ভাইফোঁটার কিছু মুহূর্ত
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করে আমি আমার আজকের ব্লগটি শুরু করছি। আজকে আমি এই বছরের ভাইফোঁটা আমার কেমন কাটলো সেই নিয়ে আপনাদের সাথে গল্প করব। আর তার সাথে ভাইফোঁটা সম্পর্কে আপনাদের কিছু তথ্য দেব। আশা করছি আপনাদের সকলের আমার ব্লগটি ভালো লাগবে।
'বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ' এটা তো আমরা সবাই জানি। এই সবেমাত্র কালীপুজো কাটিয়ে উঠলাম। এরপরেই চলে এলো ভাইফোঁটা। ভাইফোঁটাও আমাদের কাছে একটা বড়ো উৎসব। ভারতে নানা প্রান্তে এই উৎসব নানা নামে পরিচিত। পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই উৎসব ভাইদুজ নামে পরিচিত। আবার মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্নাটক এই রাজ্যগুলিতে ভাইফোঁটা কে ভাইবিজ বলা হয়। এই বিষয়ে একটু পড়াশোনা করতে গিয়ে জানতে পারলাম পশ্চিমবঙ্গের কুইন অব্ হিল অর্থাৎ দার্জিলিং -এ ভাইফোঁটা কে ভাইটিকা বলা হয়। আরো বিভিন্ন অঞ্চলে হয়তো এই উৎসব এর আরো বিভিন্ন নাম থাকতে পারে।*
প্রতিবছরের মত এই বছরও আমাদের বাড়িতে ভাই ফোঁটা উদযাপিত হয়েছে। আমরা দুই ভাই বোন। তাই ছোট থেকেই দাদাকে আমি ভাইফোঁটা দিয়ে আসছি। আমার মামার বাড়ি এবং মাসির বাড়ি যেহেতু বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে, তাই সেখানে গিয়ে বাকি দাদাদের ফোঁটা দেওয়া সম্ভব হতো না। সেই কারণে ৪-৫ বছর আগে পর্যন্ত শুধুমাত্র দাদাকে ফোঁটা দেওয়া হতো।
তবে বর্তমানে আমরা যেখানে থাকি সেই বাড়ির সামনের বাড়িতে একটি দাদা আছে। দাদার বোন প্রতিবছর দাদাকে ফোঁটা টা দেবার জন্য আসতে পারেনা। তাই দাদার খুব মন খারাপ করে। সেই কারণেই চার পাঁচ বছর হলো আমি আমার দাদাকে এবং সামনের বাড়ির দাদাকে ভাইফোঁটা দিই।
এই বছরও খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম কারণ ফোঁটা দেওয়ার যে চন্দন তৈরি করা হয় সেটা আমরা শিশির দিয়ে তৈরি করি। তাই দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে ঘাসের উপরে শিশির আর থাকে না, রোদে সব শুকিয়ে যায়। তাই সবার প্রথমে ঘাসের উপর থেকে একটা ছোট্ট গ্লাসে কিছু পরিমাণ শিশির সংগ্রহ করে নিয়েছিলাম। এরপর স্নান সেরে নতুন জামা পরে ফোঁটার আয়োজন করছিলাম।
আমার যখন প্রায় সমস্ত কিছুই রেডি তখন সামনের বাড়ির দাদার বউ মানে বৌদি এসে আমার হাতে একটা জামা ধরিয়ে দিয়ে বলল, "আজকে এটা পরেই ফোঁটা দিও। তোমার দাদা খুব খুশি হবে।"
যদিও জামাটা আমার গায়ে একটু সামান্য লুজ ছিল তবুও ওদের খুশি করতে আমি যে ড্রেসটা পরেছিলাম সেটা চেঞ্জ করে নতুন জামাটা পরে নিয়েছিলাম।
এরপর আসন পেতে দুই দাদাকে বসতে দিয়ে একে একে ভাইফোটাঁর যা যা নিয়ম থাকে সমস্ত কিছু পালন করেছিলাম-----
প্রথমে ধান- দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলাম।
এরপর মাথায় সর্ষের তেল দিয়েছিলাম।
তারপর চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়ে দিয়েছিলাম।
ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা
যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা,
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা,
আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা।
এরপর দুই দাদাকে মিষ্টি মুখ করিয়েছিলাম।
জল খাইয়ে দিয়েছিলাম।
সবশেষে দাদাদের প্রণাম করেছিলাম।
আর তারপরেই দুই দাদাকেই আমার তরফ থেকে উপহার দিয়েছিলাম।
তারপর একটু ফটো সেশনও চলেছিল।
সেই দিন যেহেতু সন্ধ্যেবেলায় আমার ভাইপোর জন্মদিন উপলক্ষ্যে দাদাদের বাড়ির সকলেরই নিমন্ত্রণ ছিল এবং সেই সাথে আমাদের অনেক ব্যস্ততা ছিল তাই সকাল সকাল আর লুচি ঘুগনি করে ওঠা হয়নি। তাই সেই দিন শুধুমাত্র মিষ্টি দিয়েই আমরা ভাইফোঁটা সেরেছিলাম।
https://www.instagram.com/reel/DCBO110gKA__CaOG7X2jEU7nCSrTVKwyWGsjt80/?igsh=MW5kNW9haGRwb3ViMg==
ভাইফোঁটায় আমার বানানো ভিডিও টি আমি শেয়ার করলাম |
---|
এইভাবেই আমি আমার ভাইফোঁটা উদযাপন করেছিলাম। আশা করছি আপনারাও খুব আনন্দের সাথে আপনার দাদা-ভাইদের সাথে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। তাহলে আজকে আমার ব্লগটি এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন আর আমার ব্লকটা ভালো লাগলে অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য করবেন।
Congratulations!!! because your post has been upvoted by Team 7 using steemcurator09. Keep up the good work and keep making quality posts. Curated By <@ripon0630>
Thank you so much.
দাদার বোন প্রতিবছর দাদাকে ফোঁটা টা দেবার জন্য আসতে পারেনা। তাই দাদার খুব মন খারাপ করে। আপনি দাদাকে ভাই ফোঁটা দেন। সত্যি দিদি খুবই ভালো লাগলো। ভাই ফোঁটাতে সুন্দর মুহূর্ত গুলো তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ দিদি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
Thank you so much.
ভাইফোঁটার কিছু মুহূর্ত অনেক সুন্দর ভাবে সাজিয়ে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যা দেখে অনেক ভালো লাগলো এবং ভাইফোঁটা সম্পর্কে আমার কোন ধারণা ছিলো না কিন্তু আপনার পোস্টটি পরিদর্শন করে আজকে ভাইফোঁটা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম তার পাশাপাশি কোথায় কেমন ভাইফোঁটার কে কি নামে পরিচিত আছে সেই সম্পর্কে আপনি উপস্থাপনা করেছেন আমাদের মাঝে যা দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো।