শিকার- তৃতীয় পর্ব।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
Image Source- https://pixabay.com/illustrations/ai-generated-drugs-drug-addiction-9032012/
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার শিকার গল্পের তৃতীয় পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি।
গত পর্বে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম যে, এমপি খাইরুল আলম ও তার ছেলে বদিউল আলম বিদেশি ভাড়াটিয়া গুন্ডা দিয়ে চক্রান্ত করে এসপি সেলিমকে মেরে সাগরের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছিল। এমনকি তার শরীরের ইউনিফর্ম খুলে তাকে খালি গায়ে জাহাজ থেকে সাগরের পানিতে ফেলে দিয়েছিল। বেশ কিছুদূর এসে ইউনিফর্মটি সাগরের পানিতে ফেলে দিয়েছিল। তবে ইউনিফর্মটি ভাসতে ভাসতে এক সময় জেলের জালে আটকা পড়ে। মাছ ধরার জেলে গুলো জাল ফেলে মাছ ধরতে গিয়ে এসপি সেলিমের ইউনিফর্মটি পেয়ে সেটা কক্সবাজার থানায় জমা দিয়েছে।
এখন এসপি সেলিমের ইউনিফর্ম পেয়ে সবাই মোটামুটি শিউর হয়ে গেল যে, এসপি সেলিম আর বেঁচে নেই। সে হয়তো সলিল সমাধি হয়ে গেছে। অথবা সাগরের কোন মাছ এসপি সেলিমকে খেয়ে ফেলেছে। এভাবে দিন রাত অতিক্রম হতে লাগলো সবাই একটি সেলিমের কথা ভুলেই গেল। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার খেলা বড় কঠিন। তিনি যাকে বাঁচিয়ে রাখতে চান তাকে কেউ মারতে পারেনা। আর তিনি যাকে মেরে ফেলতে চান পৃথিবীর কোন শক্তি তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে না। জন্ম মৃত্যু এগুলো একমাত্র সৃষ্টিকর্তার ইশারাতে আদেশের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তিনি যাকে যেখানে জন্ম এবং মৃত্যু লিখে রেখেছেন, সেখানে সেটাই হবে। চুল পরিমাণ নড়চড় হবে না।
এসপি সেলিমকে সাগরের পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার পরে সেন্টমার্টিনের একদল জেলে জাল ফেলে মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে যাই। সেখানে তারা ইলিশ মাছ সহ সাগরের মাছ আরোহন করতে জাল ফেললে এসপি সেলিমের নিথর দেহ তাদের জালে উঠে আসে। জেলেরা এসপি সেলিমকে ডাঙ্গায় নিয়ে আসে। তারপরে এক জেলের বাড়িতে রেখে এসপি সেলিমের চিকিৎসা করতে থাকে। জেলেরা এসপি সেলিমের নাম শুনেছে কিন্তু কখনো দেখে নাই, যার ফলে তাকে চিনতেও পারে নাই। তবে এসপি সেলিম বেঁচে ছিল। এভাবে দুই থেকে তিন মাস চিকিৎসা করানোর পরে এসপি সেলিম ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলো। সুস্থ হওয়ার পরে সে ধীরে ধীরে তার অতীত স্মরণ করতে লাগলো। এক সময় তার অতীত খুব সুন্দর ভাবে তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে।
সে কে, তার বাড়ি কোথায়, তার কি পেশা ছিল, সে এখানে কিভাবে এলো...সবকিছু ধীরে ধীরে তার স্মৃতিতে ভাঁসতে থাকে। প্রায় ছয় মাস পরে সেলিম পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে। সেলিম জনসাধারণগণ থেকে নিজেকে কিছুটা আড়াল করেই রাখলো। বর্ষার মৌসুম হওয়ার কারণে যদিও সেন্টমার্টিনে তেমন কোন পর্যটক যেত না। তারপরও সেলিম দিনের বেলা তেমন বাহিরে বের হতো না। রাতের বেলা সাগরের পাড়ে বসে চিন্তা করতো,কিভাবে আমাদের দেশকে মাদক থেকে রক্ষা করা যায়। কিভাবে বাহিরের দেশ থেকে নিজের দেশে মাদক প্রবেশ বন্ধ করা যায়। যারা ভালো মানুষের মুখোশ পরে স্মাগলিং করে কিভাবে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা যায়, এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে লাগলো।
তবে এই কাজগুলো করা এত সহজ ছিল না। চিন্তাভাবনা বা পরিকল্পনা করলেই কাজ হয়ে যায় না। এই কাজ করতে গেলে অনেক ক্ষমতার দরকার হবে। সেজন্য কি করা যায় সেলিম সেটা চিন্তা ভাবনা করতে করতে একসময় তার সাবেক ডিআইজি এক স্যারের কথা মনে পড়লো। ডিআইজি স্যার সেলিমকে খুব মহব্বত করতো। সব সময় তাকে সাপোর্ট করতো, তাকে সাহস দিতো। সেলিমের এই বিপদের সময় সে তার সেই প্রিয় দেশ প্রেমিক ডিআইজি স্যারের কথা স্মরণ করতে লাগলো।
সেলিম একদিন রাতে চিন্তা করলো কিভাবে সেই ডিআইজি স্যারের সাথে কন্টাক্ট করা যায়। আর ডিআইজি স্যারের সাথে কন্টাক্ট করতে হলে তাকে অবশ্যই সেন্টমার্টিন ছেড়ে কক্সবাজারে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে কোন না কোন ভাবে হয়তো সাবেক ডিআইজি স্যারের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
আজ এ পর্যন্তই, পরের পর্বে আমার এই গল্পের সমাপ্তি টানবো, ইনশাআল্লাহ। আশা করি ধৈর্য সহকারে শেষ পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Task Done