উপস্থিতির প্রকার ভেদ! (Different types of presence!)

in Incredible Indialast month (edited)
1000041029.png

প্রত্যেকেই শিক্ষা জীবনে এমন অনেক শিক্ষক তথা শিক্ষিকার ক্লাস করেছেন, যেখানে আপনি হয়তো শারীরিক ভাবে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সেই শিক্ষিকার পোড়ানোর ধরন অথবা অন্যান্য কারণে, আপনার মানসিক উপস্থিতি হয়তো সেই মুহুর্তে শিক্ষিকার পড়ানোর পদ্ধতির দিকে ছিল না!

মনে মনে হয়তো ভাবতেন কখন ক্লাস শেষের ঘণ্টা পড়বে?
উপরিউক্ত উদাহরণ দেবার কারণ হয়তো অনেকেই বুঝেছেন, আবার অনেকে নাও বুঝে থাকতে পারেন!

সেই কারণে, আমি আজকের লেখার শীর্ষক এর যথার্থতা নিজের মতো করে উপস্থাপনের প্রয়াস করছি।

একটি মানুষ আলোচনার অঙ্গ মানেই তার উপস্থিতি কিন্তু গণনার মধ্যে পড়ে না, হয়তো মাথা গুনতে গিয়ে তাকে আমরা একজন সদস্য হিসেবে দেখি, কিন্তু উপস্থিতির সংজ্ঞা মানে শুধু শারীরিক নয় মানসিক উপস্থিতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

উদাসীনতা কিন্তু একটি অভ্যেস, যেটি নিজের অজান্তেই আমাদের উন্নতির পথে এমন একটি বাধা, যেটি চিকিৎসার দ্বারা নিরাময় সম্ভব নয়!

আরেকটি বিষয় হলো, যখন আমরা শিক্ষা জীবনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম, বা যারা এখনো যাচ্ছে, তাদের মধ্যেও বৈশ্যমতা রয়েছে অনেক;
একজন দায়সারা করে পড়াশুনা করছে, আরেকজন স্বপ্ন দেখছে জীবনে ভালো মানুষ হবার, পারিবারিক তথা সামাজিক উন্নয়নের জন্য কিছু করা।

কিছু মানুষ আছেন, যারা অনেকের কথা, এবং জীবন দর্শন, কাজের পথ প্রশস্থ করবার উপায় ইত্যাদি বিষয়গুলোকে সময় নষ্ট বলে মনে করেন।

আর এই বিষয়টি মাথায় রেখে যখন ডিস্কোর্ড এ বেশ কয়েকদিন আগে সংখ্যা গরিষ্ঠতার নিরিখে সকলের অভিমত জানতে চেয়েছিলাম, সেখানে সমর্থনের হার, আমার আজকের শীর্ষক কে সত্য প্রমাণ করে দিয়েছে।

এখানে যেহেতু নিজেদের উপার্জন একান্তই নিজেদের, কাজেই কে কিভাবে সেই পথ প্রশস্ত করবে, সেই সিদ্ধান্ত একান্তই নিজস্ব।

তবে, আমি আগেও বলেছি বহুবার, পৃথিবী গোল, এবং আমরা সেটাই ফিরে পাবো, যেটি অন্যের সাথে করবো।
সেটা ভালো না মন্দ এই বিচারভার সৃষ্টিকর্তার।

তবে, আজকে আপনাদের কর্মফল নিয়ে একটি বাস্তব ঘটনা ভাগ করে নেবো।

1000039642.jpg
1000039641.jpg
1000039640.jpg
(কর্মফলের পরিভাষার পাঠ অনেক আগেই শিখিয়েছো প্রভু, তবে লোভের বশবর্তী হয়ে মানুষ আজ অনেক কিছুই ভুলতে বসেছে)

হয়তো, আপনাদের দেখা অনেক নজির আছে, যদি সময় সুযোগ হয়, মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

ঘটনাটি আজ থেকে ৭০ বছর আগেকার। যেখানে আমার মেজো মাসীর বাড়ি সেখানে এক্ ব্যাক্তির জীবনের ঘটনা তুলে ধরছি।

যে সময়ের কথা বলছি, সেই সময় ওই ব্যক্তি ছিল সেই জায়গার জমিদার।
পেল্লাই বাড়ি সহ, বিঘা বিঘা জমির মালিক।

এরপর, তার উত্তরসূরিরা সোনার চামচ মুখে নিয়ে পৃথিবীতে পদার্পণ করে, এবং যেটা হয়;
বাঁশ গাছের গোড়া থেকে বাঁশ গাছই জন্মায়।

আমাদের মানসিকতা বিকাশের প্রথম পাঠশালা তো ঘর! তাই গোড়ায় গলদ থেকে গেলে, সেটি পরবর্তীতে পরিবর্তন সম্ভব নয়।

যাইহোক, পিতার পদাঙ্ক অনুসরন করে, ছেলেরা সময়ের সাথে বড় হচ্ছিল।
কিছু নেশা এমন, চাইলেও হয়তো সেখান থেকে বেরিয়ে আসা অসম্ভব, বিশেষত যদি সেটা বংশ পরম্পরায় প্রবেশ করে।

একাধিক পুত্র সন্তান পেয়ে সেই ব্যক্তি ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেন! কারণ বংশ রক্ষার মানুষ আছে, সম্পত্তি রক্ষার জন্য হাতের লাঠি আছে, আর কি চাই?

এরপর ছেলেরা বড় হতে হতে পিতার মতই বিভিন্ন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে, এবং সেই নেশা বহাল রাখতে এক্ এক্ করে জমি বিক্রি শুরু হয়।

এরপর, পিতা আক্রান্ত হয় এক্ কঠিন ব্যাধিতে, সেই সুযোগে নিজের ছেলেরা বাবার থেকে সবটা লিখিয়ে নেয়।

যে মানুষের ভিত মজবুত নয়, এবং গর্হিত কাজ যাদের দৈনন্দিন অভ্যেস, তাদের পিছনে সুযোগ সন্ধানী পড়বে না, এমনটা কি এই যুগে সম্ভব?

যথারীতি, নেশার অর্থ জোগাতে এক্ এক্ করে, কিছু অসাধু বন্ধু বেশ কিছু দামী জায়গা, দোকান লিখে নেয়!

এরপর পিতার মৃত্যুর পর, ওই বংশের ছেলেরাও এক এক করে মারা যায়, এবং বর্তমানে এক্ সময়ের সেই রাজবাড়ী মানব শূন্য হয়ে দাড়িয়ে, জীবনের পরিণতির শিক্ষা বিলিয়ে বেড়াচ্ছে নির্বাক হয়ে।

সবসময় আপনার হয়ে কথা বললেই যে, সে আপনার হিতপদেশী সেটা ভাবা নির্বুদ্ধিতা।
তেমনি, কেউ আপনার বিরুদ্ধচারন করলেও বোঝার বিষয় হলো, সেটা কার মঙ্গলের জন্য।

আজকে কথাগুলো লিখছি কারণ, এই প্ল্যাটফর্মে অনেকের অনেক ভালো চেয়ে কিছু নিঃস্বার্থ কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, কেউ নামেই উপস্থিতি দেখিয়ে ব্যাক্তিগত কাজে ব্যস্ত, আবার কারোর যে সময় অপচয় হচ্ছে সেটা ভাব ভঙ্গিতে বুঝিয়ে দেওয়া, সব মিলিয়ে এটাই পরিশেষে বলতে চাই, আমরা সব কিছুই বুঝি, কিন্তু সবটা হারাবার পর।

1000040585.jpg
1000040584.jpg
1000040583.jpg
(সুগন্ধী ফুল কিন্তু বেশীরভাগ সময় পুজোয় নিবেদিত হয় না, ঠিক নকল শুভাকাঙ্ক্ষীর ন্যায়)

এখনও কাজের মাঝে কেউ ফোন করলে, যদি বুঝি কাজটি সামান্য দেরি হলে খুব বেশি ক্ষতি নেই, তাহলে মনোযোগ দিয়ে অপরপক্ষের কথা শোনবার প্রয়াস করি, এবং চেষ্টা করি নিজের মতো করে তাকে নিজের মতামত পোষণ করার।

আর যদি নিদেনপক্ষে সেটা অসম্ভব হয়, অনুরোধ করে কিছু সময় চেয়ে নিয়ে নিজেই পরে ফোন করে নিয়ে বিষয় জেনে নিই।

যারা আলোচনার পরিভাষা বোঝেন তারা হয়তো বুঝবেন, একজন ভালো বক্তা হতে হলে, সর্বাগ্রে ভালো শ্রোতা হবার প্রয়োজন।

আর ঠিক এইখানেই উপস্থিতি হতে হয়, শারীরিক তথা মানসিক দিক থেকে একইরকম।
চলার পথে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের সহচর্যের সুযোগ পেয়েছি, তবে সেখান থেকে শিক্ষামূলক বিষয়গুলোকেই জীবনের পাথেয় করে চলছি আজও।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  
Loading...
Loading...