শৈশবের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস!

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

25-11-2024

১০ অগ্রহায়ণ , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼


children-8082256_1280.webp

From pixabay

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো থাকার চেষ্টা করছেন। আমিও ভালো থাকার চেষ্টা করছি। এখন যেহেতু শীতের আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে, যার কারণে অনেকেরই ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছে। যেহেতু ওয়েদার পরিবর্তন হয়েছে এজন্য সবারই এমন অবস্থা। শীতটা অনুভূত হবে আরও বেশি কিছুদিন পরে। কারণ বাংলাদেশে শীতলতম মাস হচ্ছে জানুয়ারী। তো আজকে শৈশবের স্মৃতিচারণ করার চেষ্টা করলাম। আসলে শৈশবের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসটাই ছিল সবচেয়ে মজার! কারণ নভেম্বরের দিকে পরীক্ষা দিয়ে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি আগেই পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। তখন শুধু খেলাধুলা আর ঘুরাঘুরির মধ্যে কেটে যেত। শুধু অপেক্ষায় থাকতাম কখন পরীক্ষা শেষ হবে। পরীক্ষা শেষ হলেই চলে যেতাম মামা বাড়ি। মামা বাড়িতে তো তখন সবাই থাকতো। মামাতো ভাইদের নিয়ে তখন ক্রিকেট খেলা হতো। আমি আবার ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করতাম। মামাতো ভাইয়েরা আগেই জমিতে মাঠ বানিয়ে রেখে দিতো!

আর সন্ধ্যা হলেই চলতো নৃত্য পরিবেশনা। মামাতো বোন সবাই একে একে নৃত্য পরিবেশনা করতো। আমার এক মামাতো বোন ছিল যার নাম ছিল ইতি। ইতি আপুর নাচ দেখার জন্য সবাই বসে থাকতো। তারপর রাতভর চলতো আড্ডা! কতো রকমের কথা হতো! নানু বাড়িতে বেশিদিন থাকা হতো না। তিন থেকে চারদিন থেকে চলে আসতাম। কারন বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও আমি এতোদিন থাকতে পারতাম না। আর এখন মাসের পর মাস বাড়ি ছেড়ে দূরে থাকি । মোটেও এতো খারাপ লাগে না এখন। আমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়ে দিতো ডিসেম্বরের শেষের দিকে। আর নতুন বছরের প্রথম দিনই পেয়ে যেতাম নতুন বই। নানু বাড়ি থেকে এসে আবারো সেই খেলাধুলায় মেতে থাকতাম সারাদিন। সকালে ব্যাডমিন্টন বিকালে ক্রিকেট আবার সন্ধ্যা থেকে হতো ব্যাডমিন্টন খেলা। ব্যাডমিন্টন খেলা হতো শরীর গরম করার জন্য।

বিকাল হলে তো ক্রিকেট জমে যেত। দক্ষিণ পাড়া বনাম উত্তর পাড়া খেলা হতো। আমি অবশ্য ক্রিকেটটা বেশ ভালো খেলতাম। নভেম্বর-ডিসেম্বর এ দুমাস প্রচুর খেলা হতো। না ছিল সন্ধ্যা হলে বই নিয়ে পড়ার চিন্তা, না ছিল স্কুলে যাওয়ার চিন্তা। দুইটা মাস পরীক্ষা শেষ করে রিলাক্সে থাকা যেত। তবে পরীক্ষার পরে অপেক্ষা করতাম কখন রেজাল্ট দিবে। তখন অন্যরকম একটা ফ্যানটাসি কাজ করত মনে। আবার আমরা পিকনিকের আয়োজন করতাম। সবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিরিয়ানীর রান্না করা হত। এছাড়া ভাড়া করে সাউন্ড বক্স নিয়ে আসা হতো। রাতভর গান বাজনা হতো। আর সবাই মিলে আমরা উপভোগ করতাম। পিকনিকটা হতো মূলত জমিতে। ধান কাটার পর জমি ফাকাঁ থাকতো। আর সেখানেই রাতে পিকনিকের আয়োজন করা হতো।

পিকনিকের জন্য অবশ্য অনেক কথা শুনতে হতো। রাত অবধি যে চলতো এসব গান বাজনা! শেষ কবে নভেম্বর ডিসেম্বর মাসের জন্য অপেক্ষা করেছি মনে নেই। সেই দিনগুলো আর কখনো ফিরে পাবো না। সবাইকে নিয়ে পিকনিক খেলাও হয়না এখন। আর ক্রিকেট খেলা তো হয়ই না! সময়ের সাথে সবকিছু পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে আমাদের মানসিকতাও। তবে শৈশবের সময়গুলো এখন বড্ড মিস করি।


10% beneficary for @shyfox ❤️

4HFqJv9qRjVeVQzX3gvDHytNF793bg88B7fESPieLQ8dxJ5y8XjjDFPXNyuWkyUvGeefgivUNtt4oK3B1H7ELkL4fDkzKqXxGAshB99sxgyPyS1kgn14A1ej1iKmSPLBdLAbEc5NgvX4N3ZWkk95JV2xuTPzTR7cSgv.jpeg

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG_4442.JPG

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ডুয়েটে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 days ago 

বাহ আপানারা একেবারে উওর দক্ষিণ পাড়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়তেন। সত্যি আমাদের সময়ে নভেম্বর ডিসেম্বর মাসের ব‍্যাপার টাই ছিল অন‍্যরকম। বেশ ভালো লাগল আপনার পোস্ট টা দেখে। পুরাতন দিনের স্মৃতিগুলো তুলে এনেছেন।।

 2 days ago 

আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে