"এলোমেলো জীবনযাপন "
Hello,
Everyone,
চোখে দেখতে পাওয়া শরীরের ব্যথাগুলোই বোধহয় উল্টো দিকের মানুষগুলোর চোখে পড়ে। তা নাহলে মনের ব্যথা বয়ে নিয়ে চলি আমরা প্রত্যেকেই, তা কখনোই কারোর দৃষ্টিগোচর হয় না।
খুব প্রিয় মানুষের কাছেও কখনো কখনো সেগুলো বলা হয়ে ওঠে না। আশেপাশের মানুষগুলো হাসিমুখটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবে, বেশ ভালোই আছে। কিন্তু ভিতরে লুকানো মনের কষ্টগুলো চোখে দেখা যায় না বলে, অন্য মানুষের বোধগম্য হয় না।
এমনটা শুধুমাত্র আমার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা নয়, গোটা পৃথিবীর মানুষই বোধহয় এই ভাবেই তাদের জীবন কাটাচ্ছে।
লক্ষ্মী পূজার পরদিন থেকে যে অসহ্য ব্যথা বয়ে নিয়ে চলেছি, তার কিছুটা উপশম হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তবুও সম্পূর্ণ ঠিক না হওয়ার কারণে জীবন যাপনে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে।
যেমন ধরুন যে কাজগুলো আগে খুব কম সময়ে করতে পারতাম, সেগুলোই অনেকটা সময় নিয়ে করতে হচ্ছে। আর কিছু কিছু কাজের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে অন্যের উপরে। আর এই নির্ভরতাই কখনো কখনো বড় অসহ্য মনে হচ্ছে আমার।
গতকাল আবার ডাক্তার দেখালাম। তবে এবার হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়া শুরু করলাম। হয়তো একটু দীর্ঘ সময় নিয়ে ওষুধ খেতে হবে, কিন্তু তবুও ওষুধের সাইড এফেক্ট কম হবে ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিলাম।
সত্যি কথা বলতে জীবনে এখন যে পর্যায়ের মধ্য দিয়ে চলছি তাতে আগামী জীবনটুকু কোনো না কোনো ওষুধের উপর নির্ভর করেই চলতে হবে, এ কথা আমি নিজেও বিশ্বাস করতে শুরু করেছি, তার কারণ একটাই - বয়স বাড়ছে।
আর এই বয়সের সাথে তাল মিলিয়ে পুরনো কিছু অভ্যাস অদ্ভুতভাবে ত্যাগ করে ফেলে, নতুন কিছু অভ্যাস তৈরি করে নেবো একথা একেবারে নিশ্চিত করেই বলতে পারি। এমনটাই হয় সকলের ক্ষেত্রে।
সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব এখনও সম্পূর্ণভাবে আমার উপরে নেই, তবে যতটুকু আছে তাতেই কখনো কখনো দম বন্ধ হয়ে আসে। ভাবতেই পারি না আজ থেকে আরো কয়েক বছর বাদে এই সংসারটাকে কিভাবে একা পরিচালনা করবো।
সত্যি বলতে আমরা কেউই জানিনা কার জীবন কখন, কিভাবে থেমে যাবে। হতে পারে এই সংসারের কোনো দায়িত্ব কোনোদিনই সম্পূর্ণরূপে আমাকে নিতেই হলো না। হয়তো তার সুযোগই পেলাম না।
আবার এমনও হতে পারে সংসারের সকলেই আমাকে একা রেখে, সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমার উপরে দিয়ে গেলো। আজকাল এইরকমই কিছু এলোমেলো ভাবনা মাথায় ঘুরপাক খায়। এর জন্য অন্য কিছু নয়, আমার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি দায়ী, একথা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি।
তবে যা বুঝতে পারি না তাহলো, এই সমস্ত কিছুর থেকে পালানোর কোনো উপায় আছে কিনা। এবার সত্যিই পালাতে চাই। জীবনে সংসার সম্পর্ক, দায়িত্ব-কর্তব্য সমস্ত দিক ব্যালেন্স করতে করতে মানসিক দিক থেকে অনেক আগেই হাঁপিয়ে উঠেছিলাম, আজকাল শারীরিক দিক থেকেও ভীষণ ক্লান্ত অনুভব করি।
বুঝতে পারি পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কখনো কখনো নিজেকে গুটিয়ে নিতে হয়, আবার কখনো নিজের রাগ প্রকাশ করতে হয়। তবে শারীরিকভাবে সাময়িক দুর্বল হয়ে পরলে রাগগুলো প্রকাশ করার জায়গা পায় না। কারণ কিছু ক্ষেত্রে অন্য কারো সাহায্য ছাড়া কিছু কিছু কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
আর এই সকল ছোট ছোট বিষয়গুলি নিয়ে আজকাল বড্ড বেশি বিরক্ত, বড্ড বেশি বীতশ্রদ্ধ জীবনের প্রতি। তবে জীবন সবার প্রতি সব সময় সুবিচার করবে এই প্রত্যাশা করা একেবারেই বোকামি। তাই সেই বোকামি করতে চাই না বলেই জীবনটাকে কোনোরকমে টেনে নিয়ে চলছি।
অপেক্ষায় রয়েছি পরিস্থিতি বদলানোর, মানসিকভাবে সুস্থ হওয়ার পাশাপাশি শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার। আজকের লেখাগুলো হয়তো আপনাদের কিছুটা খাপ ছাড়া, কিছুটা এলোমেলো মনে হবে, তবে এটাই আমার বর্তমান পরিস্থিতি। ভালো থাকবেন সকলে।
হয়তোবা আমার এই একটি কমেন্টে আপনার চলমান পরিস্থিতি বদলাবে না । তবে এতটুকু বলতে পারি মনের ব্যথা কমানোর জন্য এই ব্যথাগুলো প্রকাশ করতে হয় আর যখনই এই ব্যথাগুলো আপনি কাউকে প্রকাশ করবেন তখন মনে হবে যে অনেকটাই ব্যথা নেমে গিয়েছে।
সংসারের দায়িত্বের পাশাপাশি আমাদের এই পরিবারের দায়িত্বটাও খুব ভালোভাবেই পালন করছেন বয়স বাড়ার সাথে সাথেই মানুষের চিন্তা ভাবনা ও বাড়তে থাকে মনে যেটা চাই সেটা করতে পারিনা চিন্তা ও ভাবনার সাথে অংক যে মেলে না।
শরীর ভালো থাকতে যে কাজ আমরা এক ঘন্টায় করতে পারি শরীর খারাপ হলে সেই শেষ করতে দুই ঘন্টার অধিক সময় লেগে যায়। যাইহোক আপনার জন্য দোয়া রইল যেন সকল দুশ্চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে আবার আপনার মুখ ভরা সেই হাসি যেন আমরা দেখতে পাই। ভালো থাকবেন দিদি।
আপনার মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লাগলো। সত্যিই বয়স বাড়ার সাথে সাথে চিন্তাভাবনা বাড়ে ঠিকই, তবে জীবনের অংক মেলে না কোনো মতেই। হ্যাঁ মনের কথা প্রকাশ করতে পারলে মনের ভার কমে একটু, কিন্তু কখনো কখনো কেন জানিনা এই কথাগুলো বলা হয়ে ওঠে না, বলতে ইচ্ছা করে না। যাইহোক এটা বুঝে গেছি যে, এই ভাবেই বাকি জীবন কাটাতে হবে। তাই মাঝে মধ্যে এই মন খারাপেই অভ্যস্ত হতে হবে। আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।