জোঁকের গল্প
ভয়ানক জোঁকের গল্প
আজকে একটি ভয়ংকর হাসির ঘটনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। ছোটবেলায় আমি এবং আমার চাচাতো বোনেরা আমাদের একটিমাত্র পুকুরে গোসল করতাম। প্রতিদিন পুকুরে গোসল করার অভ্যাস ছিল না। কিন্তু প্রচণ্ড গরমের দিনে প্রাইমারি স্কুল থেকে এসেই দুপুরবেলায় লাফ দিতাম। প্রচন্ড গরমে পুকুরের পানিতে গোসল করলে সর্দি লাগে, জ্বর হয়। কিন্তু আমরা তো আর এগুলো বুঝতাম না। সবাই একসাথে খেলাধুলা করতাম। সবার দেখাদেখি আমরা পুকুরে নেমে পড়তাম। একদিন আমার চাচাতো একটি ভাইয়ের প্রচন্ড জ্বর। সে কারো কথা শুনতো না। রোদে খেলাধুলা করতো। এরপর পুকুরে গোসল করতে নেমে অনেকক্ষণ পুকুরের মধ্যে থাকতো। তার এমন মারাত্মক জ্বর হলো সবাই ভয় পেয়ে গেল। সবাই বলাবলি করতো গরম গায়ে পুকুরে গোসল করেছে তাই তার এমন হয়েছে। এদিকে আমাদের তো পুকুরে গোসল করতে আর দেবেই না। কিন্তু আমাদের পুকুরটা বাড়ির পাশে। বাড়ির গার্জেন দের কথা না শুনে যখন তখন নেমে পড়তাম।
একজন আমার বড় ভাইয়া খেয়াল করে দেখলেন বকাবকি করে বা মেরে তো হবে না। সে বুদ্ধি করে একটি জোঁক বিল থেকে ধরে এনেছিল। এরপর পাড়া গায়ে আমাদের সব ছেলে মেয়েদের ডেকে দেখালো। এরপর জোঁকের গল্প বললো। এটা মানুষের শরীরে রক্ত শোষণ করে। অনেক সাহস ভাইয়ার। নিজের শরীরে লাগিয়ে সবাইকে দেখালো। পাড়াগাঁয়ের বয়স্ক অনেকে জোঁক নিয়ে গল্প বলতে থাকলো। আমি প্রথম স্বচক্ষে ওই দিন জোঁক দেখলাম। আমার বেশ ভয় লাগছিল। ভাইয়ের গা থেকে জোঁক টা যখন ছাড়ানো হলো, অনেক রক্ত বের হচ্ছিল। আমি তো রক্ত দেখে খুবই ভয় পেয়ে কান্নার মত হয়ে গেলাম।
ভাইয়া জোঁক টা নিয়ে ছেলে মেয়েদের ভয় দেখালো। এরপর গায়ের পানে আউড়া মারতে গেল। অনেকে ভয় পেল। আমাদের মত ছোটরা কেউ কেউ ভয়ে কান্না করে উঠলো। এরপর সবাইকে দেখালো আর বলতে থাকলো সবাই দেখ জোঁক টা পুকুরের মধ্যে দিয়ে দিলাম। কেউ যদি পুকুরে গোসল করতে নামিশ, তোদের গায়ে লেগে যাবে আর রক্ত খাবে। আমি এইটা ছাড়া আরও পুকুরের মধ্যে এনে দেবো। স্বচক্ষে আমরা যখন দেখলাম জোঁক টা পুকুরের মধ্যে ফেলে দিল। তারপর থেকে আমরা ভয়ে আর সেই পুকুরে নামি নাই।
একপর্যায়ে দেখলাম অনেক মানুষে বলাবলি করতে থাকলো পুকুরের জোঁক ফেলা ঠিক হয়নি। আবার অনেকেই বলল ভাল কাজ করেছ। কারণ সারাদিন অনেক ছেলে মেয়ে পুকুরে নামে। প্রচন্ড রোদ গরমে পুকুরে পানিতে নামতে ভালো লাগে কিন্তু বেশিভাগ সর্দি জ্বর। আর পাড়ার এক চাচাতো ভাইয়ের অবস্থা তো খুবই খারাপ। সে প্রায় মরে যায় যায় এমন অবস্থা। যাই হোক এরপর থেকে আমাদের মত ছেলে মেয়েরা পুকুরে নামা বন্ধ করলো। ভুল করে কেউ যদি পুকুরে নেমে পড়েছে সাথে সাথে উঠে দৌড় দিয়েছে এবং নিজের গায়ে জোঁক লেগে গেছে কিনা তাড়াহুড়া করে দেখা শুরু করেছে। আর এভাবেই প্রচন্ড রোদ গরমে পুকুরে গোসল করা থেকে আমাদের বিরত রাখা হয়েছিল।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ
বিষয় | গল্প |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei P30 Pro-40mp |
Photo editing | PicsArt app |
ক্রেডিট | @jannatul01 |
W3w location | source |
দেশ | বাংলাদেশ |
ব্লগার | আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের সুপ্রিয় বিদ্যুৎ জিরো ওয়ান এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির চারজন সদস্য রয়েছে আমাদের পরিবারে, তার মধ্যে আমি একজন। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য।
অসাধারণ আপু আজকে খুবই মজার একটি টপিক নিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যা পড়ে খুবই ভালো লাগলো। তবে আপনার ভাইকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কারণ সে অভিনব একটি পদ্ধতিতে আপনাদেরকে পুকুরে গোসল করা থেকে বিরত রেখেছিল। যদিও আপনি এখন বড় হয়ে জিনিসটা হাস্যকর লাগছিল তারপরেও আপনাদের বোঝানোর জন্য তখন এটা একটা উপযুক্ত উদাহরণ ছিল। যাই হোক আপু আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
বড়দের একটু বড় বড় বুদ্ধি।
ছোটবেলায় আমরাও পুকুরে গোসল করতাম। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতে দেরি হলে আব্বা মারতে মারতে বাড়িতে আনত। তবে এ বুদ্ধিটা দারুন ছিল। অনেকদিন পর জোঁকের কথা মনে পড়ে গেল। গল্পটা পড়ে ভালো লাগলো আমার। দারুন একটা আইডিয়া পেলাম।
অনেক ভালো করত, মাইরের উপর ওষুধ নাই।
X-promotion
আজকের কাজ সম্পন্ন
আপনার লেখা জোঁকের গল্পটি সুন্দর ছিল।আসলে ছোটবেলায় মনে হয় বড়রা সবসময় এভাবে আমাদের ভয় দেখাতেন।তেমনি জোঁক ধরে এনে আপনাদের বড় ভাইয়া ভয় না দেখালে হয়তো সবাই পুকুরে নেমে স্নান করতো এবং সমস্যায় পড়তে হতো।ধন্যবাদ আপনাকে।
গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।