কার মৃত্যু কোথায় কেউ বলতে পারে না..😥
হ্যালো বন্ধুরা
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে খুবই দুঃখজনক একটি মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
এই দুনিয়ায় কোনো প্রাণী অমর নয়। সব প্রাণীরই মৃত্যু হবে।তাই প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।ভগবান ছাড়া মৃত্যু থেকে কেউই বাঁচতে পারবেন না। কার মৃত্যু কোথায় হবে এ কথা কি কেউ নশ্চিত করে বলতে পারবে? যার মৃত্যু যেখানে নির্ধারিত আছে, সেখানেই তাঁর মৃত্যু হবে। সবার মৃত্যুর দিনক্ষণ, স্থান, তারিখ নির্ধারিত। নির্ধারিত স্থানে নির্ধারিত সময়ের এক মুহূর্ত আগে বা পরে কারো মৃত্যু হয় না এবার নির্ধারিত ব্যক্তি মৃত্যুর স্থানে উপস্থিত থাকা কিংবা দূরে থাকুক। তাকে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছানোর দায়িত্বও ভগবানের,কথায় আছে না যার মরন যেখানে নাও ভাড়া করে যায় সেখানে।
রথযাত্রা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এক ভক্তিপূর্ণ উৎসব।
রথযাত্রা বা রথদ্বিতীয়া একটি আষাঢ় মাসে আয়োজিত অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। বিশাল কাঠের চাকার উপর সাজানো রথের উপর উপবিষ্ট থাকেন জগন্নাথদেব, বলরাম এবং সুভদ্রা দেবী। জগন্নাথ দেবসহ এই তিন দেব সাতদিনের জন্য রথে চড়ে মাসীর বাড়ি যান এবং সাত দিন পর ফিরে আসেন রথে চড়েই।এই যাওয়াকে সোজা রথ আর ফিরে আসাকে উল্টো রথ বলে।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে মনে করা হয় যে রথের রশি টানলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।ভক্তদের মনের বিশ্বাস যে রথের রশি একবার স্পর্শ করলে সমস্ত পাপ মুছে যায় এবং জন্ম মৃত্যুর শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অর্থাত্ মনে করা হয়, যে ব্যক্তি রথের রশি টানার সুযোগ পান, তাঁকে পুর্নজন্মের কষ্ট পেতে হয় না।আর এই পাপ মোচন করার জন্য আজ দুপুর তিনটায় বগুড়া শিউজগাড়ি ইসকন মন্দির থেকে পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন শিব মন্দিরের দিকে রথযাত্রা শুরু হয় ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটে আকস্মিক এক দুর্ঘটনা।রাস্তার উপরে থাকা বিদ্যুতের তারের সাথে রথের স্পর্শ লেগে এই দুর্ঘটনা ঘটে।সাথে সাথে ৬ জনের মৃত্যু ঘটে এবং ৪০ জনের মতো মানুষ গুরুতর আহত হয়।
আমরা সবেমাত্র বগুড়া শহরে এসেছি এখানকার তেমন কিছুই চিনি না আসার পর থেকেই বাসায় থাকতে থাকতে মেয়েরা খুবই বোরিং ফিল করছে কয়দিন ধরেই বলছে বাহিরে কোথাও ঘুরতে যাবো।একটানা বৃষ্টির কারণে কোথাও যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।আমি ওদের কে বললাম দুদিন বাদেই রথযাত্রা আমরা সেদিনই বাসা থেকে বের হবো রথযাত্রা করা হবে সেই সাথে ঘোরাও হবে।এই বলে মেয়েদের শান্তনা দিয়ে রাখলাম।আজ সকালে হঠাৎ করে জরুরি একটা কাজে আমাকে বাহিরে যতে হয়েছে।কাজ শেষে ভাবলাম কিছু বাজার করে একবারে বাসায় ফিরি তাহলে বিকেলে আর বের হতে হবে না।বাসায় ফিরতে প্রায় দুপুর দুইটা বেজে গেছে।বাসায় আসার পর থেকেই মেয়েরা বায়না করছিলো রথ দেখতে যাবে কিন্তু আমার কেনো জানি কিছুতেই যেতে ইচ্ছে করছিলো না। ওরা যতোবারই বলছে আমি ততোবারই না করেছি।শেষে তো মেয়েরা জামাকাপড় পড়ে রেডি কিন্তু তারপরও আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম যে কিছুতেই যাবো না তার কারণ আমার শরীর মন কোনোটাই ভালো লাগছিলো না।
আমার কথা মতো মেয়েরা আর কিছু বলতে সাহস পেলো না তাই মন খারাপ করে হলেও জামাকাপড় খুলে শুয়ে পড়লো।আমিও একটু ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম।হঠাৎ আমার ফোনে একটা মেসেজ আসলো আর সাথে সাথেই ফোন টা হাতে নিয়ে দেখি এই দুর্ঘটনার একটি ভিডিও আমি তো দেখার সাথে সাথেই হতভম্ব হয়ে গেলাম!এক নিমেষেই তরতাজা মানুষ গুলো মাটিতে লুটিয়ে পড়লো কে বেঁচে আছে কে মারা গেছে বোঝা মুশকিল।এই দৃশ্য দেখার পর কোনো মানুষই ঠিক থাকতে পারবে না।কি করুন দৃশ্য যা চোখে দেখার মতো নয়।বার বার এটা মনে হচ্ছিলো এই মৃত্যুর সাক্ষী আমরাও হতে পারতাম বা মৃত ব্যক্তির তালিকায় আজ আমাদেরও নাম থাকতে পারতো! এগুলো ভাবলেই মনে হয় বুকের ভিতরটা এখনো কেঁপে উঠছে।যে মানুষ গুলো আনন্দ করার জন্য গিয়ে এই করুণ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে তারা কি একবারের জন্যও ভেবেছিলো আজ তাদের সাথে এমন ঘটনা ঘটবে?
যে মানুষ গুলো বেঁচে আছে বা সুস্থ আছে তারা সবাই সত্যি অনেক ভাগ্যবান তারা আজ আবারও নতুন এক জীবন ফিরে পেয়েছে বলে মনে করি।ভগবান তাদের সবসময়ই ভালো রাখুক এই প্রার্থনা করি।🙏
মৃত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করছি 🙏
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সেই দুর্ঘটনার ভিডিও আমিও দেখেছি। আসলেই কি অদ্ভুত মানুষের জীবন! কয়েক মুহূর্তে কি থেকে কি হয়ে গেলো। অবশ্যই যারা ঘটনাস্থলে মৃত্যু বরণ করেছেন, তারা যেন ঈশ্বরের পদতলে জায়গা পাক সেই কামনা৷ যারা জীবিত আছেন, তারা নব-জন্ম পেলেন!
সত্যিই তাই এক নিমেষেই কি থেকে কি হয়ে গেলো।যা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।😥
আসলে আপু জীবন অনিশ্চিত। আল্লাহ আপনাদের হায়াত রেখেছে তাই হয়তো আপনারা সেখানে যাননি।সত্যি সবাই আনন্দ করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরল।মৃত্যু চিরন্তন সত্য। এটা যার যখন লেখা আছে তখন কোন ভাবে এরিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ধন্যবাদ আপনাকে।
মৃত্যু চিরন্তন সত্যি। আর কখন কে কোথায় কিভাবে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন। বগুড়ায় ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের এরকম মর্মান্তিক দূর্ঘটনা ভীষণ দুঃখজনক। আমিও ফেসবুকে নিউজ দেখে হতভম্ব হয়ে গেছিলাম। ভাগ্যিস রথে যাননি।কথায় আছে মন পন্ডিত বড়ো পন্ডিত। মন যেখানে যেতে মন চাইবে না সেখানে কোন ভাবেই যাওয়া ঠিক না।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।