Better life with steem || The Diary Game || 22nd June, 2024 ||

in Incredible India14 days ago
IMG_20240623_011836.jpg
"আমার গতকালের সারাদিনের গল্প"

Hello,

Everyone,

গত দুদিন যাবত আমার দিদির বাড়িতে আছি। আসলে খুব তাড়াতাড়ি আমার দিদির হাজবেন্ডের আবার ব্রেন সার্জারি করাতে হবে, সেই কারণে বেশ কিছু টেস্ট করার প্রয়োজন রয়েছে।

সেগুলো করানোর জন্য দিদিকে হসপিটালে ছোটাছুটি করতে হয়েছে দুদিন। এই কারণে বাচ্চাদের সাথে আমার থাকাটা প্রয়োজন ছিলো। যদিও বাড়িতে শ্বশুর মশাইয়ের শরীরটাও খারাপ, কিন্তু তবুও দুদিনের জন্য আসতেই হলো।

তবে এই দুটো দিন বেশ আনন্দের সাথে কাটলো। অনেকদিন ধরে তিতলি ও তাতানের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ হচ্ছিল না। তবে এই সুবাদে এই দুটো দিন ওদের সাথে অনেক আনন্দ করলাম।

যাইহোক আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, আমার আজকের দিনটি কিভাবে কাটলো। চলুন তাহলে শুরু করি, -

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

বৃহস্পতিবার দিন এসেছিলাম দিদি বাড়ি, মাঝখানে দুটি দিন কাটিয়ে ফেলেছি কোথা দিয়ে বুঝতেও পারিনি। আজ সকালে তিতলি স্কুলে যাওয়ার সময় কথার শব্দে ঘুম ভেঙে ছিল ঠিকই, একটু বাদেই দেখলাম দিদি ঘরের দরজা টেনে দিলো। তারপর আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। ওদের জানালা দিয়ে বেশ রোদ্দুর ঢোকে ঘরে, ঘর একেবারে আলো হয়ে যায়, তাই চাইলেও একটু বেলা পর্যন্ত শুয়ে থাকা সম্ভব হয়নি।

IMG_20240622_011517.jpg
"সকালের চা"

ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে ফ্রেশ হলাম। তাতানের স্কুল ছুটি ছিলো, তাই ও তখনও ঘুমাচ্ছিলো। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে গাছগুলোকে কিছুক্ষণ দেখলাম। তারপর চা বানিয়ে দিদি ডাকলে, আমি, দিদি, বাবা ও দাদা চারজনের মিলে চা খেলাম একসাথে। আর বেশ কিছু ক্ষণ গল্প করলাম। যেহেতু আজ শনিবার দিদিদের বাড়িতে নিরামিষ খাবার হয়, তাই কি রান্না হবে এই নিয়েই এক পর্ব গল্প চলল।

IMG_20240622_011357.jpg
"আমার ব্রেকফাস্ট"

শেষমেষ সিদ্ধান্ত হলো, ফ্রাইড রাইস, পনির তার সাথে বেগুন ভাজা, চাটনি ও পাপড় এই সবই খাওয়া-দাওয়া হবে দুপুরে। সকালের ব্রেকফাস্টে আমি জ্যাম দিয়ে পাউরুটি খেয়ে নিয়েছিলাম।

বাকিদের জন্য দিদি অবশ্য সেমাই আর রুটি তৈরি করেছিল যেগুলো আমি খাইনি। এইভাবে সকালের এক পর্ব কাটলো। এই সবকিছুর মধ্যে আমিও বেশ কিছু কমেন্ট করলাম এবং কমিউনিটির দিকেও নজর রাখলাম।

কিছুক্ষণ বাদে তাতান ঘুম থেকে উঠলো। ফ্রেশ হওয়ার পর ওকে বাবা খাইয়ে দিলো। আজকাল তার নতুন বাহানা হয়েছে, সে অন্য কারোর হাতে নয় শুধুমাত্র দাদাভাইয়ের হাতে খাবার খায়।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

এরপর রান্নার আয়োজন করতে করতে দুপুর হয়ে গেলো। দিদির বাড়িতে যে দিদিটি রান্না করেন, তিনি শারীরিক অসুস্থতার জন্য আজ আসেননি। তাই রান্না করার দায়িত্ব ছিলো দিদির উপরে।

IMG_20240622_012701_012809.jpg
"ফ্রায়েড রাইস"
IMG_20240622_012733_012758.jpg
"পনীর"

সত্যি বলতে পনির রান্নায় আমি ততটা পারদর্শী নই, আর যেহেতু বাচ্চারা খায়, তাই ও ঝাল ছাড়াই রান্না করে। এই কারণে ও নিজেই রান্নার দিকে গিয়েছিলো। আমি শুধু ওকে বিন আর গাজর কেটে দিয়েছি। বাকি সমস্ত কিছু রান্না ও করেছে।

এরপর এক এক সকলেই স্নান করে নিলো। আমিও একটু বাদেই স্নান করে চলে এলাম। দুপুরে আমাদের লাঞ্চ দেড়টার মধ্যে শেষ হয়ে গেলো। তিনটে নাগাদ তিতলি আসার কথা ছিলো, তবে বাবা একটু বাড়িতে যাবে বলে দিদি বাবাকে বেরিয়ে যেতে বললো। আর নিজে গিয়ে তিতলিকে নিয়ে এলো।

তারপর তিতলির স্নান করা হয়ে গেলে দিদি ওকে খাইয়ে দিল। ততক্ষণ আমি আবার ফোন নিয়ে খাটের ওপরে শুয়ে পড়েছি। দিদি বাড়িতে এসে যেন শরীরে অলসতা বাসা বেধেছে। কিছুই করতে ইচ্ছে করে না। অথচ আগামীকাল বাড়িতে ফিরে গিয়ে আবার রুটিন মাফিক নিজের সারাদিনের কার্যক্রম শুরু করবো, মেয়েদের জীবন আসলেই অন্যরকম।

1672344690977_010726.jpg

"বিকালবেলা"

IMG_20240622_011233.jpg
"তিতলি পড়ায় মনোযোগী"

এদিকে কখন যেন দুচোখ লেগে গিয়েছিল টের পায়নি। ঘুম থেকে উঠলাম দাদার ডাক শুনে, উঠে দেখি তখন ছটার বেশি বাজে। তিতলির ম্যাম এসেছেন ওকে পড়াতে। আমি উঠে গিয়ে অন্য রুমে শুয়ে পড়লাম। দাদা সমস্ত পড়ার বইগুলো এনে খাটের উপর রাখলো, এরপর তিতলিকে ডেকে পড়তে বসালো। এমন করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে এলো। আমি তাতানের সাথে কিছুটা সময় কাটালাম ছাদে।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা"

IMG_20240622_011014.jpg
"ছাদ থেকে তোলা ছবি"

দিদির কিছু জিনিস কেনার ছিলো বাজার থেকে, তাই আমাকে গতকাল থেকেই জোর করছিল বাজারে যাওয়ার জন্য। কিন্তু আমার এত আলসেমি লাগছিল যে কিছুতেই যেতে ইচ্ছা করছিল না। তারপর অগত্যা আজ ওর ফ্ল্যাটের নিচের দোকানে গেলাম, আর কয়েকটি জরুরী জিনিস কিনে মিনিট ২৫ এর মধ্যেই ফিরে এসেছিলাম।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

IMG_20240622_011503.jpg
"আমার লুডু খেলার সঙ্গী"

যাইহোক আসার পর দেখলাম তাতান টিভি দেখছে। কয়েকদিন আগে একটি দাবা ও লুডু কিনে নিয়ে এসেছে, তাই ওর সাথে খেলার বায়না করল। আমিও খেলতে শুরু করলাম। কিন্তু যাদের বাচ্চাদের সাথে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তারা জানেন, বাচ্চারা নিজেদের নিয়ম নিজেরাই তৈরি করে। তাই ওদের সাথে ওদের মতো করেই খেলতে হবে।

IMG_20240622_011447.jpg
"লুডু"

যতবার তাতানের গুটি কাটা পরে, আমি কখনোই কাটতে পারি না। কারণ ওর নিয়মেই নেই যে ওর গুটি কেউ কাটতে পারবে। যাইহোক এইভাবে খেলার জন্য বেশ কিছুক্ষণ ভালোই সময় কাটলো ওর সাথে।

IMG_20240622_012129.jpg
"রাতের খাবার - খিচুড়ি"

দিদি অন্যদিকে রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেছিলো। রাতে শুধু খিচুড়ি করেছিলো, তার সাথে বেগুনিও ছিলো। তাতানকে খাওয়ানো প্রায় যুদ্ধের সমান। এই কারণে বাবা আগে খেয়ে তারপর ওকে খাওয়াতে বসলো। আর আমরা সকলে সেই সময় ডিনার সেরে নিলাম।

এরপর এক এক করে সকলে শোয়ার প্রস্তুতি নিলাম। তিতলি ও তাতান কিছুতেই ঘুমাতে যাবে না। অনেক বকাঝকা করে তাদেরকে রুমে ঢুকানো হলো। আর আমিও চলে এলাম আমার রুমে। এরপর কমিউনিটির কাজ গুলো নিয়ে বসলাম, পাশাপাশি পোস্ট লেখার কাজও শুরু করলাম। আজকের দিনটা এইভাবে সকলের সাথে হাসি মজা করে কাটিয়ে দিলাম।

কাল আবার ফিরে যেতে হবে বাড়িতে। সেই একই জীবন যাপন। যাইহোক আপনাদের আমার পোস্ট পড়ে কেমন লাগলো, জানাতে ভুলবেন না। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভ রাত্রি।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328TqCvhjhspw5NBPbWMShaDD4yjYoZFwyWS9XH9YcrMyqTMGHiWpaGrwDGkXYMbDHgxptYZq3ueRpXapEAPkAuu3vPaZSXJ2USdTC.png

Sort:  

Copy_of_Curation_Guidelines_20240529_204831_0000.png

We invite you to continue publishing quality content. In this way you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.

Loading...
 13 days ago 

আপনার সারাদিনের কাজকর্ম শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনি দিদির বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছেন আপনার দিদির হাজবেন্ড অসুস্থ তাই। আসলে বাড়িতে কেউ না থাকলে বাচ্চাদের দেখাশোনা খুবই অসুবিধা হয়। তাই আপনি গিয়ে দিদির বাচ্চাদের দেখাশোনা জন্য ছিলেন। তবে মাঝে মাঝে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটাতে ভালোই লাগে।

 13 days ago 

আপনার দাদার আবার ব্রেন সার্জারি করাতে হবে। সেজন্য অনেক কাজ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। তাই আপনার দিদি অনেকটাই ব্যস্ত। আসলে ছোট বাচ্চাদের সাথে সময় কাটাতে বেশ ভালই লাগে। আপনি আপনার বোনের ছেলে মেয়ের সাথে খুব সুন্দর মুহূর্ত পার করেছেন।

তাঁতান এর বিষয়টা সত্যিই অসাধারণ। আসলে লুডু খেলতে গেলে তো গুটি কাটা যাবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা মানতে রাজি নয়। যাইহোক তারপরেও আপনি তার সাথে লুডু খেলেছেন এবং সন্ধ্যায় কিছুটা সময় তার সাথে ব্যয় করেছেন। রাত্রি বেলা খিচুড়ি রান্না করে খেয়ে নিয়েছেন। ধন্যবাদ একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 12 days ago 

আপনার দিদির হাজবেন্ডের ব্রেন সার্জারি আবারও খুব তাড়াতাড়ি করাতে হবে। এজন্য আপনার দিদি কিছু টেস্ট করানোর জন্য হসপিটালে বেশ দৌড়ের উপর ছিল। সেই হিসেবে আপনার সেখানে উপস্থিত থাকাটা প্রয়োজন ছিল।
তবে আপনার পোস্ট পড়ে মনে হল দুদিন দিদির বাড়িতে বেশ ভালই সময় কাটিয়েছেন। কিছুদিন আগে আপনার শ্বশুর মশাই হসপিটালে ভর্তি ছিল। এবং আপনার উপর অনেকটাই চাপ পড়ে গেছিল। কিন্তু দুইদিন দিদির বাড়িতে সময় কাটানোর পরে আপনার মনটা হয়তো অনেকটাই ফ্রেশ হয়ে গেছে।

সারাদিনের কার্যক্রম গুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

 8 days ago 

প্রথমেই বলছি পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। কারণ আপনার দৈনন্দিন ক্রিয়া-কলাপে একটু পরিবর্তন দেখতে পারলাম যেটা দেখা বড্ড দুষ্কর। যখন আপনি বাড়িতে তখন এতো পরিমাণে কাজে থাকেন নিজেই মাঝেমধ্যে একটু অবাক হই।

মেয়েরা বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করলেই জীবন- যাপনের ধারাবাহিকতার পরিবর্তন হয়। কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে অনেকটা বেশিই হয়েছে। যেটা শুধুমাত্র একজন নারী না বরং একজন মানুষের ক্ষেত্রে কতোটা প্রযোজ্য সেটা আমার জানা নেই।

আপনাকে একটু বিশ্রাম নিতে দেখলেই আমি শান্তি পাই। যাইহোক, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি দিনলিপি আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।