"দিদির সাথে ভবতারিণী মায়ের দর্শন - শেষ পর্ব"
|
---|
Hello,
Everyone,
আগের পর্ব শেষ করেছিলাম ভবতারিনী মায়ের দর্শন করে বাইরে বেরিয়ে আসার পর, বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করে ছিলাম সেই পর্যন্ত। আজ এই পোস্টে আপনাদের সাথে পরবর্তী অংশটুকু শেয়ার করবো। যারা আমার পূর্বের পোস্ট পড়েননি, তাদের জন্য প্রথম পর্বের লিংক" আরও একবার দিলাম।
|
---|
|
---|
|
---|
|
---|
চলুন আজ দ্বিতীয় পর্ব শুরু চলু। পুজো দিয়ে বেড়োতে আমাদের প্রায় এগারোটা বেজে গিয়েছিলো। তারপর বেশ কিছু সময় ছবি তুলতে অতিবাহিত হলো। তাই দিদি বলল আমরা প্রথমে কিছু খেয়ে, সেখান থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত শ্যাম মন্দির দর্শন করতে যাবো।
আসলে শ্যাম মন্দিরে এর পূর্বে কখনো যাওয়া হয়নি। ফেসবুকের রিলস ও ইউটিউবে এই মন্দিরটি সম্পর্কে রিভিউ দেখেছিলাম। সেখানে শুধুমাত্র মন্দিরের বাইরে ছবিটি শেয়ার করা ছিলো। কারণ ভিতরে ছবি তোলা একেবারে নিষেধ। তবে আমরা রাতের দিকের ভিডিও দেখেছিলাম, যেটা দেখেই ঠিক করেছিলাম যেহেতু দক্ষিণেশ্বরের কাছাকাছি, তাই একবার ঘুরে আসা যেতেই পারে।
|
---|
তবে সেখানে কখন পুজো দেওয়া যাবে, সেটা সঠিক ভাবে জানতাম না বলে, উপোসটা দক্ষিণেশ্বরই ভঙ্গ করেছিলাম, সেখানকার বিখ্যাত হিংয়ের কচুরি খেয়ে। আমার দিদি এখন নিরামিষভোজী। বেশ কয়েক মাস হলো ও আমিষ খাবার খায় না। তাই দেখে শুনে আমরা একটা নিরামিষ দোকানে গিয়ে হিংয়ের কচুরি ও ছোলার ডাল খেলাম।
এরপর সেখানে টোটোদের কাছে শ্যাম মন্দিরে যাওয়ার ভাড়া জানতে চাইলে, তারা ১০০ টাকা চাইলো। অথচ আমরা ভিডিওতে দেখেছি সেখান থেকে ভাড়া মাত্র ১০ টাকা। ১০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দেওয়া একেবারেই অসম্ভব। তাই ফোনে লোকেশন অন করে দিয়ে, একটুখানি এগিয়ে গেলাম। খুব বেশি হলে ৫ থেকে ৭ মিনিট হেঁটেছি। সেখানে একটা তিন রাস্তার মোড় পরে এবং সেই মোড় থেকে টোটো করে ১০ টাকা দিয়েই আমরা পৌঁছে গেলাম শ্যাম মন্দির।
|
---|
মন্দিরটি একেবারেই রাস্তা ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে। তাই উল্টোদিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রায় লুকিয়েই একটা ছবি তুলেছি। কারণ গেটের সামনে যে গার্ড ছিলো, তারা ছবি তুলতে দিচ্ছিলো না। যাইহোক এরপর সেখানে জুতো রেখে, আমরা প্রবেশ করি মন্দিরে। ভিতরে একদমই লোক ছিল না, মাত্র তিনজন বসা ছিলো তারপর আমি আর দিদির প্রবেশ করি।
কি যে অপূর্ব মন্দিরের ভিতরে পরিবেশ, সেটা আপনাদের আসলেই বলে বোঝাতে পারবো না। এখানে কৃষ্ণ ঠাকুরকে তুলসী পাতা, গাঁদা ফুল ও গোলাপ ফুল দিয়ে স্তরে স্তরে সাজিয়ে, এতো সুন্দর পোশাক পরানো হয়েছিল, যা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না।
|
---|
শ্যামসুন্দর ছাড়াও রাধা কৃষ্ণের যুগল মূর্তি ও হনুমান জি আছেন সেখানে। তাদেরও নিত্য পূজা হয়। সেখানে আমরা যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোগ দেওয়া হলো। তাই সকল মন্দিরের পর্দা বন্ধ করা হলো। সেখানকার একজন গার্ড জানালেন ১২.৪৫ মিনিটে ভোগ আরতি হবে। তাই সেটা দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। মিনিট ১৫ সেখানে বসে রইলাম।
১৫ মিনিট বাদে ভোগ আরতি শুরু হলো এবং সেই সময় আরো বেশ কিছু মানুষ উপস্থিত হলো আরতি দর্শন করার জন্য। সকলে মিলে ভোগ আরতি দর্শন করলাম। একেবারে শেষে সুন্দর গান চললো। আর সকলেই যেন সেই তালে দুলতে শুরু করলাম। এক অপূর্ব সুন্দর মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল সেই সময়। আরতি শেষ হওয়ার পর সেখান থেকে আমাদের প্রসাদ দেওয়া হলো, তার সাথে চরণামৃত। এরপর আমরা বাড়ি আসার উদ্দেশ্যে সেখান থেকে রওনা করলাম।
|
---|
|
---|
|
---|
পুনরায় টোটোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম কিন্তু একটা অটো পেয়ে গিয়েছিলাম। সেটাতে এসে নির্দিষ্ট স্টপেজে নেমে, পাঁচ মিনিট হেঁটে পৌঁছে গেলাম দক্ষিনেশ্বর মেট্রো স্টেশন। মেট্রো স্টেশনে ঢোকার মুখে শ্রী রামকৃষ্ণ, সারদা দেবী, স্বামী বিবেকানন্দের তিনটি সুন্দর মূর্তি করা ছিলো। ওখানে দাঁড়িয়ে দুটো ছবি তুললাম আমরা। এরপর চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম।
|
---|
আজকাল দিদিও বুঝে গেছে আমি যেখানেই যাই ব্লগের জন্য ছবি তুলি। তাই উপরে ওঠার পর বেশ ডিজাইনে দিদির চোখ পড়তেই আমাকে বললে ছবিটি তোলার জন্য, যাতে আমি আপনাদের সাথে সেটা শেয়ার করতে পারি। তাই দিদির কথা মতন ছবিটা তুললাম। আসলেই এটা দেখতে বেশ আকর্ষণীয় লাগছিলো।
সেখানে দিদি এক কাপ কফি খেলো। কফি আমার খুব একটা পছন্দ নয়, তাই আমি খেলাম না। সেখান থেকে প্লাটফর্মে পৌঁছে মিনিট তিন চার অপেক্ষা করতেই, ট্রেন এলো। যেহেতু এই স্টেশন থেকে মেট্রো ছাড়ে, তাই একেবারেই ফাঁকা ছিলো, ভিতরে ঢুকে পছন্দসই জায়গায় বসে পড়লাম।
|
---|
কিছুক্ষণের মধ্যেই নেমে গেলাম নোয়াপাড়া স্টেশনে। সেখান থেকে আবার সেই দুটো অটো পাল্টে পৌঁছে গেলাম বাড়িতে। দুই বোন অনেকদিন বাদে কোথাও ঘোরার উদ্দেশ্যেই বেরোলাম। কারণ গত দেড় বছর ধরে যখনই দুজন একসাথে বেরিয়েছি, হয় সেটা হসপিটালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে, আর না হয়তো কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে, দাদাকে নিয়ে কোনো টেস্ট করানোর উদ্দেশ্যে।
যাইহোক দিদি বাড়িতে ফ্রেশ হয়ে, লাঞ্চ করে, কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে, আমি আবার সন্ধ্যার ট্রেন ধরে বাড়িতে ফিরেছিলাম। ভোরবেলা থেকে শুরু করে সারাটা দিন বেশ উপভোগ্য ছিলো। যারা আমার পোস্টটা পড়ছেন, যদি কখনো সম্ভব হয় তাহলে দক্ষিণেশ্বর মন্দির গিয়ে, হাতে আরও আধাঘন্টা সময় নিয়ে একবারে এই শ্যাম মন্দিরে অবশ্যই যাবেন। আমি কথা দিচ্ছি আপনাদের খুব ভালো লাগবে। ছবিগুলো তুলতে পারিনি তাই, নাহলে আপনারা বুঝতে পারতেন আমার কথার সাথে বাস্তবতার মিল কতখানি।
যাইহোক কেমন লাগলো আপনাদের আমার পোস্ট পড়ে, অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। শুরুতে আপনাদের সবাইকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি, তবে আশা করছি সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। সবাইকে জানাই শুভ রাত্রি।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 1/6) Get profit votes with @tipU :)
দিদি আপনাদের দুই বোনের একই ফ্রেমে দেখে বেশ ভালো লাগছে দুই বোনের মুখের কাটিং প্রায় সমান বলা যায় তবে আপনি তুলনামূলকভাবে একটু বেশি পরিষ্কার একটু বেশি গুলুমুল। 😁😁 যাইহোক মজা করলাম।
ট্রেন থেকে নামার সময় যে ছবিটা তুলছেন সেটা আমি বেশ ভালো করে খেয়াল করছি আমি কিছুদিন আগে মার্কেটে গেছিলাম প্যান্ট কেনার জন্য আর সেখানে এর চেয়ে বেশি ছেঁড়া প্যান্ট আমি দেখেছি। সত্যি কথা বলতে আমার টাকা দিয়ে ছেঁড়া প্যান্ট কেনার ইচ্ছা মোটেই নাই। জিন্সের প্যান্ট বেশি ভাগ সময় হাটুর নিচে ছিড়ে যায় আর এই ছেঁড়া প্যান যখন আমরা পরিধান করি তখন বলে যে ছেড়া প্যান্ট পড়ছো কেন প্যান্ট কেনার টাকা নাই। আর এখন এটা স্টাইল কোন যুগে আসলাম বাবা।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদির সাথে ভবতারিণী মায়ের দর্শনের শেষ পর্ব আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন।