Better Life With Steem | The Diary game 12, July |বৃষ্টিতে নাজেহাল জীবন।
সকাল |
---|
গতকাল রাতেই কথা হয়েছিল যে, আজকে সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যাবো। আসলে আমার ভাগনে একটা জায়গা কিনেছে সেই জায়গা আমাদের দেখাতে নিয়ে যেতে চেয়েছে ও। শুধু আমাদেরকেই না আরো কয়েকজনকে বলেছে।
ওই জায়গাটা নাকি খুবই সুন্দর। ওর প্ল্যান ছিল সকালে আমরা কোথাও নাস্তা করে আশেপাশে কিছু সময় ঘুরাঘুরি করে দুপুরে খাবার খেয়ে আমার শশুড় বাড়িতে চলে যাবো।ওই দিকে মামাশ্বশুরও দাওয়াত দিয়েছে।
সকালে ঘুম ভেঙে দেখি ৮টা বাজে। আর জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলাম বাইরেটা একদম সাদা হয়ে আছে, এতো বৃষ্টি হচ্ছে।বুঝতে পারলাম যে এজন্যই আমার হাবি আমাকে ডাকে নাই নাহলে শশুর বাড়ির দিকের কোন জায়গায় যাওয়ার কথা থাকলে পারলে রাত ৩টার সময় টেনে তুলে।শুধু আমাকেই না, আমার সাথে দুই ছেলেকেও।
ওঠে জিজ্ঞেস করলাম যে, এই বৃষ্টিতে সবাই আসবে?তখন আমাকে বললো যে, সব প্ল্যান ক্যানসেল। ভোর ৫টার দিক থেকে নাকি বৃষ্টি হচ্ছে।
আমাকে বললো যে, সে নাস্তা করে নিয়েছে। এই কথা শুনে আমি যেয়ে আবারও ঘুমিয়ে পরি।আসলে ঘুম আসার প্ল্যান নিয়ে বিছানায় যাই নাই কিন্তু ঘুমিয়ে পরেছি।উঠেছি সাড়ে দশটার পরে। একটু পরে ছোট ছেলেকে নাস্তার কথা জিজ্ঞেস করায় সে বললো যে, নুডলস খাবে।
নুডুলস রান্না করতে গিয়ে পরলাম বিপদে। চুলায় গ্যাস নেই বললেই চলে। বেশ অনেকদিন থেকেই গ্যাস নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না।
কোনরকমে নুডুলসটা রান্না করে ওদেরকে বললাম যে, এই অবস্থায় আমার পক্ষে রান্না করা সম্ভব না। বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হবে আজকে।
দুপুর |
---|
আজকে সারাদিনই বৃষ্টির পানির কারনে জলাবদ্ধতার নিউজ সবজায়গাতে চোখে পরেছে। আমাদের এলাকার ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো। কখনোই পানি জমে না কিন্তু সামান্য এগুলেই ধানমন্ডি ২৭ নাম্বার যা পানি জমার জন্য কুখ্যাত।
দুপুরে চিকেন বিরিয়ানি অর্ডার নিয়ে খেয়েছি সবাই মিলে।
এরই মাঝে আমি এমনিই বলি যে, চল পানি দেখে আসি।তখন কি আর জানতাম যে আজকে আমাদের এমন পানি দেখতে হবে। বড় ছেলে রাজি হলেও ওর বাবা একদমই রাজী না। তার কথা হলো সবজায়গাতে পানি।
৪টার দিকে আমাদের প্ল্যান হয় আমরা কাছাকাছিই কোথাও যাবো। যদি বেশি পানি হয় তাহলে ফেরত আসবো।
বের হওয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে বড় ভাই -ভাবি এসে হাজির। ওরা বিয়ে খেয়ে সরাসরি এখানে এসেছে। এসে বললো যে, ওরা অনেক কস্ট করে গলফ ক্লাবে বিয়ে খেতে গিয়েছিলো। ওদের বেশ উচু গাড়ি তারপরও রাস্তার পানির কারনে সমস্যা হচ্ছিলো অনেক।
ওরা বাসা থেকে বের হয়েছে ১২ টার দিকে কিন্তু ওরা নাকি কোনমতে সময়মতো গিয়ে পৌছেছে। অথচ মিনিট বিশেকের রাস্তা। অনেকেই পানির কারনে বিয়েতে উপস্থিত হয় নাই। অনেক গাড়িকেই নাকি ওরা ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যেতে দেখেছে।
ওরা আসার কারনে আমাদের বের হওয়াটা ক্যানসেল হয়ে যায় আবারও।
তখনই কাজিনের বর কল দিয়ে বলে যে, আমার আরেক কাজিন এর বরের ক্যানসার বেশ অনেকদিন ধরেই। কয়েকদিন থেকেই নাকি হসপিটালে। এই কথা শুনে আমাদের মাঝে কথা হয় যে, আমরা আমাদের বোনের জামাইকে দেখতে যাবো।ভাবি ড্রেস চেঞ্জ করতে বাসায় চলে গেল।
আর তখনই ছেলে বললো যে, তুমি কি কোথাও যাবে। এই কথায় রাজী হয়ে আমরা সংসদ ভবনের আশেপাশে সামান্য ঘুরে ভাইয়ের বাসায় যাই। কারন ভাই ভাবি আমাদের সাথেই যাবে।
রাত |
---|
ভাইয়ের বাসা থেকে বের হয়ে আমরা সরাসরি সিটি হসপিটালে চলে যাই দুলাভাইকে দেখতে। সেখান থেকে বের হওয়ার আগের মূহুর্তে কথা হয় যে, আমার নয়াপল্টনে যাব। কারন আমাদের আরেক বোন থাকে নয়াপল্টনে বোন ও বোনের জামাই দুইজনই অসুস্থ। এটা আজকের দিনের জন্য আমাদের নেয়া একটা মারাত্বক ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো।
নয়াপল্টনে যাওয়ার পথে প্রচুর পানি। অথচ আমাদের তখন আর পিছানোর কোন সুযোগ নেই, সামনে যেতেই হবে আর জানাও নাই কোন রাস্তায় কত পানি। এত পানি যে, বোনের বাসার গলির মুখ থেকে ফেরত আসলাম। কারন ওইখানে আরো অনেক বেশি পানি তাই যাওয়া কোনমতেই সম্ভব ছিলো না।
তবে যেখানে বেশি পানি ছিলো ভয়ে সেই জায়গার ছবি তুলতে ভুলে গেছি। আমাদের সামনেই দুটো গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেল আর পানির উপরে গাড়ি দাড়িয়ে রইলো।আমাদের গাড়ির গ্লাসও ঘোলা হয়ে যাচ্ছিলো,দেখতে সমস্যা হচ্ছিলো ।
ভয় পাচ্ছিলাম যে আমাদের গাড়ির ইঞ্জিনও বন্ধ হয়ে না যায়। এছাড়া যদি ইন্জিন বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এই রাতের বেলা এত পানির মাঝেকি অবস্থা হবে এছাড়া গাড়ির ক্ষতিতো আছেই। আমি অনেকবারই পানির মাঝে চলাচল করেছি কিন্তু আজকের পানির মতো এত পানির মাঝে আমি কখনো চলাচল করি নাই।
আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে পানি পার হয়ে ভালো রাস্তার ওপর এসে পরলাম।বাসায় ফিরতে ফিরতে সাড়ে দশটার বেশি বেজে গেল। এরপর ভাত আর ডিম ভুনা করে দিলাম ওদেরকে ।আগের দিনের ডাল ছিলো ফ্রিজে।এরই মাঝে ডিসকর্ডে ঢুকে দেখলাম হ্যাং আউট চলছে কিনা কিন্তু দেখলাম শেষ হয়ে গেছে। তাই ডায়েরি গেম লেখা শুরু করলাম।
বর্ষায় ভেজা সকাল দিয়ে শুরু হলো আপনার দিন। বাংলাদেশে এখন প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে আর এই বৃষ্টির কারণে ঢাকায় কয়েকটি অঞ্চল পানির নিচে হাবুডুবু খাচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের ফেলে দেওয়া বিভিন্ন প্লাস্টিক নর্দমার মুখ আটকে গিয়ে পানি উপরে ঠেল লাগছে।
আপনাদের এলাকাটা অনেকটাই উঁচু তাই পানি হলে আপনাদের খুব একটা সমস্যা হয় না। আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটি দিনের কার্যক্রম খুব ভালোভাবেই আমাদের কাছে উপস্থাপনা করার জন্য।
একদম ঠিক বলেভ্যেন যে ,আমাদের এই দুর্দশার পেছনে অনেকটাই আমাদের হাত রয়েছে। আমরা নিজেরা সচচেতন হলে এতটা দুর্ভোগের শিকার হতে হয় না আমাদের।
তবে ড্রেনেজ সিস্টেম ঠিক হওয়াটাও জরুরি। আগে ধানমন্ডি ২৭ নাম্বার পানিতে ডুবে থাকতো কিন্তু এখন দ্রুতই পানি নেমে যায়।
নিজেদের সচেতনতার সাথে সাথে এই বিশেষ কয়েকটা এলাকার ড্রেনেজ সিস্টেমও ঠিক হওয়া জরুরি।
আপনার সারাদিনের কার্যক্রম দেখে খুব ভাল লাগল, ঢাকা শহরের অনেক জায়গায় সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়, মানুষের চলাফেরা অনেক কষ্ট হয়ে যায়, আপনার এলাকায় পানি জমে দেখে ভাল লাগল। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
পানি জমে দেখে আপনার ভালো লাগলেও আমার কিংবা যারা এই এলাকাতে বসবাস করে তাদের ভালো লাগে না। বিষয়টা খুবই দুঃখজনক এবং এই কারণে প্রচুর সি এনজি ,গাড়ি নষ্ট হয়েছে ,এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
আপনাকে অসংখ্য ভাবে ধন্যবাদ জানাই আপনি আপনার সারা দিনের কার্যক্রম আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন এবং আপনার ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ছিল। এবং যে পরিমাণে বৃষ্টিতে পুরো এলাকার ডুবে গেছে, সেটা দেখে খুব খারাপ লাগছে দোয়া করি খুব দ্রুত এ পানিগুলো সরে যাক।