স্মৃতির পাতায় কক্সবাজার
বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই থেকে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে আমি যেখানে অবস্থান করছি সেখানে বর্তমানে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে এত বৃষ্টিপাত হওয়ার পরেও গরম কিন্তু কমছে না। তবে এই বৃষ্টিগুলো অনেক ইনজয় করা যায় বিশেষ করে বারান্দায় বসে যদি চা কিংবা কফি হাতে নিয়ে এই বৃষ্টি গুলো দেখা যায় তাহলে সেটা আলাদা একটা অনুভব আর ক্রিয়েট করে বলে আমি মনে করি। এছাড়াও অতীতে যেসব সময় অনেক ভালো কাটিয়েছি সেসব সময়ের মধ্যেও হারিয়ে যাই। আজ এ তেমনি একটি সময়ে বৃষ্টি দেখার সময় হঠাৎ করে কক্সবাজারের কথা মনে পড়ে গেল। কক্সবাজার আমার অনেক প্রিয় একটি জায়গা এবং সেখানে আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি কিন্তু তারপরও বারবার সেখানে ছুটে যেতে ইচ্ছে করে।
সর্বশেষ ২০২২ সালে কক্সবাজার গিয়েছিলাম এবং সেখানে প্রায় চার দিনের মতো অবস্থান করেছিলাম। এই চার দিনে কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়েছি, বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়েছি, নতুন নতুন মানুষের সাথে মিশেছি এবং সব থেকে মজার বিষয় ছিল কক্সবাজারের আঞ্চলিক খাবার খেয়েছি। যেটা অনেক সুস্বাদু ছিল। বিশেষ করে আমরা যারা ঢাকা কিংবা উত্তরাঞ্চলে বসবাস করি তারা সাধারণত সমুদ্রের মাছ তেমন একটা খাওয়ার সৌভাগ্য হয় না কিন্তু যারা কক্সবাজার কিংবা চট্রগ্রাম অঞ্চলে থাকে তারা প্রতিনিয়তই এই সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার সৌভাগ্য হয়ে থাকে।
কক্সবাজারের ঘুরে বেড়ানো, বীচে হাটাহাটি করার এগুলো অনেক আনন্দময়ী মুহূর্ত ছিল। এছাড়াও কক্সবাজারের বিভিন্ন ধরনের মিউজিয়াম রয়েছে এবং সবথেকে ভালো যেটা লেগেছিল সেটা হচ্ছে সামুদ্রিক মাছের একুরিয়ামের মিউজিয়াম ছিল। সেখানে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ ছিল যা দেখতে শত্তি অসাধারণ লেগেছিল। কক্সবাজার ও ছোটখাটো কিছু পাহাড় রয়েছে সেসব পাহাড়ে উঠার চেষ্টা করেছি। হীমছড়িতে গিয়েছি, লাবনী পয়েন্টে গিয়েছে মোটকথা এই চার দিনের সময় গুলো ইনজয় করেছি।
প্রতিদিন রাতের বেলায় বীচের পাশে গিয়ে বসে থাকতাম এবং সমুদ্রের গর্জন শুনতাম। সত্যিই সেই সময়টা অদ্ভুত ছিল এবং এর যে অনুভূতিগুলো ছিল সেগুলো আসলে কখনোই ভাষায় প্রকাশ করার মত হবে না। সন্ধ্যা থেকে রাত ৯-১০ টা পর্যন্ত সেই সমুদ্রের পাশেই বসে থাকতাম এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুভব করতাম। এছাড়াও আমরা যে জায়গায় অবস্থান করেছিলাম তার পাশেই ছিল একটি কমিউনিটি সেন্টার। যার কারণে প্রতিনিয়তই কোন না কোন বিয়ে কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠানের কর্মসূচি থাকতো। সেখানে বিভিন্ন ধরনের গায়ক আসতো এবং তারা সেখানে পারফর্ম করত, সেই জায়গাগুলো অনেক বেশি ইনজয় করেছি।
কক্সবাজারে যাওয়ার পরে বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করেছিলাম এবং ভিডিওগ্রাফিও করার চেষ্টা করেছিলাম। তবে এই ভিডিওগ্রাফি গুলো একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করবো বলে এখনো সেটা এডিট করা হয়নি। আসলে ব্যস্ততার কারণে সবকিছুই কেন যেন প্লানিং মত হয় না। তাই যাই হোক সেটা পরবর্তীতে করার চেষ্টা করব। সর্বশেষ দিনে আমরা গিয়েছিলাম মহেশখালীতে। মহেশখালী কক্সবাজারের একটি উপজেলা এবং সেখানে যেতে হলে স্পিডবোটে করে যেতে হয়। সেটা অনেকটা দ্বীপের মতো চারিদিকে সমুদ্র মাঝখানে সেই মহেশখালী উপজেলা এবং সেখানে বিভিন্ন ধরনের ছোট খাটো মন্দির রয়েছে। তাদের হাতে তৈরি করা বিভিন্ন ধরনের পোশাক রয়েছে যেগুলো কয়েকটি কেনার চেষ্টা করেছিলাম।
মহেশখালীতে ছোট বড় অনেক পাহাড় রয়েছে কিন্তু বেশ কিছু পাহাড়ের একদম চূড়য় রয়েছে বিশেষ বিশেষ কিছু মন্দির। সেখানেও যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। যদিও সেই বিষয়গুলো একবার আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিলাম। আমার যতদূর মনে পড়ছে তার মধ্যে একটি ছিল সোনার মন্দির অর্থাৎ মন্দিরটা সোনা দিয়েই তৈরি করা হয়েছিল। জানিনা বর্তমানে তার কি অবস্থান রয়েছে। তবে আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন বাইরে থেকেই আমরা দেখেছিলাম, ভিতরে প্রবেশ করার মতো কোনো অবস্থা ছিল না।
সব মন্দির দেখা শেষে আমরা গিয়েছিলাম শুটিং ব্রিজ দেখতে। অনেক বড় এবং বিভিন্ন ধরনের সিনেমার শুটিং হয় শুটিং ব্রিজ এ। এই জায়গাটা এতটা অসাধারণ যা না দেখলে কেউ ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারবেন না, সেখানেও বেশ কিছু সময় থেকেছি। মহেশখালীর আরেকটি বিখ্যাত জিনিস রয়েছে সেটা হচ্ছে পান। আমি কখনোই পান খাইনি তবে মহেশখালীতে যাওয়ার পরে মিষ্টি পান ট্রাই করেছিলাম। সেটা সত্যিই অসাধারণ ছিল এবং পানের মধ্যেই তারা আগুন লাগিয়ে দেয় যা দেখতে অনেকটা মজা লাগে।
আসার সময় আবার আমাদের স্পিডবোটটি নষ্ট হয়ে যায় একদম সমুদ্রের মাঝপথে। আমরা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম পরবর্তীতে যেই স্পিডবোর্ডের চালক রয়েছে তিনি ঠিক করে আবার আমাদের নিজস্ব গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। সত্যিই এই জার্নিটা অসাধারণ ছিল যেমনটা এনজয় করেছি ঠিক তেমনটা এক্সপ্লোর করতেও পেরেছিলাম। আবার যদি কখনো সুযোগ হয় তাহলে চলে যাব সেই কক্সবাজার এবং সেই বিষয়গুলো আবার অনুধাবন করব, জায়গাগুলো এতটাই সুন্দর। আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: স্মৃতির পাতায় কক্সবাজার
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
স্মৃতির পাতায় কক্সবাজার শিরোনামের এই স্মৃতিচারণ পোস্টটি আমার মনের মাঝেও অনেক স্মৃতি জাগিয়ে তুলল। কারণ স্মৃতিময় যে মুহূর্তগুলোর কথা তুমি এখানে লিখেছ প্রতিটি মুহূর্তে আমি তোমার পাশে ছিলাম। এবং দারুণভাবে উপভোগ করেছিলাম সময় গুলো।
তোমার ভিডিও গুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থেকো,অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা💞
ঠিক বলেছ আম্মু, আমরা সবাই মিলে অনেক ইনজয় করেছিলাম সেই সময়গুলোতে।
এটা ঠিক আমরা অনেক মজা করেছিলাম সবাই মিলে। সেই সমুদ্রে গোসল করা থেকে শুরু করে, কলা খাওয়া থেকে শুরু করে, মহেশখালীর আগুন পান সত্যিই দারুণ উপভোগ করেছিলাম আমরা। 💞
আসলেই কক্সবাজার এমন একটা জায়গা, বারবার গেলেও মন ভরে না। সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত সিটে শুয়ে শুয়ে সমুদ্রের গর্জন শুনতে এবং চারপাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে ভীষণ ভালো লাগে। আমি কক্সবাজার বেশ কয়েকবার গেলেও, মহেশখালী ১ বারও যাওয়া হয়নি। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইচ্ছে ছিলো কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যাবো,কিন্তু শেষ পর্যন্ত যাওয়া হয়নি। যাইহোক বৃষ্টিমুখর দিনে দারুণভাবে কক্সবাজারের স্মৃতিচারণ করেছেন। পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
দেখি, আমি পরিকল্পনা করছি আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা শেষে কোথাও থেকে ঘুরে আসবো।
হ্যাঁ ভাই সেটাই ভালো হবে। কারণ ঘুরাঘুরি করলে মন ফ্রেশ হয়। আর এমনিতেই তো চাকরিতে ঢোকার পর দূরে কোথাও ঘুরতে যাননি।
বাহ দারুন লিখেছেন আপনি কক্সবাজার মহেশখালী নিয়ে। ফটোগ্রাফি দেখেই বুঝতে পেরেছি আপনি কোন কোন জায়গায় ঘোরাঘুরি করলেন। বর্তমান সময়ে কক্সবাজার যেমন জনপ্রিয় হয়েছে মহেশখালী ভ্রমণ অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখন তো মহেশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ আরো অনেক বেশি সাড়া পেয়েছে ভ্রমণের একটি নতুন জায়গায় হিসেবে। তবে আপনারা বেশ ভালো ঘোরাঘুরি করছিলেন। এখন তো আরো অনেক নতুন হয়ে গেল অনেক নতুনত্ব ফিরে এসেছে সব দিকে। অনেক ভালো লাগলো আপনার ব্লগে পড়ে।
এবার কক্সবাজার গেলে কিন্তু আপনার সাথে অবশ্যই দেখা করব, আপনি প্রস্তুত তো!
গতকাল আপনি আমাদের মাঝে রাঙ্গামাটি ভ্রমণের কিছু স্মৃতি শেয়ার করেছেন। আজকে আপনি কক্সবাজার কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। তবে আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হল রাঙ্গামাটির থেকে কক্সবাজারে বেশি ইনজয় করেছিলেন। আসলে ভাইয়া কক্সবাজারের বীচ গুলোর মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে একটু বেশি ভালো লাগে। আর বিশেষ করে সমুদ্রের গর্জন শুনতে বেশ মজা লাগে।
জায়গাগুলোই এমন এনজয় না করে আর থাকা যায় না , আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।