আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ যন্ত্রণার অস্থিরতা ]

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago (edited)

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি, এটা শুধু বলার জন্য বলা কিন্তু মানসিকভাবে ভালো নেই, একটা অস্বস্তি নিদারুণভাবে হৃদয় ভেঙ্গে দিয়েছে। বিশ্বাসের জায়গাটা ভীষণভাবে নড়বড়ে হয়ে গেছে। কাকে বিশ্বাস করবেন? কাকে কাছে রাখবেন? কাকে ক্ষমা করবেন? কতটা প্রতিশোধ পরায়ণ হবেন? এমন অনেক কিছু থাকে যা আমাদের ভীষণভাবে অস্থির করে তোলে, হাজারও প্রশ্ন আমাদের মাথায় ঘুরতে থাকে, উদ্ভদ সকল চিন্তা আমাদের উত্তেজিত করে তোলে। চিন্তা করে দেখুন না, আপনার জীবনে কখনো না কখনো এমন সময় এসেছিলো, কাছে কিংবা দূরে থাকা কারো উপর অগাদ বিশ্বাস নিয়ে ভরসা করেছিলেন কিন্তু কোন না কোন ভাবে সেই মানুষটি আপনার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে? যদি না ঘটে থাকে এমন তাহলে নিঃসন্দেহে আপনি খুব ভাগ্যবান একজন মানুষ।

কিন্তু আমি খুবই দূর্ভাগ্যবান একজন মানুষ, খারাপও বলতে পারেন কারন আমার সাথে এমন বহুবার ঘটেছে, সেই স্কুল জীবন হতে। সত্যি বলছি তবে আমি কোন দিনও প্রতিশোধ পরায়ণ হতে পারিনি, হতে চাইনি। কারণ ঐ একটা বিশ্বাস ছিলো হৃদয়ে, প্রকৃতি তার নিজস্ব গতিতে সব কিছুর বিচার করেন। আমি যে কাজটা সেই স্কুল জীবন হতে করে আসছি সেটা হলো, যন্ত্রণা নিয়ে সরে আসা, বিধ্বস্ত হৃদয় নিয়ে আড়ালে চলে যাওয়া, কারন বাড়াবাড়ি করার মানেই হলো অবশিষ্ট সম্মানটুকু নষ্ট করা। আমি এটা এখনো করি, অবিশ্বাস তৈরী হলে, আস্থার জায়গা নষ্ট হয়ে গেলে, নিজের মাথায় দোষ নিয়ে আড়াল হয়ে যাই। যদি আমার দোষ থাকে তাহলে আমি দোষী আর যদি সেটা না থাকে তাহলে প্রকৃতি সেটা বিচার করবে।

sunset-1283872_1280.jpg

একটা গল্প পড়েছিলাম, প্রসঙ্গক্রমে একটু বলি কারণ আমি যখন ইন্টারে পড়ি তখন আমার বিশ্বাসটা আরো পাকাপোক্ত হয়ে যায়। ‘দি লাঞ্চ অন’ বিখ্যাত একটা গল্প, যার শেষটায় একটা আত্মবিশ্বাস তৈরী হওয়ার মতো। ঈশ্বর ঠিক আছেন, প্রকৃতি ঠিক সবটা মনে রাখে এবং সঠিকভাবে সেটার বিচার করে। বিশ্বাস করেন এই গল্পটা পড়ার পর আমার আত্মবিশ্বাস নিদারুণভাবে দ্বিগুন হয়ে গিয়েছিলো। আমি ঠকেছি বহুবার, প্রতারিত হয়েছি বহুবার কিন্তু বিশ্বাস করেন আমি হেরে যাইনি একবারও। নিশ্চুপ হয়ে গেছি, আড়ালে চলে গেছি কিন্তু হেরে যাইনি। কারন আমি কখনো কারো ক্ষতি করেনি, করার চেষ্টাও করেনি। না না না আমি ভালো মানুষ সেটা কখনোই কারো কাছে দাবী করেনি, সততার পুরস্কারও চাইনি কারো কাছে।

কারন এই সমাজ সেটা কোন দিনও কাউকে দেয়নি, দিতেও পারবে না এটাই বাস্তব। যাইহোক, সম্মান এবং বিশ্বাস এর জায়গাটা নষ্ট হয়ে গেলে সব নষ্ট হয়ে যায়। টাকা পয়সা কিংবা ক্ষমতা সেটা হয়তো সাময়ীক সময় আমাদের আনন্দ দেয়, উচ্চ বিলাশে মেতে থাকার সুযোগ করে দেয় কিন্তু ইতিহাস স্বাক্ষী তার শেষ পরিনতিটা কখনোই সুন্দর কিংবা প্রশান্তিময় হয় না, বরং অসম্মান এবং লাঞ্ছনায় ডুবে যায়। তাছাড়া আমাদের সমাজে থাকা মানুষগুলোও সর্বদা সেই মানুষগুলোকেই সাপোর্ট করে যায়, একটা আশংকা এবং ভয় হতে, তারাও চাননা নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করতে এবং সত্য বিষয়টিকে সামনে আনতে। এভাবেই হয়তো চলবে পৃথিবী, এভাবেই হয়তো স্বাক্ষী থাকবে প্রকৃতি।

যাইহোক, অনাকাংখিত ও অপ্রত্যাশিত অনেক কথা বলে ফেলেছি। মাঝে মাঝে এমন হয়না ছোটখাটো বিষয়েও হৃদয়ে অনেক বড় আঘাত লাগে, এমন হয় না অপ্রত্যাশিত কিছু খুব বেশী অস্থির করে তোলে,, মেনে নিতে অনেক বেশী কষ্ট হয়। আলো থেকে অন্ধকারকে তখন অনেক বেশী আপন মনে হয়, কারন সেখানে নিজেকেও দেখা যায় না, চারপাশে কোন শত্রু থাকলেও সেটা বুঝা যায় না, তাই অন্ধকারে কে আঘাত করলো, সে আপন মানুষ না পর মানুষ সেটা চেনারও সুযোগ থাকে না। আর এটাই হয়তো আমাদের জন্য অধীক শান্তনার হয়, অন্তত আপন মানুষ আঘাত করলেও সেটা বুঝতে না পারাটা। অনেক ধন্যবাদ আবোল তাবোল জীবনের গল্পের আজকের বকবক পড়ার জন্য।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @hafizullah,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 2 months ago 

প্রিয় হাফিজুল্লাহ ভাই মাত্র কয়েকদিনের পরিচয় আপনার সাথে এই অল্প দিনের মধ্যে আপনাকে অনেক কাছের একটি মানুষ মনে হয়। কারন সকাল ১০ টা থেকে রাত্র ১০ টা পর্যন্ত অফিসেই কাটাতে হয়। বাইরে কারো সাথে সময় দেওয়া হয় না। কাজের ফাঁকে ফাঁকে বাংলা ব্লগে সময় দিয়ে থাকি বিশেষকরে আপনার পোষ্টগুলি নিয়মিত পড়া হয়। শুধুমাত্র তাই আপনার মন খারাপ শুনে আমারও অনেক মন খারাপ হয়ে গেল। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক খারাপ এবং ভাল পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হয় এবং বুদ্ধিমানের কাজ হল নিজের সম্মান ঠিক রাখার জন্য সর্বদা চুপ থাকা। তাহলে সর্ব সময়ে আপনিই নিজের মনের কাছে বিজয়ী হবেন। মনের বিভিন্ন কষ্টগুলি মাঝে মাঝে কারোসাথে শেয়ার করিতে হয় তাহলে মনটা কিছুটা হলেও হালকা হবে। তাই সময় পেলেই নক দিয়েন। ০১৯৪২-২০১৩০৭ (WhatsApp)

 2 months ago 

ভাই বাস্তবতা অনেক বেশী কঠিন, জীবনের তাগিতে এবং একটু স্বাচ্ছন্দ্য ধরে রাখার জন্য অনেকটাই আপনার মতো রোবটিক হয়ে গেছি। এসব মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি, হয়তো সব সময়টা পারি না। ধন্যবাদ

 2 months ago 

আসলেই কাউকে মন থেকে বিশ্বাস করার পর যদি কেউ সেই বিশ্বাসটা ভেঙে দেয়, তখন সত্যিই খুব খারাপ লাগে। আর এমন আঘাত যদি কেউ বারবার পায়,তাহলে তার ভিতরটা একেবারে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। আসলে যারা ভালো মনের মানুষ, তাদের সাথেই এমনটা বারবার হয়। তাছাড়া তারা প্রতিশোধও নেয় না। কারণ তাদের ধৈর্য্য শক্তি খুবই বেশি। তাই আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে একসময় উত্তম প্রতিদান দিয়ে থাকেন। আপনার মন যাতে তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়, সেই কামনা করছি ভাই। আপনি খুব ভালো মনের একজন মানুষ। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

বিশ্বাস একবার ভেঙ্গে গেলে সেটা আর ঠিক হয় না, বাস্তবতা আমাদের অনেক কঠিন পরিস্থিতির মাঝে ঠেলে দেয়, তাইতো বার বার আমরা গতিশীল জীবনে হতাশায় ডুবে যাই।

 2 months ago 

ভাইয়া কাউকে বিশ্বাস করলে সে যদি বিশ্বাস ভেঙে দেয় সত্যি তখন অনেক খারাপ লাগে। আর যারা নরম মনের মানুষ আমার মনে হয় তাদের সাথে এমনটা বারবার হয়ে থাকে। খারাপ মানুষের সাথে পারার উপায় নেই। তবে তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য উপরওয়ালা আছেন নিশ্চয়ই একদিন তাদের ঠিক শাস্তি দিবেন। দোয়াকরি তারাতাড়ি আপনার মনের অবস্থা ভালো হয়ে যাবে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে, যারা সময়ে অসময়ে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা প্রকাশ করার চেষ্টা করেন। আবার কিছু মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত সেসবের স্বীকার হয়ে থাকেন।

 2 months ago 

মানসিক অস্থিরতা খুবই কষ্টের। কাছের মানুষ কিংবা বিশ্বস্ত মানুষরা যদি আঘাত করে তাহলে আরো বেশি খারাপ লাগে ভাইয়া। তবুও নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

 2 months ago 

হুম, জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে এমন অনেক কষ্ট নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হয়, এটাই হয়তো আমাদের সবচেয়ে বড় দূর্ভাগ্য।