একটি খাকি খাম পাওয়ার গল্প //পর্ব-১
আস্সালামু আলাইকুম /আদাব 🤝
আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই। আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো ও সুস্থ আছি ।আমি @mahfuzur888, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে আপনাদের সাথে আছি ।
আমার বাংলা ব্লগের প্রাণপ্রিয় বন্ধুরা, প্রতিদিনের মতো আজকে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের সবার মাঝে। আজকের এই পোস্টটি সাজিয়েছিলাম আমার জীবনের সফলতার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার একটি গল্প নিয়ে।
সালটি ছিল ২০০১ সাল ১৩ই আগস্ট রোজ সোমবার। আমি গান্ধাইল আইডিয়াল কলেজ থেকে মনসুর আলী কলেজে ইন্টারমেডিয়েট ফাইনাল পরীক্ষার্থী ছিলাম। তখন আমাদের সাইন্স কমার্স আর্স তিনটি বিভাগ ছিল। আমি ছিলাম আর্সের ছাত্র। সেই পরীক্ষা চলাকালীন সময় সমাজকল্যাণ পরীক্ষার আগে তিন দিন ছুটি ছিল আর এই ছুটির তিনদিনের মধ্যেই ছিল ১৩ই আগস্ট রোজ সোমবার। আর এই সোমবারেই সিরাজগঞ্জ স্টেডিয়াম মাঠ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল।
তবে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটা আমি জানতে পেরেছিলাম আমার ছোট চাচুর মাধ্যমে। এর আগে আমার গ্রামের ৮ জন ফ্রেন্ড তারা আর্মির চাকরির জন্য বেশ কয়েকবার স্টেডিয়াম মাঠে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা সম্পর্কে কেউ আমার ভাই হয় কেউ চাচা হয়। তাদের কাছ থেকে শুনে নিলাম কি কি কাগজপত্র লাগবে। সেই মোতাবেক আমি ১২ তারিখে ছোট ফুফুর বাসা থেকে আমি নিজ গ্রামে চলে আসি এবং সমস্ত কাগজপত্র, পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিয়ে একটি ফাইল রেডি করে রাখি। আর এই একটি বার স্টেডিয়াম মাঠে দাঁড়ানোর মতো বয়স ছিল আমার। আমি যদিও আর্মির চাকরির প্রতি এতটা ইন্টারেস্টেড ছিলাম না। শুধুমাত্র আমার ওই আট জন ফ্রেন্ড সার্কেলের পাল্লায় পড়ে আমি ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম। যার ফলে বয়স সীমার শেষ প্রান্তে এসে একটিবারের জন্য আমি স্টেডিয়াম মাঠে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করি।
তবে এই ৮ জন ফ্রেন্ডের মধ্যে একজন ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার আশায় স্টেডিয়ামে যাবে এবং আর একজন বিবাহ বন্ধনের শর্ততে স্টেডিয়ামে যাবে। তো যথারীতি সবার সাথে কথা বলে সমস্ত কাগজপত্র রেডি করে রাত আটটার দিকে শুয়ে পড়ি। পরের দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আমি আমার বাবার কাছ থেকে ৫০ টাকা চেয়েছিলাম গাড়ি ভাড়ার জন্য। তো আমার বাবা ৫০ টাকার পরিবর্তে আমাকে ৩০ টাকা দেন। সেই ৩০ টাকা এবং আমার কাছে হাত খরচের জন্য ছিল ২৫ টাকা টোটাল ৫৫ টাকা হাত নিয়ে এবং কাগজপত্র নিয়ে সবার সাথে বাসে করে সিরাজগঞ্জ স্টেডিয়াম মাঠের দিকে রওনা হই। আসলে এই পোস্টটি লেখার সময় যখন ৩০ এবং ২৫ টাকার কথা মনে পড়ল তখন আমার দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে শুরু করল। তখন কতটা অভাব অনটনের মাধ্যমে দিনগুলো পার করতে হতো।
যাইহোক যথারীতি আমরা বাসের ভিতরে পাশাপাশি সিটেই বসেছিলাম। তখন আমরা সবাই মিলে কথোপকথনের মাধ্যমে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম যে আমরা এই নয় জনের মধ্যে একজন টিকলে সবাই তার জন্য ওয়েট করবো। কারণ তখন কোন ফোন ছিল না কোন যোগাযোগের মাধ্যম ছিল না। যদি আমরা একজনকে রেখে যাই তাহলে তার পরিবারের সবাই চিন্তিত থাকবে। কথা বলতে বলতে বাসের ভিতরে এক সময় সুপারভাইজার এসে আমাদের কাছ থেকে ভাড়া চাইল। আমরা সবাই যার যার পকেট থেকে দশ টাকা করে বাস ভাড়া দিয়ে দিলাম। এবং চলতে থাকলাম চলতে চলতে ৩৫ মিনিট পর বাস থেকে নেমে স্টেডিয়াম মাঠের দিকে পায় হেঁটে রওনা করলাম। ১৫ মিনিট পায়ে হাঁটার পর স্টেডিয়াম মাঠের প্রথম গেটে চলে গেলাম। তখন সময়টা ছিল সকাল আটটা তিরিশ মিনিট। মাঠের ভিতরে সয়ে সয়ে যুবক দাঁড়িয়েছিল।
এক পর্যায়ে সকাল ৯ টার দিকে সমস্ত যুবককে স্টেডিয়ামের বাহির করে দিয়ে চারটি সাড়িতে দার করিয়ে প্রাথমিক নির্বাচন করে স্টেডিয়াম মাঠের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দিল। একে একে বেশ কিছু যুবক মাঠে প্রবেশ করার পর এবার আসলো আমার পালা। প্রথমে আমার হাইট এবং বুকের প্রশস্ত মাপা হল পরে হাত এবং পা দেখা হল। সবকিছুই ঠিক ছিল শুধুমাত্র আমার ডান হাতের মধ্য আঙ্গুলিতে আমার বয়স যখন ছয় বছর ছিল তখন বাই সাইকেলের চেইনের ভিতরে আঘাত পেয়ে নখটা একটু উঁচু নিচু ছিল। আর এটাই একজন ধরে বসে ছিল এবং আর একজন বললেন যে আগে সাধারণ পরীক্ষা দিক। পরে দ্বিতীয় আর্মি ভাইয়ের কথা মত আমাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিল।
তো বন্ধুরা আজকের পর্ব এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আমার সাথে কি হয়েছিল সেই অংশটুকু আপনাদের সাথে আগামী পর্বে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। 💗🙏💗।
ফোনের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | গল্প । |
মডেল | এম ৬২ |
ক্যাপচার | @mahfuzur888 |
অবস্থান | রাজশাহী- বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোঃমাহফুজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের একজন সুনাগরিক। সর্বদাই নিজেকে দেশের মঙ্গল কামনায় ব্যস্ত রাখি। আমার জন্মভূমিকে আমি মায়ের মতো ভালোবাসি।আমি ভ্রমণ করতে খুবি ভালোবাসি।তাছাড়া ফটোগ্রাফি করতে আমার ভালো লাগে,আর রান্না করা আমার নেশা, এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। তাই আমি আমার সৃজনশীলতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চাই। এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়,ধন্যবাদ সবাইকে।🌹💖🌹।
https://x.com/mahfuzur888/status/1870855017852523005?t=ififMRiRhuYXup_RV7QSVA&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.