পুকুরের পানি ছেঁকে মাছ ধরার অনুভূতি // পর্ব-০১।

in আমার বাংলা ব্লগ2 days ago



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ শুক্রবার। ০৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।

IMG_20240324_145959_535.jpg


পুকুর থেকে মাছ ধরতে অনেক বেশি ভালো লাগে আমার। তবে পুকুরের পানি ছেঁকে মাছ ধরতে আরো বেশি ভালো লাগে। কারণ যখন পুকুরের পানি ছেঁকে ফেলা হয় তখন পুকুর থেকে সব রকমের মাছ ধরা সম্ভব হয়। যাহোক আমাদের একটি পুকুরের সমস্ত মাছগুলো জেলেদের নিকট বিক্রয় করার পরে সেই পুকুরটির পানি ছেঁকে ফেলার কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। পুকুরটির পানি ছেকে ফেলার জন্য ব্যবহার করেছিলাম বৈদ্যুতিক মোটর ও পাম্প। আমাদের এই পুকুরটির সবগুলো পানি ছেঁকে ফেলতে মোট ১৭ ঘন্টা সময় লেগেছিল। যাহোক পুকুরের সবগুলো পানি ছেঁকে ফেলার পরে মাছ ধরার কার্যক্রম শুরু করেছিলাম।

IMG_20240324_151526_967.jpg

IMG_20240324_151529_032.jpg

IMG_20240324_150536_567.jpg


মাছ ধরেছিলাম আমরা দুইজন, আমি এবং আমার ছোট ভাই সুমন। মাছ ধরার সময় আমরা দুই ভাই অত্যন্ত আনন্দের সাথে পুকুরের সবগুলো মাছ ধরেছিলাম। পুকুরের পানি ছেকে ফেলার পরে অনেকগুলো মাছ পেয়েছিলাম। বিশেষ করে নাইলনটিকা তেলাপিয়া মাছ পেয়েছিলাম প্রায় ৬০ কেজি পরিমাণ। একই সাথে অনেকগুলো চ্যাং মাছ পেয়েছিলাম, ছোট ছোট পুটি মাছ পেয়েছিলাম, কিছু পরিমাণ রুই ও মৃগেল মাছ পেয়েছিলাম এবং কয়েকটা দেশীয় প্রজাতির জিওল মাছ পেয়েছিলাম। পুকুরে পানি ছিল না, তারপরেও মাছগুলো ধরতে বেশ কিছুটা কষ্ট হয়েছিল আমাদের। কারণ সবগুলো মাছ ছিল অত্যান্ত জ্যান্ত ও তরতাজা।

IMG_20240324_150540_758.jpg

IMG_20240324_150324_682.jpg


মাছগুলো যখনই কাঁদার উপর থেকে ধরতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই মাছগুলো কাঁদার মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে দিচ্ছিল। আবার কয়েকটা মাছ তার লেজ দিয়ে কাঁদার সাথে এমন ভাবে ঝাঁকুনি দিয়েছিল যে, মাছের লেজের আঘাতে কাঁদা ছিটিয়ে আমাদের চোখে-মুখে পড়ছিল। তারপরেও আমরা মাছ ধরা থেকে পিছু পা হয়েছিলাম না। কারণ এরকম অবস্থায় মাছ ধরতে বেশ আনন্দ লাগে। কিন্তু একটু বেশি সময় লেগে যায় তাই। আর প্রতিটি নাইলনটিকা তেলাপিয়া মাছের শরীরের পিঠের উপরে রয়েছে কাটা। যখনই তেলাপিয়া মাছগুলো হাতের মধ্যে নিয়ে চেপে ধরতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই তেলাপিয়া মাছগুলো তার পিঠের কাটা খাড়া করে দিচ্ছিল। কিন্তু আমরা দুই ভাই মাছ ধরতে অত্যন্ত দক্ষ এবং মাছ ধরার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার কারনে নাইলনটিকা তেলাপিয়া মাছ তার পিঠের কাটা খাড়া করে দেওয়া শর্তেও আমরা বেশ দক্ষতার সাথে তেলাপিয়া মাছগুলো ধরতে সক্ষম হয়েছিলাম। এমনকি নাইলনটিকা তেলাপিয়া মাছের কাটার আঘাত থেকেও নিজেদেরকে বেশ সহজেই রক্ষা করতে সক্ষম হইছিলাম।

IMG_20240324_151735_641.jpg


অনেকগুলো তেলাপিয়া মাছের মধ্যে একটি পাঙ্গাস মাছের বাচ্চা পেয়েছিলাম। পাঙ্গাস মাছের বাচ্চাটি অনেকগুলো তেলাপিয়া মাছের চাপে পড়ে একেবারেই মরার মতো অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। তাই পাঙ্গাস মাছের বাচ্চাটিকে টিউবয়েলের ঠান্ডা বিশুদ্ধ পানির মধ্যে কিছুক্ষণ রেখে দিয়েছিলাম এবং পানিগুলো হাত দিয়ে বারবার নাড়া দিয়েছিলাম। যাতে পানির মধ্যে অক্সিজেন তৈরি হয় এবং পাঙ্গাস মাছের বাচ্চাটি বেঁচে যায়। অবশেষে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চাটি সুস্থ হয়েছিল ও স্বাভাবিক হয়েছিল। তারপরে পুনরায় আবার পুকুরের মাছ ধরার কার্যক্রম শুরু করেছিলাম।



আমার পরিচয়।

IMG_20220709_132030_108.jpg



আমার নাম মোহাঃ নাজিবুল ইসলাম (বিদ্যুৎ)। আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং আমি অতিশয় ক্ষুদ্র জ্ঞানের একজন মানুষ। আমি মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে বসবাস করি। আমি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে আমার স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে যাত্রা শুরু হয়। আমার স্টিমিট আইডি নাম (#bidyut01). প্রথম প্রথম স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ কিছুই পারতাম না। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সম্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন এবং মডারেটরদের সার্বিক সহযোগিতায় খুব সহজেই স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কাজ গুলো সম্পর্কে জানতে পারি ও শিখতে পারি। এরপর থেকে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমার এলাকাতে আমি ব্যাপকভাবে প্রচার করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে আমার এলাকার অনেকেই এখন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্য। যাহোক, এখন আমার মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদিও আমার প্রধান পেশা শিক্ষকতা এবং পাশাপাশি মাছের চাষাবাদ করা। আমার পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ৮ জন। আমার পরিবারের প্রধান হলো আমার বাবা ও মা। আমার পছন্দের কাজ সমূহ হলো-ছবি অঙ্কন করা, যেকোনো জিনিসের অরিগ্যামি তৈরি করা, বিভিন্ন প্রকারের রেসিপি তৈরি করা, কবিতা লেখা, ভ্রমণ করা ও ফটোগ্রাফি করা। আর একটু সময় সুযোগ পেলেই পুরনো দিনের মুভি গুলো দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি।

১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Sort:  
 2 days ago 

আজকের কাজ সম্পন্ন।

Screenshot_20250103-234134.jpg

Screenshot_20250103-233508.jpg

Screenshot_20250103-225102.jpg

 2 days ago 

আসলে আপনার এই অনুভূতিটা যখন জানতে পেরেছি তখন কিন্তু আমার খুব হিংসা হচ্ছিল। কেননা এ ধরনের পুকুরে নেমে মাছ ধরতে আমার উপর ভালো লাগে। আপনার এত সুন্দর একটা অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 yesterday 

মাছ ধরার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া ।আপনি দেখছি অনেক সুন্দর কিছু মাছ ধরে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ।বিশেষ করে পাঙ্গাশের ছোট বাচ্চাটি অনেক ভালো লাগলো। ছোটকালে আমরা অনেক পুকুরে
মাছ ধরেছি সেই মাছ ধরার কথা আবারও আপনার পোস্ট দেখে মনে পড়ে গেল।