আমাদের কি মনে আছে মৃত্যু কথা??????

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

১১ভাদ্র , ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

২৬আগষ্ট , ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
২৭মহররম , ১৪৪৩ হিজরী
শুক্রবার ❤️❤️
শরৎকাল ।


আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি


home-5094603__480.webp

Source


আমাদের কমিউনিটির সবাই প্রতিনিয়ত সুন্দর সুন্দর বিষয় নিয়ে চমৎকার চমৎকার কন্টেন ক্রিয়েট করে আমাদেরকে উপহার দিচ্ছে। যেগুলো পড়ে আমরা উপকৃত হচ্ছি এবং অনেক জ্ঞান আহরণ করতে পারছি।। আমিও চেষ্টা করি সব সময় আমার পোষ্টের নতুনত্ব নিয়ে আসার। তাই আজকে একটি ভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমার আজকের আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে আমাদের জীবন এবং মৃত্যু। আশা করছি আপনারা সবাই পড়ে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহ দিবেন।


আপনি কি জানেন আপনার মৃত্যু দন্ডের আদেশ হয়ে গেছে। যে কোন সময় আপনার মৃত্যু হতে পারে। আপনার উপর নেমে আসতে পারে মৃত্যুর ভয়াবহ বিভীষিকা। আপনি হয়তো মজে আছেন দুনিয়ার রং তামাশায়। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে। হাসি আনন্দে কাটছে আপনার দিন।


আপনার প্রার্থনার কোন খবর নেই। শেষ কবে প্রভুর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেছেন তাও আপনার মনে পড়ে না। অপকর্মের সাথে বিভোর হয়ে আছেন। ভাই আমার মরণের কথা কি আপনার একদমই মনে পড়ে না।


একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কি কখনো হাসতে দেখেছেন। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানোর আগেই কি সে আধমরা হয়ে যায় না। মৃত্যুর ভয় কি তার হৃদয়ে শঙ্কা জাগায় না। সে কি খাবার-দাবারে স্বাদ পায়?? সে কি ঠিকমতো ঘুমোতে পারে। নিরেট মাতাল না হলে এমন একজন লোক হাসিখুশি কি থাকতে পারে। কিভাবে সে হাসি আনন্দে দিন কাটাতে পারে।


আমরা কি তাহলে দুনিয়ার রূপ রসের গন্ধে দুনিয়ার মোহে পড়ে অন্ধ হয়ে আছি। একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে তো অন্তত এতোটুকুনি জানা থাকে, কবে কখন তার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। ভেবে দেখুন তো আমাদের অবস্থা তার থেকে কোন অংশ করুন। তার তো তাও নির্দিষ্ট একটা সময় দেওয়া আছে। এই সময়ে তার মৃত্যু দন্ড কার্যকর করা হবে। আমরা তো তাও জানিনা আমাদের মৃত্যুটা কখন কিভাবে আমাদের সাথে আলিঙ্গন করবে।


ঘর থেকে বাহিরে বের হওয়ার সময় কি আপনি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন যে আপনি আবার ঘরে ফিরতে পারবেন জীবিত অবস্থায়। রাতে ঘুমানোর সময় কি আপনি বলতে পারেন আগামীকালের সূর্যোদয় আপনি দেখতে পারবেন। মৃত্যু কাউকে পরোয়া করে না। নিষ্ঠুর একটি শব্দ মৃত্যু। না ছোটদের স্নেহ করে না বড়দের সম্মান করে। না কোন শক্তিশালী বিত্তবানদের পরোয়া করে। না কোন প্রতাপশালী বাদশার কাছে যেতে সে ভয় পায়। না তার অনুমতি লাগে।


আপনি যেখানেই চলে যান, যত দূরেই চলে যান, যে অবস্থাতেই থাকেন না কেন?? আপনার সময় হলে মৃত্যু আপনার সাথে আলিঙ্গন করবেই।।যত সু দুর্গের মধ্যেই অবস্থান করেন না কেন মৃত্যু আপনাকে পাকড়াও করবেই। আপনি যত ব্যস্তই থাকুন না কেন?? না খাওয়া দাওয়া করছেন! না ঘুমাচ্ছেন! গান শুনছেন নাকি প্রার্থনা করছেন? মৃত্যু কিছুই দেখবে না!! যখনই আপনার সময় শেষ হবে সাথে সাথে এসে আপনাকে পাকড়াও করে ফেলবে।


পৃথিবীর কোন শক্তি আপনাকে ধরে রাখতে পারবে না। নির্ধারিত সময় এসে গেলে তাকে কোন অবকাশ দেওয়া হয় না। এর মানে নির্দিষ্ট সময়ে তাকে চলে যেতে হবে। আপনি কি দেখেননি উত্তাল কনসাটে মাইক্রোফোন হাতে গান গাওয়া গায়ক কি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েনি। আপনি কি দেখেননি বিয়ে বাড়িতে হাসি আনন্দের মাঝে হঠাৎ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার দৃশ্য। আপনি কি দেখেননি টকশোতে বা লাইভ কনফারেন্সে কথা বলতে বলতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে যেতে। আপনি কি দেখেননি নিশ্চিন্ত মনে পথ দিয়ে হেঁটে চলা ব্যক্তিকেও হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে।


কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের কথা একটু চিন্তা করুন তো!! একজন ভাই অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য ফেসবুকে লাইভ করতেছিল সে কি জানতো একটু পরেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের মাধ্যমে তার জীবন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে। চট্টগ্রামে ট্যুরে বের হওয়া তরুণরা কি জানত এই টুরি তাদের জীবনের শেষ হয়ে যাবে। তারা আর কখনোই ঘরে ফিরে আসার সুযোগ পাবে না।


আপনি এই মুহূর্তে নিজেকে কত নিরাপদ মনে করছেন। কিন্তু আসলেই কি আপনি মৃত্যু থেকে নিরাপদ। পরবর্তী ঘন্টায় আপনি ভালো থাকবেন। বেঁচে থাকবেন। এই নিশ্চত কি আপনি দিতে পারেন।। আমার ভাই আজ হয়তো আপনি ধনী পরিবারের সন্তান। প্রভাবশালী বাবার সন্তান। আজ আপনার আঙ্গুলের ইশারায় মানুষ ভয় পায়। ক্ষমতার প্রভাবে মানুষকে আপনি মানুষই মনে করতেন না। কিন্তু আস্তে করে আপনার নিঃশ্বাসটুকু বন্ধ হয়ে গেলে আপনার নামের আগেও মৃত্যু কথাটা যুক্ত হয়ে যাবে।


সবাই তখন আপনাকে বলবে লাশ আপনাকে দ্রুত বিদায় করায় তাদের দ্রুত কাজ হয়ে যাবে। আপনার শরীর থেকে দামি দামি পোশাক খুলে কাফনের কাপড় পরানো হবে। আপনার বিলাসবহুল বাড়ি থেকে নামিয়ে হয় চিতায় না হয় কবরে দাফন করা হবে। আপনার সাথে তো দূরের কথা আপনাকে চিতায় পুরানো অথবা কবরে রাখার কিছু সময়ের মধ্যে তারা সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যাবে। আপনার কাছে কেউ থাকবে। না কেউই আপনার সাথে একটা রাত কাটাতেও রাজি হবে না।


কয়েকদিন যাওয়ার পরেই সবাই আপনাকে ভুলে যাবে খুঁজে নেবে নতুন কোন বন্ধুকে। ঘুরতে থাকবে সময় চাকা দিনশেষে রাত আসবে রাত শেষে আবার দিন আসবে. সপ্তাহ পেরিয়ে মাস শেষে হবে বছর সবই থাকবে শুধু আপনি থাকবেন না। ব্যস্ত মানুষগুলো আপনাকে এমন ভাবে ভুলে যাবে কোন স্মৃতি তাদের কাছে থাকবেন না। এমন হয়ে যাবে যে কোন কালে আপনি তাদের কাছে থাকবেন না। আপনি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। কবরে গজিয়ে যাবে লতা পাতা ঘাস আর চিতায় পুড়িয়ে ভাসিয়ে দেওয়া মরা দেহর থাকবে না কোন অস্তিত্ব। দিন শেষে এটাই আপনার কাজে লাগবে আপনি কতটুকু পুণ্যের কাজ করেছেন পৃথিবীতে থাকতে।


মাটির উপরে আপনি যতটুকুনি ভালো কাজ করবেন মাটির নিচে গিয়ে ঠিক ততটুকুনি ফল ভোগ করতে পারবেন।।।


দিনশেষে এটাই বলি ভাই আমরা যে যে ধর্মের বিশ্বাস করি যে যেভাবে আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে ডাকি না কেন সবাই তার হুকুম মেনে চলি। এবং তার দেখানো নির্দেশ মত পৃথিবীতে জীবন যাপন করি। তা না হলে মৃত্যুর পরে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ শাস্তি।।


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Sort:  
 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাই আমাদের জীবনের এক মূহুর্ত্তের নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু এরপরও আমাদের সসজাত স্বভাব মৃত্যুকে ভুলে থাকা। তবে দুনিয়ায় ভালো কাজ না করেও কারো ক্ষতি করা যাবে না। এবং যারা সর্বদা ভালো কাজ করে তারা কখনোই মৃত্যু কে ভয় করে না। সুন্দর লিখেছেন ভাই।।

 2 years ago 

আমাদের জীবনের এক মুহূর্ত নিশ্চয়তা না থাকলেও আমরা কিন্তু সেরকম ভাবে জীবন যাপন করছি না খামখেয়ালিপনার মাছ দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবন

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই আপনি আমাদের জীবনের কোন নিশ্চয়তা নেই যখন তখন আমার মৃত্যুবরণ করতে পারি। কিন্তু যার জীবন আছে সেই মৃত্যুবরণ করবে এটা সর্ব সত্য কথা। ঠিক বলেছেন ভাই আপনি মৃত্যুর কয়েকদিন পর সবাই ভুলে যাবে খুঁজে নেবে নতুন কোন বন্ধুকে। এত সুন্দর একটি জ্ঞানমূলক পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

যেহেতু যখন তখন আমাদের মৃত্যু হবে এজন্য আমাদের সবসময় উচিত মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া পরকালের পাথয় জোগাড় করা

 2 years ago 

আমরা যতই নিজেদেরকে দুনিয়ার এই রং তামাশায় মেতে ওঠায় না কেন আমাদের সকলেরই একটা জিনিস মনে রাখা উচিত মৃত্যু একদিন আসবেই। মরণ একদিন হঠাৎ করেই সামনে এসে মুছে দিয়ে যাবে সকল রঙিন পরিচয়। পাপ পণ্যের হিসেবে আমরা সকলেই অপরাধী। অবশ্যই মৃত্যুর কথা সামনে রেখে আমাদের অগ্রসর হওয়া উচিত। সুন্দর একটি কনটেন্ট লিখেছেন ভাইয়া খুবই ভালো লাগলো।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপনি দুনিয়ার রং তামাশায় যতই মেতে থাকি না কেন সময় হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না কাজ অনুযায়ী তার ফল ভোগ করতে হবে

 2 years ago 

এই পৃথিবী যেমনি আছে তেমনি পড়ে রবে।
সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে।।

কে কখন যাবে? কোন নিশ্চয়তা নেই। চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন ভাই। দুই দিনের এই দুনিয়াতে টাকা পয়সা, গাড়ি-বাড়ি, কিছুই সঙ্গে যাবেনা। তবুও কিছু কিছু মানুষ অর্থের অহংকার এ পাপাচার সহ নানান অসৎ কাজে লিপ্ত থাকে। আসলেই আমরা অনেকেই পরকালের জন্য এবাদত বন্দেগী বা প্রার্থনা করতে ভুলে যাই। অসম্ভব সুন্দর হয়েছে ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া এই পৃথিবী যেমন আছে তেমনি থাকবে শুধু মাঝখান থেকে আমার জীবনের পাতাটা সমাপ্ত হয়ে যাবে বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা সবই পড়ে থাকবে কিন্তু আমার মত আমি একা হয়ে যাব এজন্যই আমাদের উচিত পরকালের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার কয়েকটি কথা অনেক ভাল লেগেছে। আমাদের মৃত্যুদেন্ডের আদেশ হয়েগেছে। শুধু কার্যকর হওয়া বাকি। সেটা কোনদিন যে কোন মুহূর্তে হতে পারে। কিন্তুু আমরা দুনিয়ার পিছে পড়ে সেটা ভুল গেছি । অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট করেছেন। খুব ভাল লাগলো পড়ে। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমাদের তো মৃত্যুদন্ডের আদেশ জারি হয়েই রয়েছে যখন তখন কার্যকর হবে এজন্যই আমাদের উচিত সবসময় পরকালের কথা চিন্তা করে কাজকর্ম করার ধন্যবাদ আপনাকে