ঢাকা ট্যুর( সাফারি পার্ক ভ্রমণ :- শেষ পর্ব)।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
সাফারি পার্ক অনেক বড় এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। বলে রাখা ভালো এখানে ঘোরার জন্য একটা রিক্সা হলে ভালো হয় হা হা। হাঁটতে হাঁটতে পা ব্যাথা করছিল। কিন্তু মন বলছিল না আরও ঘুরি। চারিপাশে গাছপালা জঙ্গল এবং তার মাঝ দিয়ে রাস্তা সেই রাস্তা দিয়ে আমরা পাঁচজন হেঁটে চলেছি। যদিও আমরা বাদেও আরও লোকজন ছিল। তবে ঐ জঙ্গলের সাইটে আমরা ছাড়া আর সেরকম কেউ ছিল না। কিছুদূর গিয়ে দেখি সবাই একটা পুকুরের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং কিছু একটা দেখছে। কৌতূহলবশত আমরাও গেলাম। গিয়ে দেখি ঐ পুকুরের মধ্যে বিশাল একটা জলহস্তি। জলহস্তি যে এতবড় হয়ে থাকে সেটা আগে কখনো দেখিনি। পানির মধ্যে ভাসছে। যাইহোক এরপর আমরা সামনের দিয়ে এগিয়ে যায়। গিয়ে দেখি ২০০ মিটারের একা ঝুলন্ত ব্রীজ। সেটা পার করে ঐপাশে যেতে হবে। এবং ব্রীজের উঠার ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা। এখানে কিছুই ফ্রী নেই। কী আর করার বাধ্য হয়ে কেটে নিলাম টিকিট। ব্রীজের সামনে গিয়ে যথারীতি আমরা ফটোগ্রাফি করলাম। ঝুলন্ত ব্রীজ হলেও ব্রীজের নিচে পানি ছিল না কোনো।
তবে একটু বেশি মানুষ উঠে হাঁটাহাঁটি করলে ব্রীজটা কাঁপতে থাকে। এরপর আমরা সামনের দিকে যায়। প্রথমেই আমাদের চোখে পড়ে দুইটা অনেক বড় পাখি। এদের মধ্যে একটা ছিল উঠ পাখি। এবং আরেকটা উঠ পাখির মতোই দেখতে ছিল তবে ঐটার নাম ছিল ইমু গার্ডেন। এই পাখিগুলো ছিল স্টিলের নেট দিয়ে ঘেরা একটা আবদ্ধ জায়গাই। এরপর আরও সামনের দিকে গিয়ে দেখি ঐরকম নেট দিয়ে আবদ্ধ একটা জায়গাই অনেকগুলো বড় বড় শকুন। শকুন আমাদের প্রকৃতির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রাণী আমরা সবাই জানি। তবে এখন বাংলাদেশে খুব একটা শকুন দেখাই না। ওখানৈ অনেকগুলো শকুন ছিল। এবং সত্যি বলতে এতো বড় শকুন আমি আগে কখনোই দেখি নাই। শকুন দেখা শেষ করে আমরা যায় অজোগর সাপ দেখতে। বেশ অনেক নিরাপত্তা এবং কড়া পাহাড়ায় রাখা হয়েছে অজোগর সাপকে। অজোগর সাপের পাশেই ছিল ঘড়িয়াল। ঘড়িয়াল অনেক টা কুমিরের মতোই দেখতে। তবে এটা অন্য প্রজাতির কুমিড় বলতে পারেন।
এবার একটা কথা বলি আগে ডিসকভারি চ্যানেলে একটা প্রাণী দেখতাম যেটা দেখতে কাঠবিড়ালির মতো হলেই বেশ বড় হয়ে থাকে। এবং ওটার চালচলন খুবই দ্রুত। দেখতে অবশ্য বেশ কিউট লাগে। এতোদিন ওটার নাম জানতাম না। গাজীপুর সাফারিপার্কে গিয়ে দেখা হয়ে যায় সেই প্রাণিটার সঙ্গে। এবং দেখি প্রাণীটার নাম লেখা রয়েছে লেমুর। দেখতে অবশ্য বেশ কিউট। লেমুর এর পাশেই ছিল লাফারু এবং বানর। তবে বানর ছিল দুইটা একটা মা এবং অন্যটা বাচ্চা। আমাদের দেখেই বাচ্চা বানরটা আমাদের দিকে তেড়ে আসলো। এবং নেটের কাছে এসে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকল। আমরা ছবি তুলছি দেখে বানরের বাচ্চা টা যেন পোস দেওয়া শুরু করল হা হা হা। বানরের বাচ্চা টার সঙ্গে আমরা বেশ মজা নিয়েছিলাম হা হা। যাইহোক এরপর আমরা আরেকটু এগিয়ে যায়। গিয়ে দেখি একটা পুকুরের বিশাল সাইজের দুইটা কুমিড়। এবং কুমিড় দুইটা এমন ভাবে পুকুরের উপরে শুয়ে আছে মনে হচ্ছে মারা গেছে। প্রথম বার এই অবস্থায় দেখলে কুমির টা মারা গেছে এটা ভেবে যে কেউ ভুল করবে।
সময় তখন প্রায় সাড়ে পাঁচটা। রীতিমতো সাফারি পার্ক কতৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে যেন বের হয়ে আসি। কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা নামবে। আমাদের ঘোরাঘুরি প্রায় শেষ। শেষ বিকেলে বাইরের বাগানের দিকে আমরা আরও কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করলাম। বেশ ভালো অনুভব করছিলাম। ঢাকার মধ্যে এইরকম শান্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ আর নেই। সাফারি পার্ক একটা ভালো পর্যটন জায়গা হলেও ভেতরটা বেশ পরিষ্কার এটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। এবং আমরা বাইরে চলে আসলাম। এরপর আমরা একটা গ্রুপ ফটো তুলব ঠিক করলাম। কিন্তু ছবিটা তুলে দেবে কে। পরে একজন ভাইকে বলতে উনি বললেন ঠিক আছে আমি তুলে দিচ্ছি। পরবর্তীতে ঐ ভাই আমাদের বেশ কিছু ছবি তুলে দেয়। শেষ হয়ে আমাদের সাফারি পার্ক ঘোরা। তবে বের হয়ে আমাদের প্রচণ্ড গরম লাগছিল। দেখি পাশেই একজন আইসক্রিম বিক্রি করছিল। পাঁচজন পাঁচটা আইসক্রিম নেয়। খেতে মোটামুটি ছিল। সাফারি পার্কে সময় টা বেশ দারুণ কাটে আমাদের।।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | মে,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.