বর্তমান তাপ দূর্যোগে আমাদের কিছু করণীয় 😇
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভালোই আছি। আমি আজকে আরো একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আজ আপনাদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি বর্তমান তাপ দূর্যোগে আমাদের কিছু করণীয়। আশা করি সবাই পোস্টে পড়বেন কারণ এই পোস্টটির মাধ্যমে আমরা চলমান তাপ দূর্যোগে আমাদের কিছু করণীয় সম্পর্কে জানতে পারবো। তো চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।
আমি এর আগে একটি পোস্ট করেছিলাম পোস্টটির টপিক ছিল পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ ও এর ফল। আমাদের পৃথিবীতে তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে আমাদের মাঝে দেখা যাচ্ছে অসহনীয় গরম। প্রায় গত কয়েক দশকের তাপমাত্রা বৃদ্ধির রেকর্ড ভেঙে নতুন তাপমাত্রার রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এই তাপমাত্রার দিন দিন বেড়েই চলছে।
এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে মানুষ দায়ী। আমরা প্রকৃতির সাথে অনিয়ম করলে প্রকৃতি আমাদের ছেড়ে কথা বলবে না এটিই প্রকৃতির নিয়ম। বর্তমানে প্রতিনিয়তই নিউজ দেখা যাচ্ছে যে হিট স্ট্রোকে মানুষের মৃত্যু ঘটছে। মূলত এই অতিরিক্ত গরমের প্রভাবেই মানুষ হিট স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে। তাই এই প্রচন্ড তাপ দুর্যোগে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে যাতে করে আমরা এটি থেকে রক্ষা বা সুরক্ষিত থাকতে পারি।
দিনের বেলায় ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে, জানালার পর্দা টেনে দিতে হবে যাতে করে সূর্যের কিরণ ঘরে প্রবেশ করতে না পারে এর ফলে ঘর ঠান্ডা থাকবে। কৃত্রিম আলো এবং যতটা সম্ভব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিগুলো বন্ধ রাখা উচিত যেগুলো থেকে তাপ নির্গমন হয়। দিনের তুলনায় রাতে ও ভোরে তুলনামূলক তাপমাত্রা অনেক কম থাকে এই সময় ঘরের জানালা খোলা রাখতে হবে যেন বাইরে ঠান্ডা বাতাস এসে রুমকে ঠান্ডা রাখতে পারে এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে পারে। অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হালকা রঙের সুতি কাপড় পরিধান করতে হবে। এই তীব্র গরমে আমাদেরকে মাথা ঢেকে রাখতে হবে অর্থাৎ টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। গরম এবং আর্দ্র বাতাস আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস কে প্রবাহিত করতে পারে এর ফলে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে তাই প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়াই উত্তম।
যতটা সম্ভব আমাদের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ইনডোর অবস্থানে থাকার চেষ্টা করতে হবে। পিপাসা না লাগলেও বেশি বেশি করে পানি পান করতে হবে। কারণ তাপ শরীরে পানি শূন্য হলে মাথা ঘোরার সাথে মানুষ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। শরীরে অতিরিক্ত তাপের প্রভাব আমাদের ঘুমকে ব্যাহত করে ফলে একজন ব্যক্তির মনোযোগ ও শেখার ক্ষমতা হ্রাস পায়। চরম উত্তাপের ঘটনা বিভিন্ন তাপ চাপের অবস্থার কারণ হতে পারে, যেমন হিট স্ট্রোক । হিট স্ট্রোক হল সবচেয়ে গুরুতর তাপ সংক্রান্ত ব্যাধি। এটি ঘটে যখন শরীর তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম হয়। শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, ঘামের প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয় এবং শরীর ঠান্ডা হতে পারে না। তাই এই তীব্র গরমে আমাদের কঠোর শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকতে হবে। অতিরিক্ত গরমে একদম ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এটি সাময়িক স্বস্তি দিলেও পরবর্তীতে এটি মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারে। তীব্র এই গরমে ঠান্ডা গোসল করে আমাদের ত্বককে ভেজা রাখতে হবে।
স্যালাইন পানিতে থাকা সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও চিনি শরীরকে সতেজ রাখতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে । খুব বেশি শরীর দূর্বল লাগলে স্যালাইন পানি পান করতে হবে। মাংস এড়িয়ে বেশি বেশি ফল ও শাকসবজি খেতে হবে। ত্বককে সূর্যের ক্ষতি কারক রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। আমাদের যতটা সম্ভব ছায়ায় থাকার চেষ্টা করতে হবে। জুতা-স্যান্ডেল নির্বাচনেও চোখ খোলা রাখা জরুরি। পায়ে বাতাস চলাচল করতে খোলামেলা জুতা পরা উচিত। কাপড় বা সিনথেটিক বাদ দিয়ে চামড়ার জুতা হলে ভালো হয়।
সবশেষে, অতিরিক্ত তাপ আমাদের কারো জন্যই সুখকর নয়। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা এমন কিছু করবো না যেটি পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বরং পরিবেশকে শীতল রাখার জন্য আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি। এর মধ্যে সবার প্রথমেই আসে বৃক্ষরোপণ। গাছপালা আমাদের পরিবেশকে শীতল রাখে। পরিবেশের কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে পরিবেশকে শীতল রাখতে সহায়তা করে। জলবায়ু পরিবর্তনে একটি প্রাকৃতিক ঘটনা এবং মানুষের পরিবেশ দূষণ ও পৃথিবী উত্তপ্ত হতে সহায়তা করে। বর্তমানে পৃথিবীর তাপমাত্রা চেহারার বৃদ্ধি পাচ্ছে খুব বেশিদিন লাগবে না এই ৪০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রূপান্তরিত হতে। আমরা যদি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটু অক্সিজেনের ব্যবস্থা না করে যাই তাহলে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে একটি অভিশাপ হয়ে রয়ে যাবো। তো চলুন আমরা পরিবেশকে রক্ষা করতে ও পরিবেশের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশি বেশি করে বৃক্ষরোপন করি। সবশেষে এতোটুকুই বলবো তীব্র গরমে সবাই সাবধানে চলাফেরা করবেন ও বেশি বেশি করে পানি পান করবেন।
আজকের মত এখানেই। এতক্ষণ ধরে মনোযোগ দিয়ে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা হবে অন্য একটি ব্লগে ততক্ষণে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমি আল হিদায়াতুল শিপু। বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর একজন ছাত্র । আমি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি। আমি মাঝে মাঝে কবিতা ও লিখি। আমার লেখা কবিতা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা পত্র পত্রিকা এবং মেগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কাব্যকলি বইতেও আমার লেখা কবিতা রয়েছে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অতি তাপপ্রবাহের এই সময় দারুণ একটি সচেতনতা মূলক পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। পোস্টটি ভালো হয়েছে। আপনার পোস্টে তাপ দূর্যোগ থেকে বাঁচতে দারুণ সব টিপসের কথা বলেছেন। যা এই সময়ের জন্য আমাদের সবার জন্য দরকারি। আপনি ঠিকেই বলেছেন, এই সময়ে সাবধানে চলাচল করা ও বেশি করে পানি খাওয়ার বিকল্প নেই। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি টপিক্স নিয়ে পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। বর্তমান সময়ের উপর নির্ভর করে লেখা পোস্টগুলো সত্যি বেশ ভালো লাগে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত এই গরমে বেশি বেশি পানি পান করা। কয়েকদিন আগেও আমাদের বাড়ির পাশের একজন অতিরিক্ত গরমে হিট স্টপ করে মারা গিয়েছে সত্যি বেশ দুঃখজনক। ধন্যবাদ ভাই সময় উপযোগী পোস্ট লিখে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
বর্তমান তাপ দূর্যোগে আমাদের কিছু করণীয় নিয়ে খুবই চমৎকার একটি সচেতনতামূলক পোস্ট করেছ। খুবই তথ্যবহুল এই পোস্টটি আমার কাছে দারুন লেগেছে।।এবং আমি মনে করি এই পোস্টটি আমাদের সকলের করা উচিত এবং এই করনীয় গুলো আমাদের ফলো করা উচিত। এত চমৎকার একটি পোস্ট করার জন্য, তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
তোমাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আম্মু আমার পোস্টটি পড়ে তোমার মূল্যবান মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
সত্যি ভাইয়া কোন এক সময় দেখা যাবে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আমাদেরকে বসবাস করতে হবে। এখন থেকে যদি আমরা সচেতন হই তাহলে হয়তো এতোটা খারাপ পরিস্থিতি আমাদের জীবনে আসবে না। প্রকৃতি এতটা ভয়ঙ্কর হবে না। যাইহোক আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
প্রাকৃতিক তাপ দুর্যোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর মতামত করলেন শিপু ভাই। বর্তমান সময়ে গরম এত বেড়ে গেছে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা ও খুবই কষ্টকর হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে আমাদেরকে অবশ্যই বের হয়ে আসতে হবে। তার জন্য এমন সুন্দর সুন্দর টিপস গুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এত সুন্দর একটি পোস্ট ফিচারড আর্টিকেলে দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর একটি মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।