গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা। (দশম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ10 days ago
গল্প:) ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা

ছবিটি আনস্প্লেস থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

প্রথম পর্বদ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব
ষষ্ঠ পর্ব
সপ্তম পর্ব
অষ্টম পর্ব
নবম পর্ব

সাল: ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।
শিবলিং শহর, তেজদীপ্ত দুপুর


হেথাং সরাসরি জিংহনের রাজ দরবারে প্রবেশ করেছে ছুরবালার পোড়া কাপড় নিয়ে। রাজ দরবারের সবার চোখ হেথাংয়ের দিকে। কারন আগেও একবার এই যুবক রাজদরবারে এসে সবার চক্ষু চড়কগাছ ঘটিয়েছিল। যাইহোক কাপড়ের ছাই ঠিক জিংহনের সামনে রাখা হয়েছে। জিংহন রেগে ওঠে এবং হুংকার ছেড়ে বলে আমার দরবারে এসব কি? তুমি ছাইপাশ কেন নিয়ে এসেছো এখানে? হেথাং মুখে মুচকি হাসি দিয়ে বলে, রাজামশাই গতরাতে ছুরবালা আমার রত্ন পাথরের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে ছাই হয়ে গেছে। গতকাল সে কৌশলে আমার কাছাকাছি আসে এবং রত্ন পাথর সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে। পরবর্তী সময়ে সে যখন‌ আরো গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করে হঠাৎ করেই তার শরীরে আগুন ধরে যায়। আমার কিছু করার ছিল না, সে মারা গেছে। এইযে তার শরীরের অংশ বিশেষ যা এই ছাইয়ের মধ্যে রয়েছে। আমি বারবার সবাইকে সাবধান করেছিলাম, এই পাথরের বিষয়ে নাক না গলানোর জন্য। কিন্তু এরকম অনেকেরই রয়েছে যারা এখনো রহস্য উন্মোচন করতে চাইছে। খুব তাড়াতাড়ি তাদের পরিনত ঠিক তাই হবে, যা ছুরবালার ক্ষেত্রে ঘটেছে।

রাজা জিংহন কেমন যেন চিন্তায় পরে গেলো। শরীর ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে আসছে, ঘাম ঝরছে অনবরত। মুখ দিয়ে কোন কথা বেরুচ্ছে না, মনে হচ্ছে সিংহাসন থেকে পরে যাবে। তাহলে তার অবস্থা এই ছুরবালার মতো হবে। বুদ্ধিমান হেথাং জিংহনের মুখের দিকে তাকিয়ে সবকিছু বুঝে নেয়, তার ছোড়া ঢিল ঠিক জায়গায় লেগেছে। সে আরো একটু খোঁচা দেয়ার জন্য বলে ওঠে, যারা যারা আমার রত্নপাথর নিয়ে গোপন চক্রান্ত করছে তাদের সবার অবস্থা ঠিক ছুরবালার মতোই হবে। রাজা জিংহন ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকে দুশ্চিন্তায়। হঠাৎ করেই তিনি চেয়ার থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তার হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

হেথাং বুঝতে পারে শিকার টোপ গিলেছে, এবার কিছুটা অভিনয়ের মাত্রা বাড়াতে হবে। সে সবাইকে সাবধান করে জিংহনের লাশ স্পর্শ করতে, কারন সে অভিশপ্ত। যেকোন সময় তার শরীরে আগুন ধরে যাবে। সবাই ভয়ে শিউরে উঠে। এরপর সে সবাইকে বলে যদি তাকে রাজা করা হয় তাহলেই একমাত্র তার শরীর বেঁচে যাবে নাহলে তার শরীর ভস্মীভূত হবে, তাছাড়াও অভিশাপ হয়তো এখানকার সবার দিকে ছড়িয়ে যাবে। সভাসদগন সবাই মিলে চিন্তায় পড়ে যায় যুবকের কথা শুনে, সবার মৃত্যু ভয় ঢুকে যায়। অবশেষে সবাই রাজি হয় তাকে রাজা করতে।

এরপর জিংহনের লাশ মাটি চাপা দেয়া হয় এবং এই কাজটিতে হেথাং নিজে অংশ নিয়ে সমাধা করে। এবার হেথাং নিশ্চিন্ত হয় তার পথের কাঁটা সরে গেছে, সে যা খুশি তাই এখন করতে পারে। সে রত্নখচিত জামা পরিধান করে সিংহাসনে আরোহণ করলো। এদিকে পুরো রাজ্যে জিংহনের অভিশাপের কথা ছড়িয়ে পড়েছে আর তার মৃত্যুতে পুরো রাজ্যে শোকের মাতম চলছে।

হেথাং রাজ্য পরিচালনায় অভিজ্ঞ নয়, সে নিজেও বেশ চিন্তিত কিভাবে এতো বড় সাম্রাজ্য চালাবে। সে কার্লোকে তার মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়। আসলে কার্লো নিজেই চোর বাটপার সে কিভাবে এত বড় দায়িত্ব নেবে, তবুও সে হেথাংয়ের কথা মেনে নেয়। কিন্তু চোর বাটপার হলেও হেথাংয়ের কাজগুলো তার ভালো লাগেনা, কারন হেথাং তার সীমা অতিক্রম করেছে। কার্লো ভেতরে ভেতরে চিন্তা করতে থাকে কিভাবে তাকে সরিয়ে দেয়া যায়। প্রথমেই তার এই রত্ন পাথরের রহস্য উদঘাটন করতে হবে।।।।।

"চলবে"



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 days ago 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশা গল্পটি শুরু থেকেই পড়ে আসতেছি। চমৎকার একটি গল্প যতই পড়ছি যেনো শেষ হচ্ছে না। হেথাং আবারো বুদ্ধি করে রাজা মশাইকে বোকা বানালো অবশেষে ব্যাচারা মৃত্যু বরণ করলো। কার্লো কে আমার প্রথম থেকেই সন্দেহ লাগে। কে জানি শেষ পর্যন্ত কি হয়। নতুন পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভিন্ন রকম গল্প তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 days ago 

ধনকুবের হেথাং এবং তার জীবদ্দশার দশম পর্ব পড়ে খুবই ভালো লাগলো। গল্পের প্রতিটি পর্ব ধারাবাহিক ভাবে উপস্থাপনা করেছেন। ছুরবালা রত্ন পাথরের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে হেথাং এর হাতে ছাই হয়েছে। এই ঘটনা শুনে রাজা ভয়ে মারা গিয়েছে। অবশেষে হেথাং রাজ্য দখল করে এবং রাজা হলেন। তবে হেথাং কার্লোকে তার মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিপদ ডেকে আনবে মনে হচ্ছে। পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম। দারুন একটি গল্প আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।