আহ্নিক পত্রিকার প্রকাশ অনুষ্ঠানের একটি সুন্দর সন্ধ্যা।
আহ্নিক উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে কিছুক্ষণ
গতকাল বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় উপস্থিত হয়েছিলাম মমার্থ প্রাঙ্গণে। এই প্রাঙ্গণটি কলকাতায় বিখ্যাত একাডেমি অফ ফাইনার্টসের সামনে অবস্থিত। এখানে শনিবার করে একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক আড্ডা বসে। আমি গতকাল উপস্থিত হয়েছিলাম সেই আড্ডায়। সেখানে গিয়েছিলাম একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। আহ্নিক সাহিত্য পত্রিকার প্রকাশ উপলক্ষে সেখানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই সংগঠনের সঙ্গে বহুদিন ধরে আছি বলে আমি হাজির হয়েছিলাম কালকের সেই অনুষ্ঠানে। সেখানে কবিতা পাঠ থেকে শুরু করে বিশিষ্ট মানুষজনদের বক্তৃতা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল।
আহ্নিক একটি সামাজিক সংগঠন। সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজকর্ম করার সঙ্গে সঙ্গে এদের একটি প্রধান কাজ হল মুখপাত্র হিসেবে পত্রিকা প্রকাশ করা। পত্রিকাটি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রকাশিত হলেও এইবারের সংখ্যাটি বের করতে একটু দেরি হল। আসলে কলকাতায় আর জি কর ইস্যু নিয়ে পরিবর্তিত সামাজিক পরিস্থিতির মধ্যে কোনভাবেই পত্রিকাটি প্রকাশ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই রথযাত্রার সময়ের পত্রিকা প্রকাশ হলো গতকাল। মাঝের এই কয়েক মাস আমরা সকলেই খুব অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছি। তারপর এই কয়েক মাস পরে আমরা গতকাল একত্রিত হতে পারলাম পত্রিকাটি প্রকাশের উদ্দেশ্য নিয়ে। অনেক গুণীজনের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে প্রকাশ হলো পত্রিকাটির রথযাত্রা সংখ্যা। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অনেক কবি সাহিত্যিক এবং চিত্রশিল্পীরা। বিখ্যাত চিত্রশিল্পী দেবাশীষ মল্লিক চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের বংশোদ্ভুত প্রসাদ রঞ্জন দাস মহাশয়। তিনি একাধারে কবি এবং লোকগানের শিল্পীও বটে। আমি ছিলাম সঞ্চালকের ভূমিকায়। বেশ কিছু অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করবার সুবাদে বর্তমানে আমি সঞ্চালক হিসাবেও বেশ পরিচয় লাভ করতে পেরেছি। কবিতার অনুষ্ঠানগুলিতে সঞ্চালনা করেছি বহু অনুষ্ঠানে। গতকাল ছোট সেই অনুষ্ঠানে একাডেমি অফ ফাইনার্টসের সামনে অবতীর্ণ হয়েছিল সঞ্চালকের ভূমিকায়। একে একে সকল শিল্পী ও কবিদের মঞ্চে ডেকে কবিতা পাঠ করালাম এবং গানের শিল্পীদের দিয়ে গান গাওয়ালাম। সুন্দর একটি সন্ধ্যায় আমরা সকলে মিলে একত্রিত হলাম এই অহ্নিক পত্রিকা প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। পত্রিকার সম্পাদক পূবালী দেব মহাশয়া ছোট্ট বক্তৃতার মাধ্যমে লিটিল ম্যাগাজিনে সুদীর্ঘ লড়াই এবং ওঠা পড়ার ইতিহাস ব্যাখ্যা করলেন। পত্রিকাটি কিভাবে কঠিন পথের মধ্যে দিয়ে এসেছে তা তিনি সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন।
লিটল ম্যাগাজিন আসলে এক লড়াই। এই লড়াইতে বাধা থাকে অনেকগুলি। আর সেই বাধাগুলি পেরিয়ে পত্রিকাকে দিনের আলো দেখানোই সম্পাদকের এক এবং অন্যতম উদ্দেশ্য। মমার্থ প্রাঙ্গণ আসলে এক শিল্প-সংস্কৃতির প্রাঙ্গণ। এখানে প্রতিনিয়ত প্রচুর শিল্পী ব্যস্ত থাকেন আঁকায়। আর প্রতি শনিবার করে এখানে জমে ওঠে আড্ডা। রাস্তার ব্যস্ত মানুষজন এবং পথ চলতি জনতাও এসে বসে যান অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকবে। আর এসব কিছু মিলিয়ে একটা জমজমাট অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয়ে গেল আহ্নিক পত্রিকার রথযাত্রা উৎসব সংখ্যাটি।
ছবির মাধ্যমে কিছু মুহূর্ত আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। ঠিক কেমন ছিল কালকের অনুষ্ঠান তা আপনারা ছবিগুলি দেখলেই বুঝতে পারবেন। এমন সুন্দর শিল্প সংস্কৃতির অঙ্গনে থাকলে মনে দ্বেষ প্রবেশ করতে পারে না। আর শিল্প সংস্কৃতি হল মিলনের এক মাধ্যম। তাই শিল্পীরা সব সময় এই ধরনের শিল্প সংস্কৃতির অন্দনে জুড়ে থাকতে ভালোবাসেন। আমিও বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে পৌঁছে যাই শিল্প সংস্কৃতির এই সব অনুষ্ঠানে। হে আমার অন্যতম ভালোবাসা। আর ভালো লাগে সেই সব ঘটনার কথা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে। যদি আপনাদের এই অনুষ্ঠানের ঘটনাক্রম ভালো লাগে তবে নিশ্চয়ই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/KausikChak1234/status/1863259670305263996?t=dL-tZNI7imsVOXp3VOVhsg&s=19
আজকের টাস্ক -
আহ্নিকের একজন হওয়ার আনন্দই আলাদা৷ কিন্তু সেই একজন হয়েও আমি এবারের পত্রিকা প্রকাশ অনুষ্ঠানে থাকতে পারলাম না। মন খারাপ হয়েছিল৷ তবে যাইহোক পত্রিকার পাশে তো আছি৷
পত্রিকার প্রচ্ছদটা সত্যিই অসাধারণ হয়েছে৷ লেখাগুলো কেমন দেখাচ্ছে গো?
সবদিক থেকে গতকাল অনুষ্ঠানে তোকে মিস করেছি। দিদিও বার বার তোর নাম বলছিল। আসলে সকলে মিলে অনুষ্ঠানে থাকলে একটা আলাদাই মজা হয়।
তুমি কবিতাসভাতে গেলেই আমি যতটা আনন্দ পাই ততটা মনখারাপও করি।
সাংস্কৃতিক আড্ডার মাধ্যমে সুন্দর সন্ধ্যা কাটিয়েছেন দেখছি।আহ্নিক পত্রিকার প্রকাশ অনুষ্ঠান থেকে অনেক কিছু জানাও যায় বর্তমানের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে।আপনার অনুভূতি পড়ে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ দাদা।
তোমার সুচিন্তিত মতামত খুব ভালো লাগলো বোন। এভাবেই পাশে থেকো সর্বদা।