প্রশান্তি!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বাড়ি থেকে গিয়েছি সেই জুন মাসে। এরমধ্যে আর বাড়ি আসা হয় নাই। যেহেতু নতুন চাকরিতে জয়েন করেছি এইজন্যই এই দীর্ঘসময় বাড়িতে আসাদ কোন সুযোগ হয়নি। যদিও ছয় মাস পরে ছুটি নিতে গিয়েও আমাকে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। এর আগে এতদিন বাড়ির বাইরে আমি থাকিনি। এর আগে সর্বোচ্চ তিন মাস বাইরে ছিলাম ইন্টার্নশীপের জন্য। যদিও এখন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে এবং সারাটা জীবন নিজের গ্রাম শহর ছেড়ে দূরে কোথাও থাকতে হবে সম্ভবত। রবিবার রাতে ঢাকা সায়েদাবাদ থেকে বাসে উঠি আমি। কুমারখালীতে যখন পৌছালাম তখন ঘড়িতে সময় রাত ৩ টা। আহ কুমারখালীতে পা দিতেই ভেতরে একটা প্রশান্তি এসেসে গেল। কতদিন পর নিঃশ্বাস নিলাম প্রাণভরে। বেশ ভালো ঠান্ডা। ফোনের ওয়েদার রিপোর্ট বলছে ২০° এর নিচে তাপমাত্রা। অর্থাৎ বেশ ভালো ঠান্ডা।
বাড়িতে এসেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ পুরোটা পথ ছিলাম জেগে। ঘুম থেকে যখন উঠলাম ঘড়িতে সাড়ে নয়টা বাজে। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে চলে গেলাম কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে। আপাতত আমার গন্তব্য ছিল কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। কারণ আমার ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর সনদপএ এবং মার্কশীট গুলো তুলতে হবে। হাইওয়ে তে গিয়ে গাড়ির জন্য দাঁড়ালাম সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। খুব বেশিদিন হয়নি তো দিনগুলো ফেলে রেখে দিয়ে এসেছে। হাইওয়ে দিয়ে চলে গেলাম কুষ্টিয়া। হাইওয়ের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। রাস্তার দু পাশে গাছের সংখ্যা বেড়েছে। আহ কী চমৎকার প্রকৃতি। নিজের মধ্যে অনেকদিন পর একটা ভালোলাগা কাজ করছিল। এই শহরটা আমি অনেক ভালোবাসি। কিন্তু বাধ্য হয়েই এখন বাইরে থাকা লাগছে।
যথারীতি সেই আগের রুট দিয়ে চলে গেলাম আমার কলেজের সামনে। ক্যাম্পাসের খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। তবে আগের থেকে দেখতে বেশি সুন্দর লাগছে। ক্যাম্পাসে ঢুকেই আগে চোখে পড়ত অসংখ্য ছাএ নেতাদের পোস্টার ব্যানার কিন্তু এখন আর সেটা নেই। পুরোপুরি ঐগুলো মুক্ত ক্যাম্পাস এটা অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। যথারীতি সনদপএের জন্য আবেদন জমা দিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো প্রথমদিন পাব না। অন্তত পূর্বের অভিজ্ঞতা সেটাই বলে। কিন্তু স্যার আমাকে অবাক করি দিয়ে বলে একঘন্টা পরে এসে নিয়ে যেও। একঘন্টা কী করা যায়। হাঁটতে থাকলাম ক্যাম্পাসের মধ্যে। না আমি এখনও এই ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এমনটাই মনে হচ্ছিল। ক্যাম্পাস টা যেন আরও সুন্দর আরও গোছানো।
ঘুরতে ঘুরতে মাঠে গিয়ে দেখি ছাএরা মাঠে ফুটবল খেলছে। গতবছরও আমরা এই মাঠেই ফুটবল খেলেছিলাম। কিন্তু আজ বাইরে দাঁড়িয়ে দেখা লাগছে। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে খেলা দেখলাম। আস্তে আস্তে হেঁটে ক্যাম্পাস টা ঘুরে দেখলাম। এ যেন অন্যরকম একটা প্রশান্তি। যথারীতি ঘন্টাখানেক পরে গিয়ে সনদপএ টা রেজিস্টার শাখা থেকে সংগ্রহ করি আমি। যদিও ইচ্ছা ছিল কুষ্টিয়া শহরের মধ্যে কয়েকটা জায়গা ঘুরে দেখব। কিন্তু আমি একা থাকায় আর সেটা করতে পারলাম না। যদিও একা থাকায় কখনোই খুব একটা সমস্যায় আমি পড়িনি। কিন্তু তারপরও একজনকে খুব করে মিস করছিলাম। এই ক্যাম্পাস থেকেই আমাদের দেখা এখান থেকেই আমাদের গল্পের শুরু হয়েছিল। অথচ আজ আমরা পুরোপুরি যোগাযোগহীন একে অপরের কাছে অপরিচিত।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার সিজিপিএ দেখছি অনেক ভালো। সত্যি ভাইয়া চাকরিতে জয়েন করলে ব্যস্ততা অনেক বেড়ে যায়। আর নিজের মত করে পরিবারকে সময় দেওয়া হয় না। এমনকি বাসায় যাওয়ার সুযোগ হয় না। ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট দেখে।
ভাই এখনো এই কুষ্টিয়া পলিটেকনিককে সত্যিই অনেক মিস করি। যাইহোক অনেকদিন পরে কুষ্টিয়া পলিটেকনিকে গিয়েছিলেন এবং নিজের সনদপত্র তুলেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার সিজিপি কিন্তু অনেক ভালো হয়েছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
চাকরিতে জয়েন করার কারনে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পাওয়াতে নিজের শহরে এখন আর থাকা হয়না।আর ইচ্ছে হলেও যাওয়া হয়না।নিজের সনদপত্র তুলতে কুষ্টিয়া গিয়ে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। চমৎকার ফটোগ্রাফি ও শেয়ার করেছেন।সুন্দর ভাবে ব্লগটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলে বেশ ভালো লাগে। পুরানো অনেক কথা মনে করিয়ে দেয়। আমি চট্টগ্রামে গেলে আমার কলেজে যাওয়ার চেস্টা করি। তবে সব সময় হয়ে উঠে না। সময়ের অভাবে। অনেকদিন পর নিজের জায়গায় যাওয়ার আনন্দই অন্য রকম। যদিও তা সব সময় সম্ভব না। কাজের জন্য আমাদের বাড়ি থেকে দূরে থাকতে হয়। আর এটাই জীবন।
প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা শেষ করে চলে আসার পর যখন আবারো কোন দরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়া প্রয়োজন পড়ে তখন সবকিছু চেনা হলেও অনেকটাই নতুন মনে হয়। যাইহোক আপনি আপনার সার্টিফিকেট মার্কশিট সবকিছুই পেয়ে গেছেন হাতে এটা একটা ভালো খবর। ছাত্রনেতাদের অতিরিক্ত হাঙ্গামা কোন কলেজেই শান্ত পরিবেশ রাখতে দেয় না।বর্তমানে আপনার কলেজে যে এসব কিছুই নেই তা জেনে ভালো লাগলো।