প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ

in Incredible India2 days ago (edited)

শিক্ষা বলতে আজ আমরা কেবলমাত্র পুঁথিগত বিদ্যাকেই মনে করে থাকি। আমাদের জীবনে মুহূর্ত, আমাদেরকে কিছু না কিছু শিক্ষা দিয়ে যায়। আমাদের যারা শিক্ষা দেন তাদের আমরা শিক্ষক বলে থাকি ।সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বড় শিক্ষক আমরা আমাদের এই প্রকৃতি কে বলতে পারি। এই বিশ্বপ্রকৃতি প্রতিমুহূর্তে আমাদেরকে শিক্ষা দিচ্ছে আমাদের জীবনকে আরো উন্নততর করে তোলার।

IMG_20241117_201939.jpg

আমাদের খুবই সুপরিচিত একজন কবি, কবি সুনির্মল বসুর লেখা একটি কবিতা থেকে আমাদের এই বিশ্বপ্রকৃতি কিভাবে আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে তা সুন্দরভাবে আমরা জানতে পারি। তিনি শিশু মনে এই বিশ্ব প্রকৃতি শিক্ষকের প্রতি গভীর ভালোবাসা সৃষ্টি করছেন। তার লেখা এই কবিতা থেকে আমরা জানতে পারছি আকাশ ,বাতাস ,পাহাড়, নদী ,ঝরনা , ঘাস সবাই আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন সবাই আমাদের শিক্ষাগুরু।

তার ভাষায় আকাশ আমাদের উদার হওয়ার শিক্ষা দিচ্ছে। আকাশ যেভাবে সমগ্র পৃথিবীর মাথার ছাদ হয়ে রয়েছে তার নিচে আশ্রয় নিচ্ছে পশু,পাখি, গাছপালা অর্থাৎ পৃথিবীতে থাকা প্রতিটি প্রাণী উদ্ভিদ। সে কখনো কাউকে বলছে না যে যে তাদের মাথার উপরে থাকবে না।

একইভাবে সূর্য যেন আমাদের শিখিয়ে যাচ্ছে নিজের তেজ এ জ্বলে উঠতে। সূর্য যেভাবে তার নিজের আলোর ছটায় সমগ্র পৃথিবীকে আলোকিত করে তোলে এবং সমগ্র পৃথিবীর প্রাণী উদ্ভিদ জগতের মধ্যে শক্তির সঞ্চার করে থাকে সেভাবে আমাদেরও সেই শক্তি নিজেদের অভ্যন্তরে সৃষ্টি করতে হবে যে শক্তি আমরা অপরের কল্যানার্থে প্রয়োগ করতে পারব।

IMG_20240830_110229.jpg

চাঁদের আলো এত মধুর এত মিষ্টি যেন আমাদের মন মুগ্ধ হয়ে যায় তার দিকে তাকিয়ে। তাই আমাদেরও তার মত হওয়ার জন্য কবি আমাদের বলছেন । চাঁদের কাছে আমরা চাঁদের মত মিষ্টি হাসি ও মিষ্টি কথা বলার শিক্ষা পেয়ে থাকি। চাঁদ তার মৃদু আলোয় মানুষের মনকে হরণ করে নেয় এবং মানুষ তার এই সৌন্দর্য দেখে আপ্লুত হয়ে ওঠে । চাঁদের মত যদি আমাদের জীবন হয় তবে আমরাও অপরকে আমাদের সৌন্দর্য দ্বারা অর্থাৎ আমাদের কৃতকর্মের দ্বারা অপরকে আপ্লুত করতে পারবো। অপরকে আনন্দ প্রদান করতে পারব।
পাহাড়ের কাছে আমরা শিক্ষা পাই আমাদের মন যেন তার মত মৌন হয়। অল্প কিছুতেই যেন আমরা বিচলিত না হয়ে থাকি যত বিশাল বিপদ আসুক না কেন পাহাড়ের মত আমাদের স্থির হয়ে সেই বিপদের মোকাবেলা করার ক্ষমতা নিজেদের অভ্যন্তরে সৃষ্টি করতে হবে। আমরা যেন কখনো আমাদের মুখনিঃসৃত কটু বাক্যের দ্বারা অপরকে কষ্ট না দিই।

তাইতো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাধা ধরা শিক্ষার কাছে নিজেকে আবদ্ধ না রেখে এই প্রকৃতিকেই তার শিক্ষক করে নিয়েছিলেন। এই সমগ্র প্রকৃতি যখন আমাদের শিক্ষক হয়ে উঠবে তখন আমাদের জীবন আরও উন্নততর হয়ে উঠবে। আমরা আমাদের জীবনকে আরো সুন্দর করে তুলতে পারব।

Sort:  
Loading...
 50 minutes ago 

@papiya.halder লেখাটা ভীষণভাবে মন ছুঁয়ে গেল তাই নিজেকে আর মন্তব্যের হাত থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারলাম না!

কি অভূতপূর্ব লেখা, কি অসাধারণ উপমা! সত্যি যদি আজকের প্রজন্ম এর একাংশ শিক্ষায় নিজেদের শিক্ষিত করতে সমর্থ হয়, গোটা বিশ্বের চেহারা বদলে যাবে।

আমি কিছুদিন আগের একটি লেখায় উল্লেখ করছিলাম, হয়তো আপনার নজরে পড়ে নি, তাই তার খানিক এখানে উল্লেখ করছি।

ঘটনাটি বাস্তব, একটি বারো বছরের ছেলে কেবিসি খেলতে উপস্থিত হয়েছিল, যেখানে তার মা বলেন, আমার মত পুত্র সন্তান যেনো ঘরে ঘরে হয়।

এখন এই বক্তব্যের কারণ কি?

কারণ হলো, ছেলেটি স্কুল ছুটির দিনে মানে শনিবার এবং রবিবার মাকে বিশ্রাম দিয়ে ঘরের কাজ, সকলের টিফিন, মায়ের সাথে বাজারে গিয়ে তার ব্যাগ বয়ে নিয়ে আসা ইত্যাদি কাজগুলো করে থাকে।

নিজে শুধু করে তাই নয়, তার বাবার অফিস ছুটির দিনে বাবাকেও মায়ের সাহায্য করতে বলে।

ওই ছোট্ট ছেলেটির যুক্তি তাক লাগিয়ে দেবার মত ছিল!

সে জানায়, আমার বাবার সাপ্তাহিক ছুটি আছে, আমার সাপ্তাহিক ছুটি আছে, কিন্তু মায়ের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই!

কোনো এমন বই কি আছে, যেখানে উল্লেখিত ছেলেদের ঘরের কাজ করতে মানা আছে, তাহলে কেনো আমরা মাকে সাহায্য করবো না তার কাজে?

ভাবা যায়! জীবনের পথ চলার শুরুতেই যার এমন মনোভাব, আগামীতে সে কতদূর যেতে পারে এটা তার ছোট্ট উদাহরণ।

কারণ, যে বাড়ির ভিত মজবুত সেটা তো টেকসই হবেই, তাই না?

এরকম আরো লেখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম, ভালো থাকুন সবসময়।