বই রিভিউ ( আট কুঠুরি নয় দরজা- সমরেশ মজুমদার )।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
----- | ----- |
---|---|
বইয়ের নাম | আট কুঠুরি নয় দরজা |
লেখক | সমরেশ মজুমদার |
প্রথম প্রকাশ | ১৯৯৩ |
প্রকাশক | আনন্দ পাবলিশার্স |
মূল্য | ৩২০ টাকা |
ভারতবর্ষের কাছাকাছি এক পাহাড়ি রাজ্য। একনায়কতন্ত্র চলে সেখানে। যারা রাজ্য শাসন করে তারা সৈরাচার। আর এই সৈরাচারদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য গড়ে একটা বিপ্লবী বাহিনী । এই বিপ্লবী বাহিনীর প্রধান আকাশলাল। বিপ্লবের শুরুতে অনেকে থাকলেও পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছে অনেকে আবার কেউ রয়েছে জেলে। তবে রাজ্যের মধ্যে খুবই গোপনীয়তার সাথে লুকিয়ে থাকে আকাশলাল এবং তার তিন সঙ্গী হায়দার, এিভুবন এবং ডেভিড। আকাশলাল কে ধরতে মিনিস্টার এবং বোর্ড রীতিমতো চাপ দিতে থাকে পুলিশ কমিশনার ভার্গিস কে। কিন্তু ভার্গিস ও তার ডিপার্টমেন্ট অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ। আকাশলালের জন্য ১০ লক্ষ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এখন পযর্ন্ত কেউ তার খোঁজ দিতে আসেনি।
কারণ ঐ রাজ্যের সকল গরীব মানুষ তাকে ভালোবাসে। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য তার সাথে একসঙ্গে আন্দোলন করতে কেউ রাজি না। তবে তাদের আন্দোলন কে সবাই মনে মনে সাপোর্ট করে। পুলিশের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় আকাশলাল এবং তার সঙ্গীরা রীতিমতো ঘরবন্দী হয়ে যায়। কোনভাবেই বিপ্লবের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছিল না। আর তখনই আকাশলাল একটা সিদ্ধান্ত নেয়। সে পুলিশের কাছে ধরা দেবে। তার সঙ্গীরা জানত সে পুলিশের কাছে ধরা দেওয়া মানে এই বিপ্লব শেষ। পুলিশের হাতে ধরা দেওয়ার পরই তাকে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুন্ড দেওয়া হবে। কিন্তু আকাশলাল পরিকল্পনা করেছিল পুলিশের কাছে ধরা দেওয়ার পর তার মৃত্যু হবে এবং চিকিৎসার বিজ্ঞানের প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি আবার বেঁচে ফিরে আসবেন।
বিপ্লব চালিয়ে যাওয়ার জন্য আকাশলাল সিদ্ধান্ত নেয় সে তার চেহারা পরিবর্তন করে ফেলবে। আর এইজন্যই ভারতের কলকাতা থেকে নিয়ে আসা হয় ডাক্তার স্বজন কে। স্বজন প্রথমে কিছুই জানত না। স্বজন তার স্ত্রী পৃথাকে নিয়ে ঘুরতে এসে আটকা পড়ে যায় ঐ রাজ্যে। আকাশলালের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনে আকাশলাল পুলিশের কাছে ধরা দেয়। এবং ধরা দেওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। ঐ রাতেই তাকে কবর দেওয়া হয় তার পারিবারিক কবরস্থানে। এবং সেই রাতেই কবরস্থান থেকে আকাশলালের সঙ্গীরা তার লাশ চুরি করে পরিকল্পনা অনুযায়ী। পরবর্তীতে আকাশলালের শরীরে দুইটা অপারেশন হয়। এক তার চেহারা পরিবর্তন করে দেওয়া হয় প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে এবং দ্বিতীয় টা জানতে হলে আপনাকে বইটা পড়তে হবে। এটা বেশ সাসপেন্স।
কিন্তু চিকিৎসক বলেন তার শরীরে যে এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে সেটা চিকিৎসা বিজ্ঞানে তার আগে করা হয়নি। এতে করে তার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে যদি সবকিছু ঠিক না হয়। এবং সেটাই হয়। আকাশলাল তার স্মৃতি হারিয়ে ফেলে। একে একে আকাশলালের তিন সঙ্গী ডেভিড, এিভুবন এবং হায়দার সবাই পুলিশের গুলিতে মারা যায়। তবে শেষ পযর্ন্ত বেঁচে থাকে আকাশলাল। তবে পুরোপুরি আকাশলাল হয়ে না। যে আকাশলালকে ঐ রাজ্যের সবাই চিনত সেই আকাশলাল সে না। আকাশলালের চেহারা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। তবে ধীরে ধীরে কিছু স্মৃতি ফিরে পেতে শুরু করে আকাশলাল। শেষ পযর্ন্ত কী হবে। আকাশলাল কী পুরোপুরি তার স্মৃতি ফিরে পাবে। আবার শুরু হবে বিপ্লব। পুরোটা জানতে হলে বইটা আপনাদের পড়তে হবে।
ব্যক্তিগত মতামত
আমার পড়া এইটা সমরেশ মজুমদারের প্রথম বই। এটা পুরোপুরি একটা মিস্ট্রি পলিটিক্যাল থ্রিলার। উপন্যাস টার শুরু যেভাবে হয় শেষটা হয় একেবারেই আলাদা। সাধারণত থ্রিলারে যেরকম হয়ে থাকে। শেষে গিয়ে আমি যে চমকটা পেয়েছি সেটা সত্যি অসাধারণ ছিল। সবমিলিয়ে চমৎকার একটা উপন্যাস ছিল এইটা। যতক্ষণ বইটা পড়েছি একেবারে ডুবে গিয়েছিলাম বইয়ের মধ্যে। তবে শেষটা কেন জানি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না আমি।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সমরেশ মজুমদার আমার খুবই প্রিয় লেখক। তবে এই উপন্যাসটি আমি পড়িনি । আপনার রিভিউ পড়ে বেশ আগ্রহ জাগছে। কি হবে কি হবে ধরনের প্রশ্ন মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে। আপনি চমৎকার রিভিউ করেছেন। মানে এতটাই মনে লেগেছে যে আমার মনে হচ্ছে উপন্যাসটা পড়ি।