, আমার ছেলের মত বয়সে ছোটবেলায় আমিও খুব আবেগপ্রবণ ছিলাম। এই আবেগপ্রবণতা মানুষকে খুব বেশি দুঃখ দেয় ।নীরবে কাঁদায় ।এই আবেগপ্রবণতা ও বিশ্বাস আমাকে দুঃখ দিতে দিতে এই পর্যন্ত এনে দাঁড় করিয়েছে ।তাই আমার ছেলের আবেগ প্রবণতাকে দেখে ভয় পাচ্ছি। আমি চাইনা আমার ছেলে আমার মত কোন মানসিক কষ্ট ও আঘাত পাক ।আমি জানি,মানুষের কাছ থেকে পাওয়া কোন মানসিক আঘাত হৃদয়কে কতটা তীব্র যন্ত্রণা দেয় । হৃদয়ের যন্ত্রণার অনুভূতিটা হচ্ছে অন্ধকারের মত অন্ধকারের মত বললেও ভুল হবে । কেননা অন্ধকারে কিছু দেখা না গেলেও কিন্তু হাত দিয়ে কিছু স্পর্শ করলে অনুভব করা যায় যে আমি কিছু স্পর্শ করেছি ।কিন্তু যন্ত্রণা নামক শক্তিধর এই বস্তুটিকে দেখা কিংবা ধরা ছোঁয়া যায় না । অথচ যন্ত্রণার অনুভূতিটা খুব তীব্র এবং ক্ষতিকর ।কখনো কখনো এই যন্ত্রণা মানুষকে মৃত্যুর মুখেও পতিত করে ।

jealous-8493844_1280.jpg
pixabay

জানেনতো! আমাদের দৃষ্টিরগোচরের যে বিষয়গুলো আমাদের ক্ষতি করে তার চাইতেও বেশি ক্ষতি করে আমাদের দৃষ্টির অগোচরের বিষয়গুলি ।এই অদৃশ্য বিষয়গুলো অত্যন্ত শক্তিধর । এগুলো সদা সর্বদা মানুষের বিবেক ও মনুষত্বকে ধ্বংসের তীব্র ক্ষমতা বহন করে চলে ।এই বিষয়গুলো সর্বদাই অতৃপ্ত ।

আর এই বিষয়গুলো হচ্ছে হিংসা,অহংকার,দম্ভ,ওযন্ত্রণা।এই বিষয়গুলোকে দমিয়ে রাখা খুব কঠিন!যেএই বিষয়গুলোকে দমিয়ে রাখতে পেরেছে।সে মনুষ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মানুষ। আমাদের আত্মশুদ্ধির জন্য এই ক্ষতিকর অদৃশ্য বিষয়গুলোকে পরিত্যাগ করা অতি আবশ্যক।

কেননা আমরা প্রত্যেকেই পৃথিবীর ক্ষণিকের অতিথি মাত্র ।যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আত্মশুদ্ধি না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা জন্ম মৃত্যুর চক্রে আবর্তিত হতে থাকব । যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আত্মশুদ্ধি না হবে আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জন্ম মৃত্যু আবর্তিত চক্র থেকে মুক্তি পাবো না।তাই আমাদের আত্মশুদ্ধি অতি আবশ্যক।

আজ এখানে আমার লেখা শেষ করছি। ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভ বিদায়।

Thanks everyone for reading my post

Thankyou 🙏

Sort:  
 4 days ago 

আসলে আপনার পোস্টটি পড়ে যতটুক বুঝলাম আপনার ছেলে তার পিসি মনিকে অনেক ভালোবাসে, সে তাকে ছাড়া একদমই থাকতে পারে না আসলে যদি বাচ্চারা কারো কাছ থেকে ভালোবাসা পায় তাকে ভুলতে একটু কষ্ট হয়।

যাইহোক আজকে আপনার এই পোস্টটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 4 days ago 

আমার পোস্ট পরিদর্শন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

Loading...
 3 days ago 

অনেকদিন পর আবারো পোস্ট করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগছিল পোস্ট করতে করতে আপনার ছেলের জন্য অনেকটা খারাপ লাগছে।।

আসলে মায়া বড্ড খারাপ তারা প্রতি মায়া থাকলে তার জন্য মনটা অনেক খারাপ হয়। আপনার ছেলে অনেকটা ছোট তারপরও পিছে মনের জন্য কান্না করে তাহলে কতটা তার প্রতি ভালোবাসা রয়েছে।। এছাড়াও আপনি অনেক শিক্ষণীয় বিষয়ে কথা বলেছেন যেটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।। দোয়া রইল আপনার জন্য সৃষ্টিকর্তা আপনার মঙ্গল করুক।।

 3 days ago 

আমার পোস্ট পরিদর্শন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমারও অনেকদিন পর আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে পেরে খুব ভালো লাগছে।

 3 days ago 

আশা করবো সকল ব্যস্ততা কাটিয়ে আবারো আমাদের মাঝে নিয়মিত কাজ করে যাবেন।। খুব মিস করি আপনাদের আগে একসাথে হ্যাংআউটে কত মজা করা হতো আর এখন ব্যস্ততার জন্য সময় দিতে পারছেন না পরিস্থিতি এমনই।।