"দিদিদের ব্যালকনির বাগানে বৃষ্টি ভেজা বিভিন্ন গাছের ফটোগ্রাফি "
|
---|
Hello,
Everyone,
কখনো কখনো ফোনের গ্যালারিতে থাকা ছবিগুলো দেখলেই হঠাৎ করে মনে হয়, সময় কত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আজ হঠাৎ করে আজ আমারও ফোনের গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে বেশ কিছু পুরনো ছবি চোখে পড়লো।
যেগুলো তিতলির জন্মদিনে গিয়ে, দিদির বাড়ির ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে তুলেছিলাম। সেই সময় জন্মদিনের বিভিন্ন ফটোগ্রাফি দিয়ে আপনাদের সাথে সেই দিনের অনুভূতি শেয়ার করলেও, দিদির বাড়ির ব্যালকনিতে লাগানো গাছ গুলোর ছবি শেয়ার করা হয়নি।
আজ সেই ছবিগুলোর দিকে চোখ যেতেই হঠাৎ মনে হল মাঝখানে কতগুলো দিন কেটে গেছে। আর সেই দিনের পর থেকে নতুন দিনের স্মৃতিগুলো ক্যামেরাবন্দি করতে করতে, পুরনো স্মৃতিগুলো আরও নিচে চাপা পড়ে গেছে।
ঠিক যেমনটা আমাদের জীবনের সাথেও হয়ে থাকে। জীবনের প্রতিটা দিন কাটলেই আমরা একটু একটু করে বড় হয়ে উঠি, আর জীবনের সেই দিনগুলোর ভালো-মন্দ স্মৃতি জমা হতে থাকে মনের গ্যালারিতে।
ফোনের গ্যালারি দেখার মতন, কখনো কখনো কোনো ঘটনা, কোনো ব্যক্তি বা বিশেষ কোনো অনুভূতি, আমাদেরকে মনের গ্যালারির ভেতর থেকে পুরনো বিশেষ কোনো দিনের স্মৃতি মনে করায়।
তিতলি জন্মদিনের দুপুরবেলায় প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল এবং সেদিন আমি ও দিদি একসাথে, বহু বছর বাদে ছাদে গিয়ে ভিজেছিলাম। আমার যতদূর মনে পড়ে সেই ছবিগুলো আমি আপনাদের সাথে শেয়ারও করেছিলাম। আর তার সাথে শেয়ার করেছিলাম নিজের ব্যক্তিগত কিছু অনুভূতিও।
তাই আজ ভাবলাম সেদিন দিদির ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে ছোট ছোট টবে লাগানো গাছগুলি নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করি। সত্যি বলতে গাছের যত্ন নেওয়ার মতন সময় দিদির কাছে থাকে না। সারাদিন ডিউটি করে এসে, ঘরের কাজ, বাচ্চাদেরকে সময় দিয়ে, গাছের প্রতি যত্ন দেওয়ার সময় হয়ে ওঠে না ওর।
তাই শুরুর থেকে গাছের প্রতি যা যত্ন নেওয়ার সেটা আমার জামাইবাবু নিতো। তবে যেমনটা আপনারা প্রত্যেকেই জানেন অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার কারণে, গতবছর আমার জামাইবাবুর ব্রেন সার্জারি হয়েছিল এবং প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে তিনি ফিরে এসেছেন।
জীবন মরণের লড়াই লড়তে লড়তে গাছের প্রতি যত্ন নেওয়ার মতো পরিস্থিতি দিদি বাড়িতে কারোরই ছিল না। তবে ঈশ্বরের কৃপায় এবং দিদির আপ্রাণ চেষ্টায় জামাইবাবু এখন বেশ কিছুটা সুস্থ এবং নিজেই একটু একটু করে আবার পুরনো অভ্যাসে ফিরে যেতে শুরু করেছে।
দিদিও এখন জামাইবাবুর সাথে সময় দেয় এই গাছগুলোর পরিচর্যায়, কারণ গত এক বছরেরও বেশি সময় জামাইবাবু ফ্ল্যাটের ওই দুই কামরার মধ্যে বন্দি। ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে বাইরে বলতে একমাত্র হসপিটাল কিংবা কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট করাতে যায়।
এইভাবে মানুষের জীবন যাপন আসলেই আরও বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। এই কারণে মাঝেমধ্যে দিদি জামাইবাবুকে নিয়ে ছাদে সময় কাটায় এবং ব্যালকনিতে এই ছোট্ট ছোট্ট গাছগুলোর পরিচর্যা করে মন ভালো রাখার চেষ্টা করে।
গাছের প্রতি যাদের একটা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে, যারা গাছের যত্ন করতে পছন্দ করে, তাদের জন্য এটা অনেকটা হলেও মানসিক শান্তি মাধ্যম। সেই কারণে দিদিও দাদাকে বারণ করে না।
তবে ব্যালকনিতে খুব বড় কোনো গাছ রাখা সম্ভব হয় না বলে, গাছের বড় টব গুলো সব ছাদে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরোনো গাছগুলো যত্নের অভাবে মারা গেছে অনেক আগেই।তাই আবার সেই টবে ছোট্ট ছোট্ট কিছু গাছ আমার জামাইবাবু লাগিয়েছেন।
আর সত্যি বলতে জামাইবাবু গাছের প্রতি এতটাই যত্নবান যে, তার প্রত্যেকটি গাছ খুব সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠেছে। যেগুলো দেখতে খুব ভালো লাগে। যেহেতু সেদিন দুপুরে অনেক জোরে বৃষ্টি হয়েছিলো, তাই বৃষ্টির ঝাঁপটা ব্যালকনিতে এসে যখন গাছগুলোর উপর পরেছিল, তখন যেন গাছগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছিল।
আর সেই সময় আমি চেষ্টা করেছি গাছগুলোর ছবি তুলতে। ফটোগ্রাফির হাত আমার ততটাও সুন্দর নয়। তবে ছবি তুলতে ভালোই লাগে। এখানে বিভিন্ন ধরনের গাছ আছে, যেগুলোকে আবার যত্ন দিয়ে নতুন করে তৈরি করছেন জামাইবাবু। আর দাদার কষ্টের ফল স্বরূপ গাছগুলো খুব সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠছে ধীরে ধীরে।
গাছগুলোর ছবি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, আপনাদের ছবিগুলো দেখে কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। ভালো থাকবেন সকলে।