আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন [10% ʙᴇɴᴇғɪᴄɪᴀʀɪᴇs ғᴏʀ @sʜʏ-ғᴏx🦊]

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন

অজানাকে জানার নেশা প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের মধ্যে ছিলো। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ প্রযুক্তির ব্যবহার করে আসছে কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির যে আবিষ্কারগুলো হচ্ছে সেগুলো সত্যিই বিস্ময়কর। প্লেন আবিষ্কার এর পর থেকেই মানুষকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে আমরা অজানাকে আরো নতুন ভাবে জানতে পেরেছি। এরপর থেকেই আমরা মহাকাশ নিয়ে গবেষণা শুরু করি এবং বিভিন্ন ধরনের বিস্ময়কর চিত্র আমরা দেখতে পাই। সূর্য থেকে শুরু করে আমাদের সৌরজগৎ, ছায়াপথ, ব্লাক হোল ইত্যাদি সম্পর্কে আমরা ধারণা পাই। মানুষ নির্মিত সবচেয়ে বড় কৃত্তিম উপগ্রহ সেটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। আজ মহাকাশ স্টেশন সম্পর্কে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

international-space-station-67647.jpg

Image Source

siam,.png

মহাকাশে স্টেশন তৈরি হচ্ছে খুব বেশি বছর হয়নি কিন্তু এটিকে তৈরি করার পরিকল্পনা প্রায় ১৯ শতকের প্রথম দিক থেকেই চলে আসছে। বিভিন্ন ধরনের মতবাদ বিভিন্ন ধরনের গবেষণার পর ১৯৯৩ সালে মহাকাশ স্টেশন তৈরির পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে একটি দেশ মিলে এই স্পেস স্টেশনটি তৈরি করা খুব বেশি জটিলতা দেখা যায়। সর্বপ্রথম আমেরিকা এবং রাশিয়ার তাদের স্যাটেলাইট গুলো একটি কনভাটার এর মাধ্যমে কানেক্ট করে মহাকাশ স্টেশন চালু করেন এবং তার নাম দেন আই এস এস। এই মহাকাশ স্টেশন টি একটি ফুটবল মাঠের চেয়েও বড়। আপনারা অনেকেই মনে করতে পারেন এত বড় স্পেস স্টেশন আকাশে কিভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে? তো আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি বিভিন্ন খন্ডে টুকরো টুকরো অবস্থায় মহাকাশে নিয়ে যাওয়া হয় তারপর থেকে জোড়া লাগিয়ে আজকের এই স্পেস স্টেশনটি তৈরি করা হয়েছে। এই মিশন কমপ্লিট করতে তিন ধরনের রকেট ব্যবহৃত হয়েছে, যার দুটি রাশিয়ান এবং একটি আমেরিকান। এই রকেটগুলো না থাকলে হয়তো আজকে মহাকাশে স্টেশন তৈরি হতো না।

international-space-station-975.jpg

Image Source

siam,.png

প্রথমের দিকে মহাকাশ স্টেশনে মানুষ থাকার উপযুক্ত ছিল না কিন্তু বর্তমানের মহাকাশ স্পেস স্টেশনে সবসময় ৬ জন ব্যক্তি অবস্থান করেন। এখন পর্যন্ত মহাকাশ স্টেশনে ৩৫০ জনেরও বেশি মহাকাশচারী যাতায়াত করেছেন। একটি মহাকাশচারীর কমপক্ষে ছয় মাস সেখানে থাকতে হয় এবং কেউ কেউ এক বছর থাকেনন। সেখানে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করা হয়। মহাকাশ স্টেশনে এখন প্রযন্ত ১৪ জন মহাকাশচারী দুর্ঘটনার কারণে মারা গিয়েছিলেন। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যতই নিরাপত্তা পদ্ধতি অবলম্বন করা হোক না কেন, বিপদের আশঙ্কা সবসময় লেগেইই থাকে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে।

satellite-693222.jpg

Image Source

siam,.png

মহাকাশ স্টেশন তৈরীর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেসব গবেষণা আমরা পৃথিবীতে বসে করতে পারি না সেসব গবেষণা মহাকাশেই করা হয়। বিভিন্ন ধরনের মহাকাশ বস্তুর উপর নজর রাখা হয়, মোট কথা বলতে গেলে পৃথিবীর বাইরে পরিবেশ কেমন হবে, সে ক্ষেত্রে মানুষ কিভাবে বসবাস করবে, মানুষের মধ্যে কি রকম পরিবর্তন আসতে পারে এসব কিছু বিষয় নিয়ে মহাকাশ গবেষণাগারের গবেষণা করা হয়। অনেক ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা এই গবেষণাগার থেকে জানতে পেরেছি। যে গুলো পৃথিবীতে গবেষণা করা একদম অসম্ভব ছিল। সেখানে যারা নভোচারী রয়েছেন তাদেরকে প্রত্যেকদিন ২ ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হয় তা না হলে সেখানে গ্রাভিটি না থাকার কারণে তাদের শরীরের ভীষণ রকম অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে। যেসব মহাকাশচারীকে স্পেস স্টেশনে পাঠানো হয় তাদের অনেক আগে থেকেই এই বিষয়গুলোর উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

travel-3291752.jpg

Image Source

siam,.png

আগেই বলেছিলাম কোন একটা দেশের পক্ষে এত বড় একটি প্রজেক্ট সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব ছিল। এই স্ট্রেশন তৈরিতে ১৫ টি দেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এদের মধ্যে আমেরিকা, রাশিয়া, কানাডা, জাপান উল্লেখযোগ্য। মহাকাশে স্টেশন পৃথিবীর অনেক কাছ দিয়েই প্রদক্ষিণ করে। যখন সে পৃথিবীর অনেক কাছে চলে আসে তখন নিচের অংশ থেকে একটি ফায়ার করা হয়। যার কারণে মহাকাশে স্টেশনটি আবার তার নিজের কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। এই মহাকাশে স্টেশন এক ঘন্টায় প্রায় ২৮০০০ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। এই গতিতে পৃথিবী কে অতিক্রম করতে মাত্র ৯২ মিনিট সময় লাগে। ২৪ ঘন্টায় মহাকাশ স্টেশনে ১৬ বার সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় দেখতে পারে। তাই এখানে দিন ও রাত বলতে কিছু নেই। এই ছিল মোটামুটি মহাকাশে স্টেশন সম্পর্কে বেসিক ধারণা। আশা করি আপনাদের এই বিষয়টি ভালো লেগেছে।

eat-11114.jpg

Image Source

siam,.png

আমি আগে প্রতিনিয়ত মহাকাশ নিয়ে নানান ধরনের পোস্ট করতাম। আপনাদের উৎসাহ পেলে এখন থেকে আবারও সেই আগের মতো মহাকাশ এবং বিভিন্ন ধরণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2021-06-28_11-13-39.jpg

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.........

Sort:  
 3 years ago 
আপনার মহাকাশ নিয়ে লেখা গুলো প্রতিনিয়ত আরো বেশি প্রখর হচ্ছে।এবং এত চমৎকার করে তথ্যবহুল পোস্ট আপনার কাছ থেকে এর আগেও পেয়েছি।মহাকাশ নিয়ে আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু নতুন করে শিখতে চাই জানতে পারছি।যেমন আজকের মহাকাশ স্টেশন।আপনার জ্ঞানের পরিধি আরো সমৃদ্ধ হোক এই দোয়া করি প্রতিনিয়ত♥♥
 3 years ago 

আমি ভাবছি এখন থেকে প্রতিনিয়ত মহাকাশ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব,, আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।।।

 3 years ago 

সিয়াম ভাই আপনার পোষ্ট থেকে বেশ কিছু নতুন তথ্য জানতে পারলাম। আই এস এস যে একটি ফুটবল মাঠের সমান বড় এই তথ্যটা জানা ছিল না। সেইসঙ্গে আগে জানতাম 24 ঘন্টায় পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে ২ বার এখন জানলাম 16 বার প্রদক্ষিণ করে। কিছুদিন যাবত শুনতে পাচ্ছি রাশিয়া এই আইএসএস প্রজেক্ট থেকে বেরিয়ে আসবে। তারা আর কোনো সহযোগিতা করবে না। পৃথিবীর ধনী রাষ্ট্রগুলো যদি সামরিক ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় না করে মহাকাশ গবেষণায় ব্যয় করত তাহলে এতদিন হয়তো মানুষের মঙ্গল বিজয় সম্পন্ন হয়ে যেত। যাই হোক আমার ধারনা এই ধরনের পোস্টে উৎসাহ দেয়ার মত খুব বেশি লোক পাবেন না। বেশিরভাগ সদস্যদের দৌড় বড়জোর রেসিপি আর diy পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। আশা করি হতাশ হবেন না। আস্তে আস্তে পরিবর্তন আসবে

 3 years ago 

চেস্টা করবো নতুন কিছু উপস্থাপন করার জন্য।