ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ- কলা গাছের নৌকা
আজ - শনিবার
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমি আমার জীবনের অনেক মজাদার একটা স্মৃতি আপনাদের শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আজকের পোস্টটা অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং হবে তবে চলুন শুরু করি। মানুষ যখন ছোট থাকে তার এক ,এক বয়সে এক এক রকম শখ থাকে যেমন যখন একেবারে ছোট থাকে চার থেকে পাঁচ বছর তখন বিশেষ করে শখ হয় গুটি খেলার। আমি জানিনা আপনারা কাছের গুটি খেলেছেন কি না তবে আমি জীবনে। এই খেলাটা অনেক খেলেছি এবং অনেক গুটি পেতাম তারপরে সেগুলো এমনিতেই সাজিয়ে রাখতাম। এগুলো দেখতেই বেশ চমৎকার লাগত। আপনারা জীবনে এভাবে কাচের গুটি খেলেছেন কিনা চাইলে কমেন্টে জানিয়ে দেবেন।তাহলে আমিও জানতে পারবো যে কে কে আমার মত এমন কাচের গুটি খেলেছে আবার এই বয়সটা যখন একটু উত্তীর্ণ হয় তখন একটা ট্রেন্ড চলে আসে সেটা হচ্ছে তিন চাকার বেয়াইন গাড়ি চালানো। আমার মনে আছে আমার তিন চাকার একটা এমন গাড়ি ছিল যেই গাড়িতে সারাদিন আমি উঠে ঘুরে বেড়াতাম হাহাহা এটা একটা আলাদা মজা ছিল ।
তারপরে সময় আসলো এবার সবাইকে কলাগাছ দিয়ে নৌকা বানাতে হবে। আমাদের এদিকে বৃষ্টির সময় খাল দিল নদী নালা পানিতে টই টুমর হয়ে যেত তখন সেখানে অনেক ধরনের মাছ যেমন পেতাম তেমনি ওই পানির ভিতরে আমরা অনেক বেশি মজা করতাম বিশেষ করে কলা গাছ বানিয়ে সেই কলা গাছের নৌকা সবাই মিলে তৈরি করতাম এবং তার উপরে উঠে সারাদিন নৌকা বাইতাম। আহ, কি যে একটা মজা। নৌকা বানানোর প্রসেসটা খুবই সোজা ছিল তিন থেকে চারটা কলা গাছ প্রথমে সংগ্রহ করতাম এবং তার ভিতরে বাসের যেই লম্বা, লম্বা কঞ্চি গুলো রয়েছে ওগুলো দিয়ে দিতাম এবং সুন্দর করে তার সাথে বেঁধে ওটা খালে বিলে বা পুকুরে নামিয়ে দিতাম এবং তার উপরে চড়ে মজা করে নৌকাবাইতাম। এভাবে নৌকা তৈরি করলে একটা দিক থেকে আমাদের অনেক সুবিধা হতো যেমন যদি অধিক পরিমাণে গরম পড়তো সে ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময় নিয়ে গোসল করতে পারতাম এবং যদি সাথে এমন একটা নৌকা থাকতো তাহলে তার উপরে উঠে কোন ঠান্ডা বা ছায়া জায়গাতে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারতাম।
যেটা আমাদের প্রত্যেকের জন্য দারুন একটা বিষয় ছিল। এবার চলে আসলো ধনুক তৈরি করার প্রতিযোগিতা একইভাবে আমরা বাঁশের কুঞ্চি ব্যবহার করে তা বেকিয়ে তার সাথে শক্তপু দড়ি বেঁধে ধনুক তৈরি করতাম এবং সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন রকম পশু পাখি শিকার করতে যেতাম কিন্তু ওই ধনুকগুলো দিয়ে কিছুই হতো না কারণ আমরা যদি এক দিক থেকে মারতাম তাহলে বাতাসে অন্যদিকে চলে যেতো । যেটা খুবই বিরক্তিকর কিন্তু এখন এ বিষয়গুলো অনেক মজার লাগে হাহাহা। তো এভাবে ধনুক তৈরি করার পরে একসময় বুঝতে পারলাম যে ধনুকের যেই কাঠিটা রয়েছে ওটা একটা বিশেষ কায়দায় ডিজাইন করতে হয় তাহলে বাতাস ভেদ করে সোজাসুজি এটা যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আম্মু এবং আব্বু এটি তৈরি করতে নিষেধ করলেন কারণ অনেক সময় দেখা যায় যে বন্ধু-বান্ধব একসঙ্গে খেলা করতে গেলে যদি কারো গায়ে লেগে যায় তাহলে সে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পর এগুলো মাথায় রেখে তৈরি করা হয়নি।
যদি আমরা কলার গাছ দিয়ে মার বা নৌকা তৈরি করতাম তাহলে আরেকটা বিশেষ সুবিধা পেতাম সেটা হচ্ছে আমরা খালে বিলে কারেন্ট জাল পেতে রাখতাম কৈ মাছ ধরার জন্য। এবং যদি এই কলা গাছের নৌকা সাথে থাকতো তাহলে এর উপরে উঠে অনেক দূর দূরান্ত পর্যন্ত এই কারেন্ট জাল গুলো বিস্তৃত করতে পারতাম সেই ক্ষেত্রে মাছ যেমন অনেক বেশি ধরতে পারতাম এবং খাটনি টাও অনেক কমে যেত। এটা একটা দারুন বিষয় ছিল যে অনেক সময় খেলা ধুলা করার বয়সে একটা কাজের কাজ করে ফেলতাম ।এবং এটি অনেক সময় আমাদের অনেক কাজে লেগে যেত। তবে আমরা গোসল করার সময়ই কলাগাছ এমনিতেই ব্যবহার করতাম কলা গাছের উপরে বসে সাঁতার কাটতাম শুয়ে সাঁতার করতাম আহ কি যে মজা সাঁতার কাটার মজাটাই অন্যরকম হয়ে যেত। আপনারা কি সাঁতার কাটতে পারেন? চাইলে কমেন্টে জানাতে পারেন আমি কিন্তু একটু একটু পারি হিহিহি।
কলা গাছ দিয়ে যে নৌকাগুলো আমরা তৈরি করতাম এগুলো অনেক সময় আবার ভেলা বলে আখ্যায়িত করা হয় । ছোটবেলা থেকেই আমরা এটাকে নৌকা বলে থাকি তবে যে যাই বলুক না কেন জিনিসটা কিন্তু একই । আর এই কলা গাছের নৌকাতে চড়ে কি একটা মজা আপনারা যদি কেউ চড়ে থাকেন তাহলে হয়তোবা এর আনন্দটা উপভোগ করতে পারবেন। মাঝেমধ্যে আমাদের পাশে যে বিলটা রয়েছে ওই বিলে এর পাশে অনেকগুলো হাইব্রিকেট বড়ই ছিল এবং ওই বড়ুয়ের কিছু ডাল পানির দিকে ঝুঁকে থাকতো যার ফলে ওখান থেকে কেউ বড়ই পারতো না। আমাদের কাছে যখন এই নৌকাটা থাকতো তখন আমরা ওই গাছের নিচে গিয়ে গুলো পেড়ে এনে মজা করে খেতাম এবং গোসল করতাম। আপনাদের জীবনে এমন সুন্দর মুহূর্ত থেকে থাকলে অবশ্যই আমাদের জানাতে পারেন তাহলে আমরাও ওই সময়টা উপভোগ করতে পারব । ধন্যবাদ এতক্ষণ পাশে থেকে ব্লকটি উপভোগ করার জন্য আবারও খুব শীঘ্রই দেখা হচ্ছে নতুন কোন পোস্টে।
ব্লগার | @emonv |
---|---|
ডিভাইস | Infinix note 11 pro |
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছোটবেলায় কত বছর যে এই কলার মাড় তৈরি করে খেলা করেছি তার ঠিক নেই। পুকুরে গোসল করতে নামলেই আগেই কলার মাড় নিয়ে খেলা করেছি। তবে এখনকার ছেলেরা সেটা বুঝবে না এতে কত আনন্দ রয়েছে। যাই হোক অনেকদিন পর অতীত স্মৃতি মনে হলো পোস্ট পড়ে।