অনলাইন জুয়া
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজকে আমি কথা বলব খুব কমন একটি বিষয় নিয়ে। আমাদের সমাজে অনলাইন জুয়ার নেশা খুব বেশি মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। এই অনলাইন জুয়ার নেশার মধ্যে যারাই পড়েছে, তারা প্রত্যেককেই ধ্বংস হয়েছে। তাই আজকে এই বিষয়ে কিছু কথা বলব।
অনলাইন জুয়া কি
জুয়া অর্থ হচ্ছে বাজি, মানে কোন বিষয়ের উপর বাজি ধরাকে জুয়া বলা হয়। জুয়া হচ্ছে এমন একটি জিনিস, যেটা আপনাকে লোভ দেখাবে। অল্প টাকায় অনেক লাভবান হওয়ার আকাঙ্খা দেখায়। আমরা শুনেছি আগে মানুষ জুয়া খেলতো বিভিন্ন তাস ও বিভিন্ন চাকা ঘুরিয়ে, এবং লুডু খেলার মাধ্যমে মানুষ জুয়া খেলতো। আরো বিভিন্ন নাম আছে আমি সেগুলো জানি না। কিন্তু বর্তমান সময়ে নেমেছে অনলাইন জুয়া।
আমাদের বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট রয়েছে সেই একাউন্টে টাকা ভরতে হয়। এবং সেই মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন জুয়ার সাইট রয়েছে সেই সাইটে টাকা ট্রান্সফার করতে হয় তারপর সেই অনলাইন জুয়ার দিকে মানুষ আসক্ত হয়।
অনলাইন জুয়ার পরিণতি
আমার দেখা অনেক মানুষই এই অনলাইন জুয়ার পিছনে পড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি আমার দেখা দুইজন মানুষের কথা আমি শেয়ার করব। আমার আপন চাচাতো ভাই ও আমার এক বন্ধুর কথা আপনাদেরকে বলবো।
আমার চাচাতো ভাই
আমার আপন চাচাতো ভাই দীর্ঘদিন যাবত এই অনলাইন জুয়ার পিছনে পড়েছিল। সে ধীরে ধীরে অনলাইন জুয়ার প্রতি এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত তার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে সে অনলাইন জুয়ার পিছনে সেই গহনা বিক্রির টাকা নষ্ট করেছে।
একদিন আমার চাচার মানে তার বাবার দোকান থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। তিনদিন তার কোন খোঁজ ছিল না। তিন দিন পর আমরা জানতে পারলাম। সেই টাকা নাকি জুয়ার পিছনে শেষ করেছে। তারপর থেকে চাচাতো ভাইয়ের এমন কান্ড দেখে কেউ তাকে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করত না।
আরো একটি কথা। তার স্ত্রী একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। তার স্ত্রী ছিল প্রেগন্যান্ট। তার স্ত্রী গার্মেন্টস থেকে কিছু টাকা পেয়েছিল তার প্রেগনেন্সির জন্য। তারপর সেই টাকা নিয়ে উধাও হয়েছিল আমার চাচাতো ভাই। এমত অবস্থায় তার স্ত্রী সন্তান প্রসব করল। অথচ যার সন্তান সেই টাকা নিয়ে উধাও। তার স্ত্রী কিছু লুকানো টাকা ছিল সেই টাকা দিয়ে সে নিজের চিকিৎসা করিয়েছে। তার কিছুদিন পরে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।
আমার এক বন্ধুর কথা
আমার এক বন্ধু সম্পর্ক করে বিবাহ করেছে। কিন্তু আমার সেই বন্ধু ধীরে ধীরে অনলাইন জুয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। সে ধীরে ধীরে এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ে যে প্রতিদিন তার সেই স্ত্রীকে নির্যাতন করে টাকার জন্য। তার স্ত্রীর বাবার কাছে যৌতুক চায়।তার স্ত্রীর বাবা তার মেয়ের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে, তাকে টাকা দেয়। সেই টাকা নিয়ে আমার বন্ধু অনলাইন জুয়া খেলে উড়িয়ে দেয়।
তারপর ধীরে ধীরে আমার বন্ধু তার স্ত্রীর কাছে আর কোন টাকা না পেয়ে ডাকাতদের সাথে হাত মিলায়। এবং রাস্তায় বিভিন্ন অটো রিক্সা গাড়ি ছিনতাই করা শুরু করে। এভাবে কিছুদিন করার পরে হঠাৎ একদিন ধরা পড়ে। গ্রামের চেয়ারম্যান ও গ্রামের মানুষ আমার বন্ধুকে ইচ্ছামত মারধর করে। তারপরে কিছুদিন ভালো থাকে। আবার কিছুদিন যাওয়ার পরে,নতুন বুদ্ধি বের করে মাথা থেকে।
নিজের শহর থেকে অন্য শহরে গিয়ে বিভিন্ন পরিবহনের মধ্যে উঠে মানুষের কাছে বলে যে আমার স্ত্রী অসুস্থ আমার স্ত্রীর ক্যান্সার হয়েছে আমাকে কিছু সাহায্য করুন।এভাবে টাকা তুলে সেই টাকা দিয়ে অনলাইন জুয়া খেলে টাকা উড়িয়ে দেয়। হঠাৎ একদিন গাড়ির মধ্যে আমাদের গ্রামের এক মানুষ এর সামনে ধরা পড়ে। তারপর সেই ঘটনাটি বাড়ির সবাইকে জানিয়ে দেয়। তার কিছুদিন পরে তার স্ত্রীর সংগে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
আমরা এই ঘটনা থেকে যা শিখলাম
আমরা এই ঘটনা থেকে এটাই শিখতে পারলাম যে, লোভ মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এই অনলাইন জুয়া মানুষকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়। যারা এই অনলাইন জুয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে তারা ধ্বংস হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিজের পরিবার থেকে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।নিজের বাবা-মাও দেখতে পারে না। নিজের স্ত্রী সন্তান দূরে চলে যায়।
সবার কাছে আহ্বান
আমি সবাইকে একটি কথাই বলব। আমরা এই অনলাইন জুয়া থেকে বিরত থাকবো। আশেপাশের মানুষ আমাদেরকে অনেক লোভ দেখাবে। তাই আমরা চেষ্টা করব নিজেকে কন্ট্রোল করার।যারা এই অনলাইন জুয়ার আশে পাশে থাকবে। আমরা চেষ্টা করবো তাদের সাথে না মেশার জন্য। কারণ আমরা যদি তাদের সাথে সঙ্গ দেই তাহলে আমরাও একদিন এই নেশার মধ্যে ডুবে যাব। তাই আমরা এই অনলাইন জুয়া থেকে বিরত থাকবো যারা এর সাথে জড়িত আছে তাদের সাথে মেশা বন্ধ করে দেব।
তো বন্ধুরা আজকে এখানেই সমাপ্তি টানছি। দেখা হবে আবার কোন নতুন গল্প নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।
জুয়া খেলা শুধু অনলাইনে নয় বাস্তব জীবনে হয়ে থাকে। আমাদের পরিচিত অনেকের সাথেই এমন ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। তবে আমার কাছে মনে হয় আমরা যেই টাকাটা জুয়া খেলার মাধ্যমে লাগিয়ে থাকি। সে টাকা আমরা যদি কোন ব্যবসা বা কোন কাজের মাধ্যমে লাগাই। তাহলে কিন্তু আমরা অনেক বেশি লাভবান হই। আমাদের তো অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। জীবনের যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তবে সাবধানতা অবলম্বন করলে জীবন সুন্দর। ধন্যবাদ উপরোক্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।
অবৈধ পথে টাকা ইনকাম করা খুবই খারাপ কাজ তার মধ্যে খারাপের মধ্যে জুয়া বাজি ধরা সবথেকে মারাত্মক রোগ। যারা এই খেলাটি খেলেছিল তাদের প্রতিদিন খেলতে মন চাইবে। একদিন গরীব হবে কয়েকদিন রাজা হবে।।
আমি যখন ছোট ক্লাস ৮ পড়াশোনা করি তখন দশ টাকা বাজি ধরেছিলাম এ থেকে হেরে যাই খুব কষ্ট লেগেছিল। তারপর মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম কখনো বাজি ধরবো না। যখন বড় হলাম এবং বাজি একটি অবৈধ হালাল এরপর থেকে বাকি জিনিসটা থেকে বিরত থাকে
ধন্যবাদ আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন
জুয়া একটি নেশা। যারা একবার এই নেশার মধ্যে পড়ে তারা সহজে বের হয়ে আসতে পারে না। এটি তিলে তিলে মানুষের জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। পরিবার-পরিজন আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে সমাজেও তাদের দাম থাকে না। আগেই জুয়া খেলা হত বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে জুয়া খেলা যায়। কম টাকা দিয়ে অনেক টাকা পেলে মানুষের মধ্যে লোভের সৃষ্টি হয়। তখন এই লোভ সংবরণ করতে না পেরে আরো বেশি টাকা বাজিতে লাগায় এবং আস্তে আস্তে নিঃস্ব হয়ে যায়। আপনার চাচাতো ভাই এবং বন্ধুর পরিণতি দেখে সত্যি খুব খারাপ লাগলো। আমাদের সকলের উচিত এসব এড়িয়ে চলা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনলাইনে জুয়া যেন এক পরিচিত নাম, অনেক সম্মানিত মানুষও এর সাথে জড়িত।। আমার অনেক বন্ধু আছে তারা এই জোয়ার সাথে জড়িত হয়ে আজ ধ্বংসের পথে।। আবার অনেক বন্ধু আছে যারা ঠিক আপনার বন্ধুর মত অবস্থা, আরেক জোয়ার পথে যে আপনার বন্ধুর মত অনেকেই দুর্নীতির পথে চলে যায় এবং মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে এবং গারি চুরির কাজে লিপ্ত হয়েছে।।
কোথায় আছে না সুখে থাকতে ভুতে কিলায় এই অবস্থা হচ্ছে এইসব মানুষের।। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থিত করার জন্য।।
আপনি খুব সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করেছেন। বর্তমানে অনলাইন জুয়ার চাহিদা বেড়েই চলেছে। টিভিতেও অনলাইন জুয়ার প্রমোট করছে। আমার জানা মতে অনেকেই রয়েছে যারা অনলাইন জুয়া খেলার মাধ্যমে নিঃস হয়ে গিয়েছে। আমাদের সকলের এটা থেকে দুরে থাকা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আসলে অনলাইন জুয়া এতটা খারাপ একটি জিনিস যেটা, প্রতি যদি কেউ আসক্ত হয়ে পড়ে তাহলে তার যে কোন মূল্যে ওই অনলাইন জুয়া খেলতেই হবে।
কারণ এই অনলাইন জওয়া হলো একটি নেশা, আপনি যদি আজকে কিছু টাকা হেরে যান তাহলে সে টাকা উঠানোর জন্য আপনি যে কোন কিছু করতে পারেন তাই স্ত্রীর গয়না বলেন আর ভিন্ন কোন কাজ বলেন এগুলো সব কিছুই করতে বাধ্য করে আপনাকে।
আজকে আপনি আপনার চাচতো ভাইকের কথা শেয়ার করেছেন আসলে এমনটা এখনকার সময় বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায়। এখন আমাদের উচিত অনলাইন জুয়া থেকে বিরত থাকা এবং নিজেকেও এই জুয়া থেকে দূরে রাখা।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আমার এই পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য। আসলে আমাদের সমাজে অনলাইন জুয়া অনেক পরিমাণের বেড়ে গিয়েছে। তাই আমরা নিজেরাও সতর্ক থাকবো এই অনলাইন জুয়া থেকে এবং যারা এর সাথে জড়িত আছে তাদেরকেও থামানোর চেষ্টা করব। সেই সাথে আপনাকে আরো ধন্যবাদ জানাই আমার পোস্টে কমেন্ট করে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
আপনার এই লেখাটি পড়তে পড়তে একটা ঘটনা মনে পড়ল। বিগত বছর বাসন্তী পূজার সময় আমাদের গ্রামের অন্য একটি পাড়ার মন্দিরের পাশেই জুয়ার কোট বসেছিল। সেখানে প্রথম দিন মানুষ অনেক বেশি লাভবান হয়েছিল।
কিন্তু পরের দিন অতিরিক্ত লোভ করতে গিয়ে অনেকেই সর্বহারা হয়েছিল। তাছাড়া গতকালকেই একটি চূড়ান্ত পর্বের ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল তখন ওই খেলাকে কেন্দ্র করেও অনেক টাকা নষ্ট করেছে এলাকার লোকজন।
সত্যি কথা বলতে আপনার এই লেখাটি একদমই বর্তমান সময়োপযোগী একটি লেখা। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জুয়া খেলার সেই বিষয়টি লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য।
প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমার এই পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। সেই সাথে আপনার এলাকার ঘটনাটি শুনে অনেক খারাপ লাগলো। আমরা সবাই চেষ্টা করব এই অনলাইন জুয়া থেকে দূরে থাকার জন্য। ধন্যবাদ জানাই আবার আমার পোস্টে কমেন্ট করে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। আমি আশাবাদী সব সময় আমার পাশে এরকম সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করবেন।
সত্যি আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষই জুয়া খেলায় মত্ত হয়ে পড়েছে। জুয়া খেলার জন্য কত মানুষের সংসার ভেঙে যাচ্ছে। কত মানুষের বাড়ি,ঘর ,সোনার গয়না সব কিছু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। আবার যারা জুয়াতে জিতছে তাদের খুব আনন্দ। আপনার মত আমিও চাই মানুষ যেন এই জুয়া থেকে বেরিয়ে আসে। আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো।
অনলাইন জুয়া এখন ঘরে আর এই জুয়া অনেক মানুষের সুখ শান্তি কেড়ে নিয়েছে ৷ অনেক সম্পর্ক নষ্ট করে দিয়েছে এই অনলাইন জুয়া ৷ তবে এই জুয়া দিয়ে বড় লোক অনেকে হয়েছে কেউ রাখতে পেরেছে আবার কেউ পুনরায়ের মত ধ্বংস হয়ে গেছে ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ৷ ভালো থাকবেন ৷