আমার স্নেহের ছাগলটা
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য। বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট শেয়ার করতে আমার খুবই ভালো লাগে। মাঝে মাঝে কিছু বিষয় পোস্ট করে রাখি যেন দীর্ঘদিন আমার আইডিতে দেখতে পাই এবং স্মৃতি হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি স্মৃতি ধরে রাখার জন্য আজকের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। এখানে দেখতে পারবেন আমার হাতে পোষা প্রিয় ছাগলটা।
প্রিয় ছাগল
আমাদের বাড়িতে একটা ছাগল ছিল তার দুইটা বাচ্চা হয়েছিল। বাচ্চা দুইটাই ছিল খাসি ছাগল। আমি খুব আদর যত্ন করে তাদের বড় করতে থাকলাম দিনের দিন। আমি যখনই সুযোগ পেতাম তাদের যত্ন নিতাম খাওয়া দাওয়ার বিষয়ে। তাই ছাগল দুইটা এতটাই আদর যত্নে বড় হতে থাকলো, মনে হতো যেন নিজেদের সন্তানের মত। কারণ নিজে না খেয়েও তাদের খাওয়ানোর চেষ্টা থাকতো সবসময়। ছাগল দুইটা বেশ আদরে বড় হতে থাকলো এবং বাড়ি থেকে কোথাও যেত না। মাঝেমধ্যে রাগ হলে গেটের বাইরে বের করে দিতাম গেট টা আটকিয়ে দিতাম। তারা মরা কান্নার মত গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ডাকত। বেশ মায়া লাগতো, যখন কাজকাম শেষ হতো তখন তাদের জন্য গেট আবার খুলে দিতাম বাড়ির মধ্যে থাকতো। ঠিক তারই মধ্য থেকে একটি ছাগল নির্দিষ্ট করা হলো আমাদের একমাত্র মেয়ের সামিয়ার আকিকা দেওয়ার জন্য। এরপর কাঙ্খিত সেই দিন চলে আসলো। সকাল সকাল রাজের আব্বু ছাগলটিকে গোসল করিয়ে দিল।
হয়তো ছাগলটার জানা ছিল না আজকে তার দুনিয়ার শেষ দিন। তবে বেশ খারাপ লাগছিল অতি আদরে যত্নে বড় করেছি তাই। এরপর ছাগলটিকে খুব ভালোভাবে যত্ন সহকারে সে গা পুছিয়ে দিল। ছাগলের গা পুছানোর মুহূর্ত তাকে একটু রোদে দাঁড় করানো হলো। গোসল করার সময় ছাগলটা বেশ ছটফট করছিল। তবে যখন তাকে ভালোভাবে গা শুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে তখন সে নক করে দাঁড়িয়ে ছিল রোদে। খুব মায়া লাগছিল তার এই অসহায় মুখ দেখে। তবুও নিয়ম মানতে হবে। বেশি মায়া লাগছিল এজন্য যে নিজের হাতে যত্ন করে গড়ায় ছাগলটা। এরপর তার গায়ে হলুদ ছিটিয়ে দেওয়া হলো। গায়ে হলুদ ছিটিয়ে দিলে আরো ভালো হয়।
এরপর কিছুটা সময়ের জন্য ছাগলটাকে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ালো যেদিকে যেদিকে সে বেশি থাকতো। তার ভালোলাগা জায়গা গুলো বারবার দেখানো হয়েছিল। এভাবেই তাকে কিছুটা সময়ের জন্য কাছাকাছি নিয়ে বাড়ানো হলো। পাশাপাশি আমরা বেশ তার সাথে অনেকগুলো ছবি উঠিয়ে রাখলাম, কারণ এতটাই স্নেহের ছাগল ছিল বলে। আসলে স্নেহ দিয়ে গড়া,বুঝতে পারছেন।
এরপর ছাগলটাকে খুব যত্ন সহকারে চাল খাওয়ানো হয়েছিল কিছুক্ষণ। তার খাওয়ানোতে কোন কমতি করা হয়নি। কারণ তার প্রতি আমাদের এতটাই বেশি ভালোবাসা ও ভালোলাগা ছিল যে, যেন অনেকটা কষ্ট লেগেছিল আমাদের সবার। তবে ঐদিন সকালবেলা আমরা সবাই কমবেশি ছাগলটাকে চোখে চোখে রেখে ছিলাম এবং আদর যত্ন করেছিলাম ঠিক এভাবেই। আমার ছেলেটাও যেন তাকে বারবার খাওয়ানোর জন্য চালের থালা নিয়ে বেড়াচ্ছিল। তাই বাবুর সাথে ছবি তুলে রেখেছিলাম ছাগলটার। অতঃপর একটা সময় আমাদের স্নেহের সন্তানের জন্য আকিকার জন্য দেওয়া হয়। আর এভাবেই ঐদিন আমাদের একমাত্র মেয়ে সামিয়ার সাত দিনের মধ্যেই আকিকা সম্পন্ন হয়। তবে আজকে ছাগলটাকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম এই জন্য ছাগলটার মা বেশি অসুস্থ। আশা ছিল এই ছাগলের পেটে আবারো তেমন ছাগল হবে, কিন্তু এতটাই খারাপ অবস্থা হয়ত ছাগলের ধাড়িটা বাঁচবে না। সত্যি কতটাই না মায়া সৃষ্টি হয়েছে এই গৃহপালিত পশুর প্রতি।
ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
---|---|
বিষয় | প্রিয় ছাগ |
লোকেশন | গাংনী- মেহেরপুর |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
ছাগলটির মা অসুস্থ জেনে সত্যিই খারাপ লাগছে আপু। আর আমি সামিয়ার আকিকা করানো হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আসলে আমরা যখন কোন প্রাণী পালন করি সেই প্রাণীগুলোর উপর অন্য রকমের মায়া তৈরি হয়।
একদম আপনি ঠিক বলেছেন