দ্বিচারিতা! (We must steer clear of duplicity)
আজকের লেখার জন্য আমি একটি শব্দকে শীর্ষক হিসেবে বেছে নিয়েছি এবং তার ইংরিজি মানেটা অনেকের বোঝার সুবিধার্থে দিয়েছি!
লেখাটি হয়তো আজকে বাংলায় লিখছি, কিন্তু বার্তাটি আসলে সকল মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করেই লেখা।
দ্বিচারিতা |
---|
প্রতিদিন আমরা শুধু অন্যের নয়, নিজের সাথেও দ্বিচারিতা করে থাকি!
বিনা উদাহরণ দিয়ে কিছু আমি কখনও লিখিনা, কাজেই, এই ব্যাপারেও অন্যথা হবে না!
ভালো নেই, তবুও ভালো আছি বলা; এটা আমরা প্রতিদিন করে থাকি, যেটা নিজের সাথে নিজের দ্বিচারিতা, এবং সামনের জনের সাথে তো বটেই!
বাড়িতে একপাল লোকজন, মানে ওই আত্মীয় স্বজন, বলা নেই কওয়া নেই দুম করে এসে উপস্থিত! 🙆সবে হাতের কাজ সেরে উঠেই, ক্লান্ত শরীর তথা মন নিয়ে যখন আমরা বলি, বিশ্বাস করো আজকেই তোমাদের কথা ভাবছিলাম, কতদিন দেখা হয় না! আমি তো আজই ফোন করতাম!
এটাকে কি বলে?
- দ্বিচারিতা।
একেবারেই অপছন্দের! মনের একফোঁটা মিল নেই; তৎসত্ত্বেও দেখেই এক গাল হাসি, অথচ মনে মনে কুকথা চালিয়ে যাওয়া!
এটাকে কি বলে?
- দ্বিচারিতা।
রান্নাটা মুখে দেবার মতো নয়, তবুও কেমন হয়েছে জানতে চাইলে গালভরা হাসি নিয়ে, দুর্দান্ত হয়েছে!
এটাকে কি বলে?
- দ্বিচারিতা।
এখন এই যে উপরিউক্ত উদাহরণ গুলো দিলাম, এগুলো দ্বিচারিতার অন্তর্ভুক্ত হলেও সভ্য সমাজের অঙ্গ হিসেবে এবং কোথাও শালীনতার তথা শিক্ষার চাপে পড়ে আমাদের করতে হয়।
সম্পর্ক বাঁচাতে গিয়ে হোক, অথবা সংসার বাঁচাতে গিয়েই হোক না কেনো! এগুলোকে কম বেশি অনেকেই অনুসরণ করে থাকেন।
কাজেই, উল্লেখিত বিষয়গুলো তবুও খানিক মেনে নেওয়া যায় ব্যাক্তি জীবনের কিছু কিছু সময়।
তবে, এই সুবাদে জানিয়ে রাখা শ্রেয়, আমি কিন্তু উপরের কাজগুলো করতেও অদক্ষ!
মানে ধরুন কেউ এমনি হঠাৎ করে আসলে আমি বলেই দেবো, জানোই তো, একা থাকি!
একটু জানিয়ে আসতে পারতে, তাহলে তোমাদের খাবারের ব্যবস্থা একা হাতে করতে সুবিধা হতো, কারণ বাজার টাও তো আমাকেই করতে হয়!😬
আর ঠিক সেই কারণটা বুঝেই বোধহয় সম্পা ট্রেন থেকে নেমে কিছু আনতে হবে কিনা জানতে চেয়ে ফোন করতে ভুলে যায় না!😄 মজা করলাম, কারণ, ও এমনিতেই অনুমতি না নিয়ে ফোনই করে না, আসা তো দুরস্ত!
কোনো মানুষের আচরণ পছন্দ না হলে, আমার মুখ দেখেই সে বুঝে যায়, আলাদা করে ভাষায় কিছু বলে দিতে হয় না, আর বললেও সত্যি অনুভূতি বেরিয়ে আসবে! যারা জানে, তারা জানে!
রইলো বাকি রান্না ভালো মন্দ, সেক্ষেত্রে আমি হয়তো কিভাবে সেটাকে আরও ভালো করা যেতো, বিনা খরচে সেই উপদেশ বা জ্ঞান দিয়ে দিতাম।
(সূর্য্য কিন্তু তার কিরণ ভেদাভেদ ছাড়াই বিকিরণ করে থাকে, প্রকৃতি কিন্তু দ্বিচারিতা করা শেখায় না) |
---|
উপরের বিষয়গুলোকে বাদ দিয়েও এক শ্রেণীর দ্বিচারিতা বহনকারী মানুষের দল আছে এই সমাজে যারা পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকারক, কেবল সমাজের জন্য নয়।
- দু'মুখো সাপ বলে একটা প্রচলিত কথা আছে এরা সেই শ্রেণীভুক্ত!
আমরা অনেকেই ভাবি বয়সের সাথে সাথে আমাদের বিচার, বুদ্ধি, আমাদের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায়;
কারণ, সমাজের সাথে, জীবনের সাথে সংঘর্ষ করতে করতেই এগুলো সময়ের হাত ধরে, আমাদের পাথেয় হয়ে যায়।
তবে, আজকে আপনাদের জানিয়ে রাখি, প্রবাদে আরও একটি কথা বেশ প্রচলিত আর সেরা হলো -
কারণ, বয়স বৃদ্ধি পেলেও স্বভাব মানুষের আমৃত্যু একই থেকে যায়। যার বীজ বপন সেই শৈশবেই হয়ে গেছিলো!
আজ সেটা বীজ অনুযায়ী ফল ধারণ করছে।
ইতিপূর্বে একাধিকবার আমি লেখায় উল্লেখ করছি, আমি মানুষকে বিশ্বাস করি, এটা আমার স্বভাব;
কিন্তু, কেউ যদি আমার পিঠে ছুরিকাঘাত করে সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করে, তাহলে সেটা তার স্বভাব!
দুটোই কিন্তু সৃষ্টিকর্তার গোচরে রয়ে যায়।
নিজের ঢাক পেটাচ্ছি, এটা মনে করবেন না, তবে যারা এতদিন আমার সাথে কাজ করছেন, আর যারা খানিক ব্যাক্তি আমাকেও জানে, তাদের কাছে একটা বিষয় স্পষ্ট আর সেটা হলো, আমি স্পষ্টভাষী, স্পষ্টবাদী।
যেটা পিছনে আলোচনা করবো, সামনে বলার সাহস আমি রাখি। এটা আমি করে থাকি নিজের বিবেক, তথা সৃষ্টিকর্তার কাছে পরিষ্কার থাকার জন্য, কোনো মানুষের কাছে নয়।
যাইহোক, অনেকেই হয়তো আজকে আমার লেখা পড়ে অবাক হতে পারেন, কারণ আজকের লেখাটা আমার একটা তিক্ত অভিজ্ঞতার প্রতিফলন।
(জীবনের হিসেব মিটিয়ে তবেই ছুটি! কথাটা সকলের মাথায় রাখা উচিত। জীবন কিন্তু প্রতিদিন চব্বিশ ঘণ্টা কেড়ে নেবার সাথে সাথে, নিজেদের পরিবর্তনের সুযোগ ও দিয়ে যায়) |
---|
কারোর বিশ্বাস, কারোর আবেগ, কারোর অনুভূতি, কারোর আস্থা, কারোর সম্মান এইগুলোকে নিয়ে ছেলেখেলা না করাই বাঞ্ছনীয়।
আমরা সচক্ষে কেউ সৃষ্টিকর্তাকে না দেখতে পেলেও, আমি বিশ্বাস করি আমাদের মনেই তিনি জায়গা করে নেন, আমাদের আচরণের উপরে ভিত্তি করে।
তাই কিছু মানুষ বিপদে পড়লেও দেখবেন নীতি ঠিক থাকলে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন;
আবার কিছুজন সেটা পারেন না।
একান্তই নিজস্ব অভিমত প্রকাশ করলাম, কাজেই অনেকেই সহমত পোষন নাই করতে পারেন।
দ্বিচারিতা নিয়ে দারুন লিখেছেন, আমার কাছে বিষয়টা খুব ভাল লেগেছে, আমরা সবাই মিথ্যা অভিনয় করে থাকি, মনের মধ্যে বিরক্তি ভাব থাকলেও উপরে হাসি মুখে কথা বলার চেষ্টা করি, এটা নিজের মনকে কষ্ট দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়। যারা সমাজে মিথ্যা অভিনয় করে তাদেরকেই সবাই বাহবাহ দেয়, যারা প্রকাশ্যে সত্য কথাটা বলে দেয় তাদেরকে অপরাধী মনে করা হয়। মূলত যারা সবার সামনে সত্য কথা বলে দেয় তারাই প্রকৃত মানুষ, যদিও সাময়িক ভাবে দোষী হয়, কিন্তু পরবর্তিতে তারাই ভাল মানুষ হিসেবে সামনে আসে। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!